প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কসোভোর রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
Published: 25th, June 2025 GMT
বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তাঁর নিয়োগের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং তাঁকে বাংলাদেশে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
বাংলাদেশের ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর চেতনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি কসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন।
জবাবে রাষ্ট্রদূত প্লানা কসোভোকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে সশস্ত্র সংঘাতের পর কসোভোর জনগণের জীবন পুনর্গঠনে গ্রামীণ কসোভোর অবদানকে স্মরণ করেন ।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে একটি মূল্যবান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি এবং আমি আপনার ব্যক্তিগত অঙ্গীকারের জন্যও শ্রদ্ধা জানাতে চাই।’
‘আপনার গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগ আমাদের জাতির জন্য এক বিশাল সহায়তা ছিল। স্বাধীনতা ও উন্নয়নে বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যুদ্ধোত্তর সময়ে কসোভোতে বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের অবদান ও সহায়তার জন্যও আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কসোভো বর্তমানে কসোভোর শীর্ষস্থানীয় ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা, যা দেশের ২০টি পৌরসভা ও ২১৯টি গ্রামে কাজ করছে, যেখানে ৯৭ শতাংশ ঋণগ্রহীতা নারী।
বাংলাদেশের গ্রামীণ ট্রাস্ট এই ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান।
কঠিন সেই সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। যখন আমরা সেখানে পৌঁছায়, তখন সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল। পুরুষেরা তখনো ফিরে আসেনি। কোনো মুদ্রা ছিল না, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল না। তখন আমরা শূন্য থেকে সেখানে গ্রামীণ ব্যাংকের কাজ শুরু করি।’
আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর।
প্রধান উপদেষ্টা সহযোগিতার সম্ভাবনাময় কয়েকটি খাত তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, ওষুধ শিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং হালকা প্রকৌশল খাত।
তিনি কসোভোর বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত প্লানা উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগে গতিশীলতা আনার জন্য ব্যবসা ও শিল্প চেম্বারগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর বিভিন্ন খাতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে রাষ্ট্রদূতের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হার বাড়ানোর প্রস্তাব দেন, যার মধ্যে রয়েছে বৃত্তি, ফেলোশিপ ও একাডেমিক অনুদান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘‘বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের মানুষ আর চলতে চায় না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তাই মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। এজন্য দেশপ্রেমিক ইসলামিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীতে ইসলামের পক্ষে ভোটের বাক্স হবে একটি। আমরা ইসলামী দলগুলো আর কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না।’’
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করীম বলেন, ‘‘একটি দল আছে, যারা পূর্বে ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে একাধিকবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজিসহ নানা অপরাধ করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীও করছে। আবারো ক্ষমতায় যেতে ওরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ দেশের ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে ফ্যাসিস্ট বিদায় করেছে পুরনো বন্দোবস্তর জন্য নয়। নতুন সিস্টেম ও নতুন কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। কারণ দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ক্ষমতা দেখেছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশের মানুষ পুরনো সিস্টেম আর দেখতে চায় না। পুরনো বউকে নতুন কাপড়ে সাজিয়ে এনে জনগণের সামনে উপস্থাপন করলে জনগণ আর মেনে নেবে না। তাই নির্বাচনের পূর্বে গণভোট দিতে হবে। পিআর কার্যকর করতে হবে। জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নির্বাচনের পূর্বেই দিতে হবে। বিদেশি অথবা দেশের কোনো অপশক্তির ইশারায় যদি এগুলো কার্যকর করা না হয়। তাহলে, ইসলামী আন্দোলন দেশের মানুষকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’’
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/রাজীব