নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার হাজারীবাগ এলাকায় অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে সাবেক দুই কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আব্দুল কুদ্দুস (৭০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আবু হোসেন জানান, বন্দর রেললাইন অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাওসার আশা গ্রুপের সঙ্গে আরেক সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের লোকজনের দ্বন্দ্ব চলছিল। শুক্রবার এ নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৮ জন আহত হন। শনিবার রাতে হান্নান সরকারের গ্রুপের বাবু-মেহেদীর নেতৃত্বে আশা গ্রুপের জাফর-রনির ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এর একপর্যায়ে হান্নান গ্রুপের লোকজন আশা গ্রুপের আব্দুল কুদ্দুসকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ঘটনার জেরে আশা গ্রুপ সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের বাসায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এ বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার বলেন, এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে জড়িয়ে বদনাম করার চেষ্টা করছে। আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। 

সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাওসার আশা বলেন, ‘বাবু, মেহেদী, রনি ও জাফর সবাই এক সময় একসঙ্গে চলাফেরা করত। কিন্তু সম্প্রতি অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।’

তদন্ত থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ঘর ষ ন হত দ ই হ ন ন ন সরক র স ট য ন ড দখল স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০

নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে সড়কে কাজ করা শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাটারিচালিত রিকশা (ইজিবাইক) চালকরা হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে ইজিবাইক চালকদের সাথে সংঘাতে জড়ালে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। 

এ ঘটনায় ইজিবাইকচালকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে রাখেন। তাদের অবরোধে পুরো শহরজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের চাষাঢ়া ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশ গেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষার্থী ও ইজিবাইক চালকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিষয়টি সমাধান হয়।

এদিকে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলো- মোঃ আবু সাঈদ (১৯), মারুফ (১৯), আসিফ (৩০), মাহিম (২২), ফয়সাল আহমেদ (২৮), হুমায়ন কবির (২৬), এনামুল হক শান্ত (২৩), শাহীন খন্দকার (২২) ও নুহেল মুন্সী আপন (২২)। তবে আহত ইজিবাইক চালকদের নাম পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীরা চাষাড়ায় ঢুকতে বাঁধা দেয় ইজিবাইক চালকদের। এ নিয়ে কথাকাটাকিাটি হয় উভয়ের মধ্যে এক পর্যায়ে ইজিবাইকরা চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে  ইজিবাইক চলকরা সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ। পরে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সংঘর্ষের সময় ইজিবাইক চালকদের অনেকেই তাদের গাড়ির সিটের নিচ থেকে লাঠি ও লোহার রড বের করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।

ধারণা করা হয়, আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল ইজিবাইক চালকরা যে শিক্ষার্থীদের উপর সুযোগ পেলেই হামলা করবে। কারণ গত এক দেড় মাস ধরেই চাষাড়ায় ইজিবাইক ঢুকতে বাধা দিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ জমতে থাকে ইজিবাইক চালকদের মধ্যে। আজকে তারা সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে।

ওদিকে যানজট নিরসনে কাজ করা শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমরা এক মাস ধরে শহরের যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। চেম্বার অব কমার্স এবং বিকেএমই থেকে আমাদেরকে ট্রাফিক মনিটরিং সেলে দেওয়া হয়। আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই বড় অটোরিকশাগুলো চাষাঢ়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।

কিন্তু তারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাষাঢ়ায় প্রবেশ করেন। পরে বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর ক্ষেপে যান। এবং পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

তবে উজ্জল নামে এক অটোরিকশাচালক জানায়, ‘আমাদের চাষাঢ়া যাওয়া নিষেধ। আমরা নিষেধ উপেক্ষা করে চাষাঢ়া গেছি, এটা আমাদের অপরাধ। কিন্তু তারা আমাদের অটোরিকশার গ্লাস ভেঙে দিয়েছে। গ্লাস ভাঙার কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের অনেককে তারা মারধর করেছে। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ভালো একটি সমাধানে আসা সম্ভব হয়েছে। আলোচনা সভায় দুই পক্ষই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসনের সব সিদ্ধান্ত মানতে একমত হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই নিতে হবে : খেলাফত মজলিস
  • আল্লাহর আইন ছাড়া এই সমাজ পরিবর্তন করা যাবে না : মাও. জব্বার
  • সোনারগাঁয়ে বড় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই খুন
  • চাষাড়া রেলস্টেশন ও ইসদাইরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৯ জনকে কারাদন্ড, আটক ১৮
  • সোনারগাঁয়ে সিরাত বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
  • ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিলে আবার সময় নিল র‍্যাব
  • রুপগঞ্জে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে এসি আই সল্টকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
  • “শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ইন্ধন থাকতে পারে তৃতীয় পক্ষের”
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০ (ভিডিও)
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০