প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজি। স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকে দলকে মৌসুমে ট্রেবলও জিতিয়েছেন। শুধু শিরোপা নয় প্যারিসের ক্লাবটিকে এক সুতোয় গেঁথেছেন সাবেক বার্সা ও স্পেন কোচ। 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে দাপটের সঙ্গে খেলা এবং ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ওই পিএসজিকে  ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে গত মৌসুমে ব্রাজিলের লিগ চ্যাম্পিয়ন বোটাফোগো। 

ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ব্রাজিলের স্ট্রাইকার ইগোর জেসুস গোল করেন। তাকে গোলে সহায়তা দেন ভেনেজুয়েলান প্লে মেকার সাভারিনো। ওই গোল আর শোধ করতে দেয়নি বোটাফোগো। এমনকি ডিজেরি দুয়ে, কাভারাস্তখেলিয়া, ভিতিনহাদের নিয়ে গড়া দল পিছিয়ে পড়ার পর গোল শোধ করার মতো সুযোগও তৈরি করতে পারেনি। 

বলের লড়াইয়ে পিএসজিকে পরাস্ত করা দুষ্কর। পজিশন নিয়ে খেলতে পছন্দ করলেও ব্রাজিলের ক্লাব বোটাফোগো বল পায়ে রাখার লড়াইয়ে পিএসজির সঙ্গে পাঙ্গা নেয়নি। বরং রক্ষণ মজবুত করে খেলেছে এবং কাউন্টার অ্যাটাকে ভরসা রেখেছিল। 

যে কারণে বোটাফোগো মাত্র ২৫ শতাংশ বল পায়ে রাখলেও গোলের লক্ষ্যে ৪টি শট রাখতে পেরেছিল। যার একটি পিএসজির জালে যায়। লা প্যারিসিয়ানরা বলের দখল রেখেও গোলের লক্ষ্যে শট নিতে পারে মাত্র দুটি।

তবে কর্ণার থেকে গোল আদায় করার ভালো সুযোগ ছিল পিএসজির। ১০টি কর্ণার কিক পেয়েছিল তারা। বোটাফোগোর ৬ ফিট ৬ ইঞ্চির ২০ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার জাইর কুনিয়া ও ৬ ফিট ৪ ইঞ্চির আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার অ্যালেক্সসান্দ্রো বারবোজার কারণে বাতাসের বলে সুবিধা করতে পারেনি পিএসজি। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে সাবেক নাপোলি ও এভারটনের এলান ছিলেন দেয়ালের মতো। যা ভেদ করে নিঁখুত আক্রমণ তুলতে পারেনি পিএসজি।    

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসজ ক ল ব ব শ বক প প এসজ

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু

কক্সবাজারে ডেঙ্গুর প্রভাব ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। একদিকে ডেঙ্গু, অন্যদিকে ম্যালেরিয়া-দুটি প্রাণঘাতী মশাবাহিত রোগই যেন চেপে ধরেছে জেলার মানুষকে। একসঙ্গে এই দুই রোগের প্রকোপে উদ্বেগ বাড়ছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরও।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের মধ্যেই কক্সবাজারে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৮৯ জন বাংলাদেশি এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা। এরইমধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন এ রোগে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তদের বেশিরভাগই পার্বত্য এলাকা থেকে ফিরে এসেছেন। বান্দরবানের সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়িসহ পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় কাজ করতে গিয়ে তারা জীবাণুবাহী মশার শিকার হন।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শান্তনু ঘোষ বলেন, 'বর্ষার এই সময় পাহাড়ি এলাকার অ্যানোফিলিস মশা সমতলে চলে আসে, ফলে সংক্রমণের হার বেড়ে যায়। তাই কক্সবাজারে সংক্রমণ বাড়ছে এবং আরও বাড়তে পারে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ ম্যালেরিয়ার ওষুধ মজুত আছে। আক্রান্ত প্রত্যেককে আমরা আন্তরিক সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে চাই। তবে মানুষের সচেতনতা এই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্র বড় ভূমিকা রাখতে পারে।'

তথ্য বলছে, জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতিও কম উদ্বেগজনক নয়। ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১২৪ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ১২০ জন এবং বাকি ২০০৪ জনই রোহিঙ্গা। কেবল ২৯ মে থেকে এ পর্যন্ত ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৪ জন।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক বলেন, ‘রোগী শনাক্ত হওয়ার সাথে সাথেই আমরা বাসায় গিয়ে পরীক্ষা করি। রেজাল্ট পজিটিভ হলে ওষুধ দেই, অনেকেই ভালোও হয়ে যায়। কিন্তু রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে বাইরে গিয়ে কাজ করে আক্রান্ত হয়ে ফিরে আসার পর দেরিতে চিকিৎসা নেয়, তখন অনেক সময় তা মরণঘাতী হয়ে ওঠে।’

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে ম্যালেরিয়ায় ৫ জন এবং ২০২৩ সালে ১ জন মারা যান। অপরদিকে, গত বছর (২০২৪ সালে) কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২১ হাজার ৪৫৪ জন এবং মারা যান ৭ জন।

কক্সবাজারে প্রতিদিন পর্যটকদের ভিড়, আর ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী থাকা—এই বাস্তবতায় মশাবাহিত রোগ যেন দ্বিগুণ হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, এ মুহূর্তে জনসচেতনতাই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ। নতুবা এই দুই রোগে মৃত্যুর মিছিল আরও দীর্ঘ হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ