ইংরেজি ভাষাদক্ষতার প্রচলিত নিরীক্ষণপদ্ধতি ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম বা আইইএলটিএসের লিসেনিং, রিডিং, রাইটিং ও স্পিকিং অংশের মধ্যে রাইটিং অংশে ব্যান্ড ৭ পাওয়া তুলনামূলক কঠিন। বিশেষ করে রাইটিং টাস্ক-টুতে ব্যান্ড ৭ পাওয়া যে কত কঠিন, যাঁরা পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁরাই শুধু জানেন। আমাদের দেশের অনেক শিক্ষার্থী রিডিংয়ে ব্যান্ড ৯ পেয়েও রাইটিংয়ে ৬.

৫ পান। কারণ, তাঁরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না কীভাবে রাইটিংয়ের উত্তর মূল্যায়ন করা হয়। যদি সেটি জানতেন, তাহলে ব্যান্ড ৭ পেতে পারতেন।

আইইএলটিএস রাইটিং টাস্ক-টুতে পরীক্ষার উত্তরপত্র চারটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হয়। সেগুলো হলো টাস্ক রেসপন্স, কোহেরেন্স অ্যান্ড কোহেশন, লেক্সিক্যাল রিসোর্সেস ও গ্রামাটিক্যাল রেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাকুরেসি। এই চারটি বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় টাস্ক রেসপন্স। শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় ভালো শিক্ষার্থীরাও রাইটিং অংশে ব্যান্ড ৭ তুলতে পারেন না।

টাস্ক রেসপন্স কী

টাস্ক টেসপন্স বলতে বোঝায় আপনি রাইটিং প্রশ্নটি কত ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং এর প্রেক্ষিতে কত ভালোভাবে উত্তর লিখতে পারবেন। মূলত এখানে দেখা হয়, আপনি প্রশ্নের সব অংশ লিখতে পেরেছেন কি না, পুরো রচনাতে আপনার পজিশন ক্লিয়ার ছিল কি না, আপনি আপনার আইডিয়াকে কীভাবে ডেভেলপ করেছেন, আপনার রাইটিং ফরম্যাট ঠিক আছে কি না এবং আপনার মেইন আইডিয়াগুলো প্রাসঙ্গিক কি না।

আরও পড়ুনযে ১০ বিদেশি ভাষা শিক্ষা উন্নত ক্যারিয়ার গঠনে এগিয়ে রাখবে আপনাকে১৬ এপ্রিল ২০২৪অল পার্টস বলতে কী বোঝায়

একটি রচনায় সাধারণত অনেকগুলো অংশ থাকে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য তা বুঝতে পারা কিছুটা কঠিন। ধরুন পরীক্ষায় প্রশ্ন এলো; It is important for people to take risks, both in their professional lives and their personal lives. Do you think the advantages of taking risks outweigh the disadvantages? এই প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় আপনাকে যা যা করতে হবে, তা হচ্ছে আপনাকে প্রফেশনাল লাইফে রিস্ক নেওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে লিখতে হবে। আবার একইভাবে পারসোনাল লাইফে রিস্ক নেওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে লিখতে হবে। ধরুন, আপনি শুধু সুবিধাগুলো বলে গেলেন কিন্তু কোনো অসুবিধা উল্লেখ করলেন না। আবার আপনি একটি করে সুবিধা ও একটি করে অসুবিধা লিখে গেলেন। তাহলে আপনি পুরোপুরি পার্টস কভার করলেন না। তাহলে ব্যান্ড ৭ পেতে আপনাকে যা করতে হবে এই রচনার জন্য কমপক্ষে দুটি সুবিধা ও দুটি অসুবিধা লিখতে হবে এবং প্রফেশনাল, পারসোনাল দুটিই উল্লেখ করতে হবে।

মেইন আইডিয়া কতটুকু প্রসঙ্গিক করতে হবে? ধরুন, আপনাকে ওপরে উল্লিখিত প্রশ্নের ভিত্তিতে দুটি আইডিয়া দেওয়া হলো। যেমন প্রফেশনাল লাইফে রিস্ক নিলে ক্যারিয়ারে উন্নতি হয় এবং প্রফেশনাল লাইফে রিস্ক নিলে সামাজিক সম্পর্ক ভালো হয়। এখন এই দুটি আইডিয়ার মধ্যে আপনি যদি দ্বিতীয় আইডিয়াটি লেখেন, তাহলে আপনি প্রসঙ্গিক মেইন আইডিয়া দিতে ব্যর্থ হবেন। এ ক্ষেত্রে আপনার পেনাল্টি হবে। কিন্তু আপনি যদি প্রথম আইডিয়াটি লেখেন, তাহলে আপনার আইডিয়া প্রাসঙ্গিক হবে। যদি আপনার আইডিয়া প্রশ্নের বিষয়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক না হয়, তাহলে আপনি কখনোই ব্যান্ড ৭ পাবেন না।

আরও পড়ুনডুওলিঙ্গো টেস্ট কী, প্রস্তুতি কীভাবে নেবেন১৫ এপ্রিল ২০২৪আইডিয়া কি এক লাইনে লেখা যায়

এক লাইনে মেইন আইডিয়া লেখা যাবে না। ধরুন, আপনি বডি প্যারাতে অনেকগুলো আইডিয়া লেখে গেলেন। যেমন প্রথমত, রিস্ক নিলে ক্যারিয়ারে উন্নতি হয়। দ্বিতীয়ত, রিস্ক নিলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তৃতীয়ত, রিস্ক নিলে ভয় দূর হয়। শেষে রিস্ক নিলে জ্ঞান বাড়ে।

কিন্তু আইডিয়াগুলোকে না বাড়ালে তাহলে আপনি কখনোই ব্যান্ড ৭ পাবেন না। এ জন্য আপনাকে প্রথম আইডিয়া হিসেবে রিস্ক নিলে ক্যারিয়ারে উন্নতি হয় এটি লিখলে এর সঙ্গে কেন/কীভাবে দিয়ে আইডিয়া বাড়াতে হবে এবং একটি প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দিতে হবে। তাহলে আপনার আইডিয়া সঠিক হবে।

প্রথম আলো ফাইল ছবি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র আইড য় আপন ক সপন স

এছাড়াও পড়ুন:

কালীগঞ্জে ভুয়া ফেসবুকে আইডি খুলে অপপ্রচার ও প্রতারণা করছে অজ্ঞাত চক্র

গাজীপুরের কালীগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেক (ভুয়া) আইডি খুলে সম্মানি ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের ঘায়েল করতে চালানো হচ্ছে ভয়াবহ অপপ্রচার। প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইলিং এবং সামাজিকভাবে হেয় করাসহ নানা সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বারবার অভিযোগ জানালেও আইটি শাখার ‘দুর্বলতা’র অজুহাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। 

অপরদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, ভুয়া ফেসবুক আইডি নজরদারিতে থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না।

আরো পড়ুন:

তদবিরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি, ষড়যন্ত্রকারীরা পেছনে লেগেছে: তথ্য উপদেষ্টা

গোপালগঞ্জে সামরিক অভিযানের ভিডিওটি ভুয়া: বাংলা ফ্যাক্ট

পুলিশ ও একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর স্থানীয় একটি অজ্ঞাত চক্র ফেসবুককে অপতৎপরতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে সামাজিকভাবে সম্মান ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য। বিশেষ করে, যারা বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছেন কিংবা অন্য দলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন, তারা এ চক্রের প্রথম টার্গেট। ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনীতিকদের ছবি, নাম ও তথ্য ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে মানহানিকর প্রচারণা।

২০২২ সালের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, কালীগঞ্জ উপজেলায় জনসংখ্যা ৩ লাখ ১০ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তাদের অনেকের হাতে আছে স্মার্টফোন। তরুণদের মধ্যে কেউ কেউ মজা কিংবা পরিচয় গোপন রাখতে ভুয়া আইডি খুললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব আইডি ব্যবহার হচ্ছে অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে। 

এসব ভুয়া ফেসবুক আইডির মূল উদ্দেশ্যই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। আকর্ষণীয় নারী বা পুরুষের ছবি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় ভুয়া প্রোফাইল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছবিগুলো গুগল ইমেজ থেকে নেওয়া, খুঁজলেই পাওয়া যায় একাধিকবার ব্যবহারের প্রমাণ। 

স্থানীয় এক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়মিত ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অনেক সম্মানি মানুষ তাদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন। আমরা চাই, বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিক।” 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও সতর্ক করছেন। তাদের মতে, ফেসবুক বন্ধুত্বের মাধ্যম হলেও কিছু ব্যক্তি একে ব্যবহার করছেন প্রতারণা ও মানহানির মাধ্যম হিসেবে। ভুয়া আইডি তৈরি এবং তা দিয়ে ক্ষতিকর পোস্ট, মন্তব্য বা ভিডিও শেয়ার করাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ফেক আইডি আজ শুধুই বিরক্তির নয়, এটি পরিণত হয়েছে ভয়ঙ্কর সামাজিক ফাঁদে। দ্রুত এসব আইডি শনাক্ত করে ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় না আনলে সামাজিক অস্থিরতা ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরো বাড়বে।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেছেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো ও হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কেউ যদি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা গ্রহণ করা হবে এবং পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি শাখার সহায়তায় প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ইতোমধ্যে কয়েকটি সন্দেহভাজন ফেক আইডিকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। তবে, অধিকাংশ ভুক্তভোগী থানায় এসে অভিযোগ দিচ্ছেন না। এ ধরনের অপরাধ রোধে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি সকলকে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, “আইসিটি বিভাগ এ বিষয়ে তৎপর আছে। ইতোমধ্যে কিছু ভুয়া আইডি শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে সেগুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ