ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে এমন কোনো প্রমাণ নেই: আইএইএ প্রধান
Published: 19th, June 2025 GMT
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে— এমন কোনো প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) আলজাজিরাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “আমরা ইরানে এমন কোনো উপাদান পাইনি যা ইঙ্গিত দেয় যে সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য একটি সক্রিয় ও সংগঠিত পরিকল্পনা রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কোন দেশের ক্ষতি বেশি?
যে শর্তে ইরানে হামলার চিন্তা স্থগিত রাখতে পারেন ট্রাম্প
তিনি আরো বলেন, “আমরা এমন কিছু দেখিনি যাতে আমাদের পরিদর্শকরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন যে, ইরানে কোথাও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বা উৎপাদন করা হচ্ছে।”
তবে মাত্র এক সপ্তাহ আগে আইএইএর বোর্ড অব গভর্নরস ইরানকে আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরাপত্তা চুক্তির প্রতি ‘অননুগত’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। বোর্ড জানায়, ইরান ‘অনেকবার ব্যর্থ হয়েছে’ গোপন পারমাণবিক উপাদান ও কার্যক্রম বিষয়ে ‘সম্পূর্ণ ও সময়মতো সহযোগিতা’ করতে।
বিশেষ করে, ইরানের কয়েকটি ঘোষণাবিহীন স্থানে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি পাওয়া গেলেও দেশটি তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছে সংস্থাটি। এতে ইরানের কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ আরো বেড়েছে।
এদিকে, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যকার সংঘাত সপ্তম দিনে পৌঁছেছে এবং উভয় পক্ষেই হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।
ইসরায়েল বলছে, ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় তাদের হামলা চালানোটা খুবই জরুরি ছিল এবং সে হামলাগুলো তারা সফলভাবে চালিয়েছে।
ইসরায়েল সরকার বলছে, এই হামলা ‘প্রতিরোধমূলক’ ছিল; এর লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির এক আসন্ন ও অনিবার্য হুমকি মোকাবিলা করা। কিন্তু এই দাবি সমর্থন করার মতো কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। বরং ইসরায়েলের হামলা অত্যন্ত পরিকল্পিত ও দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুত করা হয়েছিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল এমন ক
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানিরা কোনো হুমকিকে পরোয়া করে না: খামেনি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথামতো ইরান কারও কাছে আত্মসমর্পণ করবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলকে সাহায্য করে, তাহলে তারা ‘অপূরণীয় ক্ষতির মুখে’ পড়বে।
আজ বুধবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে খামেনি এ কথা বলেন। ইসরায়েল গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলার পর দ্বিতীয়বার বক্তব্য দিলেন খামেনি।
গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা চালায়। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের প্রতি ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’-এর আহ্বান জানান। এর আগে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে খামেনি কোথায় আছে। তবে তাঁকে এখনই হত্যা করা হবে না।
আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে খামেনি বলেন, এই জাতি (ইরান) কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না। এ সময় তিনি ট্রাম্পের হুমকিকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন।
খামেনি আরও বলেন, ‘আমেরিকানদের জানা উচিত, যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনবে।’
ট্রাম্পের বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে খামেনি বলেন, যাঁরা জ্ঞানী এবং ইরানের ইতিহাস ভালো করে জানেন, তাঁদের জানা আছে—ইরানিরা কোনো হুমকিকে পরোয়া করে না।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি প্রায় চার দশক ধরে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে শিয়া-অধ্যুষিত ইরানকে এক আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত করেছেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতি আপসহীন বৈরিতাও বজায় রেখেছেন। এ সময় দেশে একাধিকবার গণবিক্ষোভ হলেও তা কঠোর হাতে দমন করেছেন তিনি।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ‘আপসহীন প্রতিপক্ষ’ খামেনি কীভাবে প্রভাবশালী নেতা হয়ে উঠলেন১ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আজ এক এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে আইএইএ জানায়, ইরানি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র টিইএসএ কারাজ ও তেহরান রিসার্চ সেন্টারে হামলা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রই একসময় আইএইএর নজরদারির আওতায় ছিল।
এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করে, তারা ৫০টির বেশি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রসহ একাধিক অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র।
দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে ইরানের দিক থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি।