অ্যাপল, ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সরকারি পরিষেবার এক হাজার ছয়শ কোটি পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়েছে। এটি এ যাবতকালে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনা বলে বলছেন গবেষকরা।

বৃহস্পতিবার ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ফাঁসের ঘটনায় এক হাজার ছয়শ কোটি লগইন তথ্য ও পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনার পর কোটি কোটি ব্যবহারকারীকে পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগল। পাশাপাশি আমেরিকান নাগরিকদের এসএমএস’এ সন্দেহজনক লিংক না খোলার বিষয়েও সতর্ক করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।

এ ফাঁস নিয়ে তদন্ত করেছে সাইবারনিউজের গবেষকরা। সাইবার নিউজের ভিলিয়াস পেটকাউস্কাস বলেছেন, ‘মোট ৩০টি আলাদা ডেটাসেট বা তথ্যভাণ্ডার পেয়েছেন তারা, যেগুলো ইন্টারনেটে ফাঁস হয়েছে। যার প্রতিটিতে কয়েক কোটি থেকে শুরু করে সাড়ে তিনশ কোটিরও বেশি ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে।’

আগে যেসব ডেটা ফাঁস হয়েছিল, এবারের বিষয়টি তেমন নয়। এ ঘটনায় ৩০টি ডেটাসেটের মধ্যে যেসব তথ্য ফাঁস হয়েছে তার প্রায় সবকটিকেই একেবারে নতুন তথ্য হিসেবে ধরা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্ট।

গবেষকরা বলছেন, ‘এটি কোনো সাধারণ তথ্য ফাঁসের ঘটনা নয়, বরং বিশাল আকারে তথ্যের অপব্যবহারের জন্য তৈরির এক নীলনকশা এটি। কারণ, এসব পাসওয়ার্ড ও লগইন তথ্য ফিশিং আক্রমণ বা ভুয়া লিংক পাঠিয়ে তথ্য চুরি এবং অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ে ব্যবহৃত হতে পারে।’

তারা সতর্ক করে বলছেন, এসব তথ্য কেবল রিসাইকেল করা পুরানো ডেটা নয়; যেগুলো আবার হয়েছে। এগুলো একেবারে নতুন ও ব্যবহারযোগ্য এমন সব তথ্য, যা বড় পরিসরে সাইবার হামলা চালানোর জন্য হ্যাকারদের ক্ষেত্রে সহজ অস্ত্র হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

ফাঁস হওয়া তথ্যের বেশিরভাগই ছিল ‘ইউআরএল’ বা ওয়েব ঠিকানা ফরম্যাটে, তারপর সেই ওয়েবসাইটের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড। এসব তথ্যের মাধ্যমে ‘অ্যাপল, ফেসবুক ও গুগল থেকে শুরু করে গিথহাব, টেলিগ্রাম ও বিভিন্ন সরকারি পরিষেবাসহ প্রায় সব ধরনের অনলাইন সেবায় সহজেই প্রবেশ করতে পেরেছে হ্যাকাররা।

বিষয়টি উদ্বেগজনক হলেও গবেষকরা বলছেন, এসব ডেটাসেট বা তথ্যের ভাণ্ডার খুব কম সময়ের জন্য ইন্টারনেটে উন্মুক্ত অবস্থায় ছিল। তথ্যগুলো এমনভাবে ফাঁস হয়েছিল; যেন হঠাৎ এসে হঠাৎ গায়েব হয়ে গিয়েছে। গবেষকরা বিষয়টি বুঝতে পারলেও ফাঁসের উৎস বা দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্তের সময় পাননি তারা।

সাইবারনিউজের তথ্যমতে, গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন, এ বিশাল তথ্য ফাঁসের ঘটনা একটি নয়, বরং একাধিক ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার বা তথ্য চুরি করার সফটওয়্যারের মাধ্যমে ঘটানো হয়েছে। তবে ঠিক কতজন বা কতটি অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস হয়েছে, তা এখনও অজানা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প সওয় র ড স র ঘটন স হয় ছ বলছ ন ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ