নগর ভবনে প্রশাসক বসানোও অবৈধ: ইশরাক
Published: 16th, June 2025 GMT
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে তাঁকে শপথ না পড়ানোর বিষয়টি বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আর নগর ভবনে প্রশাসক বসানোও অবৈধ, সরকার নগর ভবনে প্যারালাল প্রশাসন চালাচ্ছ।
আজ সোমবার নগর ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক হোসেন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই বলে আসছি যে আমার এই বিষয় (শপথ পাঠ) সম্পূর্ণ রাজনৈতিক একটা সিদ্ধান্ত ছিল। রাজনৈতিকভাবে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমাকে বা বিএনপির প্রার্থীকে এখানে বসতে দেওয়া হবে না। এখানে তারা তাদের পছন্দের সেই প্রশাসককে বসাবে এবং সেই প্রশাসককে বসানোর মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তারা অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবে। এটি তাদের উদ্দেশ্য ছিল।’
উল্লেখ্য, ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ঢাকাবাসীর ব্যানারে তাঁর সমর্থক ও ডিএসসিসির কর্মচারীদের একাংশ সকাল ১০টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
এ প্রসঙ্গে ইশরাক হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।
সরকার ‘প্যারালাল’ প্রশাসন চালাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যখন মেয়রের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে করা রিটটি খারিজ করে দেন, সেই মুহূর্তে থেকে ডিএসসিসির প্রশাসক অবৈধ হয়ে গেছেন। এখানে প্যারালাল প্রশাসন তাঁরা চালাচ্ছিলেন। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি এবং আইনের মাধ্যমে, আদালতের মাধ্যমে আমার যে বর্তমান অবস্থান সেটাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে অবৈধভাবে তারা প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। তারা এখানে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল।’
সংবাদ সম্মেলনের আগে দুপুর ১২টার দিকে নগর ভবনের মিলনায়তনে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইশরাক হোসেন। সেখানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকের ব্যানারে ইশরাক হোসেনের পদবি মেয়র লেখা ছিল।
পরে সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক বলেন, কিছুদিন ধরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। তাই ঢাকা শহরকে নিরাপদ রাখতে নগর ভবনের মশকনিধন নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে বেগবান করতে এবং সেটি যাতে চলমান থাকে, তা নিশ্চিত করতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ডিএসসিসির সব বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানান তিনি।
ব্যানারে ‘মেয়র’
বৈঠকের ব্যানারে ইশরাক হোসেনের পদবি ‘মেয়র’ লেখা থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে ইশরাক হোসেন বলেন, শুধু নগর ভবন নয়, যেকোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালে আয়োজকেরা ব্যানারে মেয়র লেখেন। এটা তাঁর কোনো দাবি নয়।
ইশরাক বলেন, ‘এটা আমার দাবি নয়। এটা জনগণের দাবি। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে এটা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যাঁরা বিষয়টি নিয়ে কথা তোলার চেষ্টা করছেন তাঁদের বলব, তাঁরা যেন নিজেদের জ্ঞান আরেকটু সমৃদ্ধ করেন। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে, সেখানে স্পষ্টভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমাকে ঘোষণা করা হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন ড এসস স র নগর ভবন র কর ম ব ষয়ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।