পঞ্চগড় সীমান্তে গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
Published: 15th, June 2025 GMT
পঞ্চগড় সীমান্তে গুলিবিদ্ধ যুবক মারা গেছেন। শনিবার (১৪ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে আহতাবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহতের নাম রাজু ইসলাম (৩৫)। তার বাড়ি হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। রাজু সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু পারাপারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ঘাগড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১ এর বিপরীতে ভারতীয় এলাকার কিছু যায়গায় কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় এলাকাটি ভারতীয় গরু পারাপারের গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে চোরাকারবারিরা। শনিবার মধ্যরাতে এই মেইন পিলারের ৩ নম্বর সাব পিলার সংলগ্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন রাজু। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্যাম্পের সদস্যরা তার দুই পায়ে গুলি করে। ঘটনাস্থলের পাশেই রাজুর বাড়ি হওয়ায় গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই রাজু বাড়ি ফেরেন। পরে আহতাবস্থায় পরিবারের সদস্যরা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। রবিবার দুপুরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
হবিগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
এদিকে রাজুর মৃত্যু বিএসএফের গুলিতে নয়, হার্ট অ্যাটাকে হয়েছে বলে দাবি করেছেন নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজুর হৃদরোগ থাকলেও তার মৃত্যু বিএসএফের গুলিতে হয়েছে। তার দুই পায়ে গুলির চিহ্ন রয়েছে।’’
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, ‘‘খবর পেয়ে রাজুর বাড়িতে পাই। তার দুই পায়ে ক্ষত চিহ্ন দেখেছি। ধারণা করছি, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েক বছরে ঘাগড়া সীমান্তে এমন পাঁচ জনের মৃত্যু হলো।’’
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা বলেন, ‘‘গত রাতে বর্ডারে কোনো গোলাগুলি হয়নি- এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সেখানে বিজিবির পেট্রোল টিম ছিল, আশপাশে বাড়িঘর ছিল। বিএসএফ গুলি করলে শব্দ শোনা যেত, তারা কেউ কোনো শব্দ শোনেনি। চোরাকারবারি দমনে বিএসএফ অনেক সময়েই ফায়ার করে, আমরা সব সময় এসবের প্রতিবাদ করি। যদিও তারা বিভিন্ন সময় বলে, আত্মরক্ষার্থে ফায়ার করে। এ ক্ষেত্রে ফায়ারের শব্দ অনেক দূর পর্যন্ত শোনা যায়। কিন্তু, গত রাতে কোনো শব্দ শোনা যায়নি। আমরা বিএসএফের সঙ্গেও কথা বলেছি, তারাও জানিয়েছে কোনো ফায়ার হয়নি। এরপরও সৌজন্য সাক্ষাতে এ বিসয়ে আমরা তাদের আরো জিজ্ঞেস করব।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘রাজুর মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাদের জানিয়েছেন, রাজু হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে জেনেছি, তার পায়ে নাকি গুলির চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু, এ বিষয়ে তারা আমাদের কিছুই জানায়নি।’’
এ বিষয়ে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ বলেন, ‘‘নিহতের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি চিকিৎসক বলতে পারবেন। এছাড়া, মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।’’
এ বিষয়ে জানতে রাজুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঢাকা/নাঈম/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ পর ব র র ব এসএফ র পর ব সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
১২ হাজার তরুণ–তরণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পিকেএসএফ
পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে দেশের ১২ হাজার তরুণ-তরুণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষানির্ভর তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রিজ কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) আওতায়। এ প্রকল্পে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
আজ সোমবার রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে এসআইসিআইপি ও পিকেএসএফের প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী তরুণেরা ১২টি খাতের প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে থাকা-খাওয়ার সব খরচ প্রকল্প থেকে বহন করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণেরা। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের আত্মকর্মসংস্থান বা মজুরিভিত্তিক চাকরির ক্ষেত্রেও সহায়তা করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিকেএসএফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো সেই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।
পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। এটি একই সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। প্রকল্পের আওতায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত কোর্স অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা সহজেই কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ১২ হাজার ছাড়াও আরও ৮ হাজার ৫০০ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি ২ হাজার এতিম ও দুস্থ তরুণকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বক্তব্য দেন।