চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন অটোরিকশাচালক মো. ফোরকান (২৫) ও সহযোগী মো. হানিফ (৩২)। গতকাল বুধবার রাতে আনোয়ারা উপজেলা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মো. ফোরকান উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের পূর্ব বরৈয়া গ্রামের মো. সোলাইমানের ছেলে। মো. হানিফ একই এলাকার মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে। গতকাল বিকেলে তাঁরা অটোরিকশার যাত্রী এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ওই তরুণী অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে আহত হন। পরে তিনি থানায় গিয়ে মামলা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল আনোয়ারা কেইপিজেডের ১১ নম্বর গেট এলাকা থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন ওই তরুণী। কিছু দূরে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন, তাঁকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়নি। এ সময় তিনি নেমে যেতে চাইলে চালক ও তাঁর সহযোগী অটোরিকশা থামাননি। পরে একটি নির্জন এলাকায় চাকা নষ্ট হয়েছে বলে অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে চালক ও তাঁর সহযোগী তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে অটোরিকশা থেকে লাফ দেন তরুণী। এতে রাস্তায় পড়ে তাঁর নাক-মুখ থেঁতলে যায় ও একটি দাঁত পড়ে যায়। পরে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে কাছের হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। পরে সন্ধ্যায় ওই তরুণী থানায় মামলা করলে পুলিশ রাতেই দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তরুণীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আমরা রাতেই অভিযান শুরু করি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ