ঈদের আগে নতুন ডিজাইনের ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে টাকা জমা দেওয়ার জন্য সিডিএম, সিআরএম বা মেট্রোরেলের টিকিট বিক্রির মেশিন নতুন নোট নিচ্ছে না। মূলত নতুন ডিজাইনের নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এসব মেশিনের সফটওয়্যার এখনও ‘আপডেট’ না করায় এমন হচ্ছে। অবশ্য ব্যাপকভাবে নতুন নোট এখনও বাজারে আসেনি। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, শাখার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (সিডিএম) এবং ক্যাশ রিসাইক্লেনিং মেশিনে (সিআরএম) টাকা জমা দেওয়া যায়। এটিএম বুথের আদলে এসব বুথ স্থাপন করা হয়। নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে গ্রাহক নিজেই এই মেশিনের সাহায্যে তাঁর অ্যাকাউন্টে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট জমা দিতে পারেন। এ জন্য সফটওয়্যারে নোট এবং নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। মেট্রোরেলের টিকিট কাউন্টারে স্থাপিত বুথেও একই উপায়ে টাকা চেনানো হয়। সে অনুযায়ী এসব মেশিনে লেনদেন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ঈদের আগে ১ জুন নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়। এর পর ৪ থেকে ১৪ জুন টানা ১০ দিন ব্যাংক বন্ধ ছিল। তিন ধরনের নোট মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাজারে ছাড়া হয়েছে ৬০০ কোটি টাকার কম। এসব কারণে কোনো কোনো ব্যাংক হয়তো তাদের নিজেদের সফটওয়্যার প্রোগ্রামে নতুন নোট এখনও অন্তর্ভুক্ত করেনি । তবে এটা কঠিন কোনো বিষয় না। ব্যাংকগুলো চাইলেই বুথের ভেন্ডাররা যা করতে পারেন। দুয়েকটি ব্যাংক এটা করলেও বেশির ভাগ ব্যাংক এখনও করেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, যেসব ব্যাংক এখনও নতুন নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য বিষয়ে সিস্টেম হালনাগাদ করেনি, শিগগিরই তারা করবে। আর মেট্রোরেলের বিষয়টি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ দেখবে।

সব নোটই এতদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি যুক্ত ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সব নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। আগামী আগস্টের মধ্যে সব ধরনের নতুন নোট বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন ডিজাইনের নোটের মধ্যে ২০০, ১০ ও ৫ টাকায় স্থান পেয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা গ্রাফিতি। সব নোটেই ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ স্থান পেয়েছে।

ডিজাইন চূড়ান্ত করা থেকে শুরু করে একটি নোট বাজারে আনতে কয়েক ধাপ অতিক্রম করতে হয়। টাকার কালি, কাগজ, নিরাপত্তা সুতাসহ সবই বাইরে থেকে আনতে হয়। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আনতে সাধারণভাবে ১৫ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে। তবে এবার বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদের আগে তিন ধরনের নোট বাজারে আনা হয়।

জানা গেছে, নতুন ডিজাইনের সব নোটের কাগজ এখনও দেশে আসেনি। আবার আগের ডিজাইনের নতুন নোট এ মুহূর্তে বাজারে না ছাড়ার সিদ্ধান্ত ছিল। যে কারণে ঈদের আগে নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড জ ইন র ন নত ন ন ট সব ন ট

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের

ফরিদপুরের সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। গত তিন সপ্তাহ ধরে পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে এখানকার চরাঞ্চলের মানুষের। নদীতীরসংলগ্ন বেশ কয়েকটি রাস্তা ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে। কিছু এলাকায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে।
ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নজর দিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পাউবো বলছে, প্রতি বছর জুন ও জুলাইয়ে নদীতে পানি বাড়ার ফলে ভাঙন দেখা যায়। গত কয়েক সপ্তাহে ভাঙনের শিকার হয়েছে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার শয়তানখালি ঘাট, খোকারাম সরকারের ডাঙ্গী, গোপালপুর ঘাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকা।
গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে সদরপুরের আকোটেরচর ইউনিয়নের মুন্সীরচর, পিয়াজখালীরচর, আকোট, আকোটেরচর, ছলেনামা ও খোকারামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘর। নদী ভাঙতে ভাঙতে এই ঘরগুলোর মাত্র কয়েক গজ দূরে এখন পদ্মা। এ ছাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর, নুরুদ্দিন সরদারকান্দি, কাচিকাটা গ্রাম, নন্দলালপুর, ফকিরকান্দি, তালপট্টিরচর, কাড়ালকান্দি, জঙ্গিকান্দি, জামাল শিকদারকান্দি এবং চরমানাইর ইউনিয়ন ও চরনাসিরপুর ইউনিয়নের শিমুলতলী ঘাট, কাজীরসুরা, দুর্বারটেক, মফিজদ্দিনেরকান্দি, হাফেজকান্দি, রাড় চরগজারিয়া ও গিয়াস উদ্দীন মুন্সীরকান্দি গ্রাম ভাঙছে। কমপক্ষে ৬০টির বেশি ঘর অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এসব ভাঙন এলাকায় কেউ কেউ এখনও নদীর তীরে ঝুঁকি নিয়ে আছেন। বসতঘর ভেঙে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তারা বাড়ির চাল খুলে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখলেও খুঁটি ও বেড়া সরাচ্ছেন না। তাদের আশা, যদি ভাঙন থেমে যায়।
চরভদ্রাসনের চরহরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্লা শিকদারেরডাঙ্গী গ্রাম, সদর ইউনিয়নের টিলারচর ও এমপিডাঙ্গী গ্রাম, চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চরকালকিনিপুর, চরমির্জাপুর, চরতাহেরপুর, চরকল্যাণপুর, দিয়ারা গোপালপুর গ্রামেও ভাঙন চলছে। নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের কাচিকাটা গ্রামের আইয়ুব শেখ বলেন, ‘নদীর পাশেই আমার ঘর ছিল। হঠাৎ দেখি ফাটল। রাতে ভাঙন বেশি হয়, তাই ঘর ডুবে যাওয়ার ভয়ে আমি সরিয়ে নিয়েছি। যদি না সরাতাম এখন আমার ঘর থাকত নদীতে।’
আকোটেরচর ইউনিয়ন খোকারাম সরকারের ডাঙ্গী গ্রামের গুচ্ছগ্রামের নুর ইসলাম বলেন, এখান থেকে প্রতি বছর অবৈধভাবে বালু তোলা হয়। বালু তোলেন যারা, তারা প্রভাবশালী–তাই কেউ প্রতিবাদ করতে পারতেন না। প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দেওয়া হতো। এখন নদীভাঙনে তার খেসারত দিচ্ছেন এলাকাবাসী। 
ঢেউখালি ইউনিয়নের শয়তানখালি ঘাট এলাকার বাসিন্দা কাজী নজরুল। তিনি জানান, পদ্মায় কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার ফলে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। যতদ্রুত সম্ভব ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাঁর। 
আকোটেরচর ইউনিয়নের কলাবাগান এলাকার কৃষক ইসমাইল মুন্সি বলেন, প্রতি বছর নদীর তীর কেটে নিচ্ছেন কিছু লোক। এখনও নদীর তীর কেটে নেওয়া হচ্ছে। এই মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীভাঙনের মুখে রয়েছে অনেক বসতবাড়ি।
রিনা বেগম নামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক বাসিন্দা বলেন, ‘কে করে দেবে আমাদের ঘরবাড়ি? সরকার একটি ঘর দিয়েছে সেখানে থাকি। নদী যেভাবে ভাঙছে হয়তো বেশিদিন থাকতে পারব না। ঘর চলে যাবে নদীতে। কীভাবে থাকব, বুঝতে পারছি না।’
গত দুই সপ্তাহে পদ্মা নদীর ভাঙনে চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চারটি পরিবারের বাড়ি বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মৃধা। তিনি বলেন, ৩ হাজার বিঘা বাদামের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পাউবোর কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এখনও পদক্ষেপ নেননি তারা।
আকোটেরচর ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম বেপারী বলেন, শুধু এ বছর নয়, প্রতি বছরই নদী ভাঙছে। চরাঞ্চলের মানুষের জন্য নদীভাঙন নিত্যদিনের সঙ্গী। তিনি পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আশা করছেন দ্রুত তারা ভাঙনরোধে ব্যবস্থা  নেবেন।
গত ২০ দিনে যে স্থানগুলো ভেঙেছে সেখানে নদীর গভীরতা অনেক বেশি। তাই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে তাদের একটি দল ভাঙনরোধে কাজ করছে। তারা একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। এরপর ভাঙনরোধে টেকসই স্থায়ী প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উচ্চমহলে পাঠানো হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তেহরান থেকে হঠাৎ ওমানে গেল ৩ উড়োজাহাজ
  • ৪০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ১০০০ ড্রোন ছুড়েছে ইরান: ইসরায়েলি কর্মকর্তা
  • সংকট এখনও কাটেনি, বললেন রিজভী
  • পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের
  • যে ৫ কারণে বিটিএস নিয়ে সংশয়ে ভক্তরা
  • প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে কাতর প্রিয়াঙ্কা
  • বাংলাদেশি ইউটিউব চ্যানেলে চাকরি করেন ৪০ জন, বেতনই মাসে প্রায় ৭ লাখ টাকা
  • সাকিবকে এখনও দেশের সবচেয়ে বড় তারকা মানেন তামিম
  • সাকিবকে এখনও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা মানেন তামিম