পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস শুধু হরমোনজনিত সমস্যা নয়, বর্তমানে এটি একটি সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীদের ৮ থেকে ১৩ শতাংশের এ রোগ হচ্ছে। সবচেয়ে চিন্তার বিষয়, ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী অর্থাৎ কিশোরীদের মধ্যে সাম্প্রতি পিসিওএস উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বয়ঃসন্ধিকালে মাসিক শুরুর কিছুদিন পর থেকেই এই সমস্যা হতে পারে। তবে বিষয়টিকে তখন ততটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এতে পিসিওএস কিশোরী মেয়েদের প্রজননস্বাস্থ্য ও পরবর্তী সময়ে সামগ্রিক নারী স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।

কেন হয়

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, কায়িক শ্রম না করা, স্থূলতা, পরিবেশ ও জিনগত কারণ পিসিওএসের জন্য দায়ী। এতে ডিম্বাশয় বা ওভারিতে সিস্ট (তরলপূর্ণ থলি) তৈরি ও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। পুরুষ হরমোন অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ডিম্বাণু তৈরি ও নিঃসরণের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন পর্যাপ্ত থাকে না। ফলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু পরিপক্ব হয়ে স্ফুরণ ঘটা বন্ধ হয়ে যায়। মাসিকও নিয়মিত হয় না। তৈরি হয় ছোট ছোট অনেক সিস্ট। ডিম্বাশয় বড় দেখায়। তবে অনেক সময় সিস্ট না–ও থাকতে পারে। আবার ডিম্বাশয়ে সিস্ট থাকা মানেই যে পিসিওএস তা–ও নয়। এ রোগে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট থাকে বা অকার্যকর হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে ওজন বাড়তে থাকে।

লক্ষণ

এ রোগের লক্ষণগুলো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ওভারির পরিবর্তনের বিষয়টি সব সময় বোঝা যায় না। উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হচ্ছে—১.

অনিয়মিত মাসিক বা মাসিকের অনুপস্থিতি; ২. অতিরিক্ত অবাঞ্ছিত লোম গজানো (ঠোঁটের ওপরে, থুতনি, বুক, স্তন ও পেটের চারপাশে); ৩. ব্রণ ও ত্বকে কালো দাগ; ৪. ওজন বৃদ্ধি বা স্থূলতা; ৫. চুল পড়া বা পাতলা হয়ে যাওয়া; ৬. মাসিকে প্রদাহ সৃষ্টি ও অতিরিক্ত রক্ত যাওয়া; ৭. ঘুমের মধে৵ নাক ডাকা ও শ্বাস বন্ধ হওয়া; ৮. মেজাজ পরিবর্তন ও মানসিক চাপ।

পরামর্শ ও চিকিৎসা

প্রাথমিক অবস্থায় পিসিওএস শনাক্ত করার ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ওজন কমাতে হবে। ফাস্টফুড বা জাঙ্কফুড খাওয়া যাবে না। কায়িক পরিশ্রম, নিয়মিত ব্যায়াম এবং উচ্চতা ও ওজনের ভারসাম্য রাখতে হবে।

পিসিওএস হলে সাধারণত হরমোন থেরাপি, ইনসুলিন প্রতিরোধক, ওভুলেশন উজ্জীবক ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। স্ত্রীরোগ–বিশেষজ্ঞ, হরমোন–বিশেষজ্ঞ, ডায়েটেশিয়ান, চর্ম ও মনোরোগ–বিশেষজ্ঞের সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে।

ডা. সারাবান তহুরা, কনসালট্যান্ট, গাইনি অ্যান্ড অবস, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প স ওএস হরম ন

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ