অস্ত্রে টান পড়েছে ইসরায়েলের: রিপোর্ট
Published: 25th, June 2025 GMT
অস্ত্রভান্ডারে টান পড়েছে ইসরায়েলের। এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ। খবর আল জাজিরার।
বুধবার (২৫ জুন) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এনবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রশস্ত্রের অভাব রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের কাছে বিশেষভাবে যুদ্ধাস্ত্রের অভাব রয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্রের খবর ফাঁস করেছিলেন যে প্রকৌশলী
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি ‘দুর্বল’ যুদ্ধবিরতি চলমান থাকার মধ্যে এই খবর সামনে এলো।
প্রতিবেদনটির বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর ইসরায়েলকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্রদান করে। ১৩ জুন ইসরায়েলের বিনা উস্কানিতে ইরানে সামরিক অভিযান শুরু করার পর, তেহরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করতে মার্কিন বাহিনী ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে বলেও জানা গেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
টেলিটকের আধুনিকায়নের পরিকল্পনা, লক্ষ্য উন্নত সেবা
মোবাইল অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রযুক্তি হালনাগাদের একটি বৃহৎ পরিকল্পনায় হাত দিয়েছে। লক্ষ্য চতুর্থ প্রজন্মের (৪জি) সেবার বিস্তার, ভবিষ্যতের ৫জি প্রস্তুতি এবং নাগরিকদের জন্য আরো উন্নত ও নিরবচ্ছিন্ন ডিজিটাল সংযোগ নিশ্চিত করা।
আধুনিকায়নের ঘোষণা, বাস্তবে বিভ্রাট
টেলিটক গত ২৪ জুন রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত রিচার্জ সেবা সাময়িক বন্ধ থাকবে বলে আগেই জানায়। মূলত ব্যাকএন্ড সার্ভার, বিলিং সিস্টেম ও রিচার্জ মডিউল আপগ্রেডের জন্য এই সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সকাল পেরিয়ে দুপুর পর্যন্ত বহু গ্রাহক রিচার্জ করতে না পেরে চরম ভোগান্তিতে পড়ে।
বরিশাল, রংপুর, চট্টগ্রাম ও ঝালকাঠীর মতো এলাকায় একাধিক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন সকাল ৭টায় রিচার্জ করতে চাইলেও কাজ করেনি টেলিটকের সিস্টেম।
আরো পড়ুন:
‘মার্চ ফর গাজা’: সোহরাওয়ার্দীতে অর্ধশতাধিক মোবাইল চুরি
বাবার জানাজায় এসে আইফোন খোয়ালেন মনির খান
ঝালকাঠীর শিক্ষক রুহুল আমিন খান বলেন, “রাতে রিচার্জ বন্ধ থাকবে জেনেই সকাল ৭টার পর চেষ্টা করি। কিন্তু তখনও ব্যর্থ হই। অনলাইন ক্লাস নেওয়ার সময় ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ক্লাস করতে পারিনি।”
ডেইভেন্টে ভেঙে পড়া সেবা
টেলিটকের ভাষ্য অনুযায়ী, রিচার্জ প্ল্যাটফর্মে ডেইভেন্ট ঘটায় মূল সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরিকল্পিত সময়সীমার বাইরেও সেবা বিঘ্নিত থাকায় প্রশ্ন উঠেছে, এত বড় এক আপগ্রেড কেন আরো পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলো না।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. মাহমুদুল হাসান বলেন, “একটি জাতীয় অপারেটর হিসেবে টেলিটকের প্রযুক্তি হালনাগাদ হওয়া সময়ের দাবি। কিন্তু রোলআউট পরিকল্পনায় ঘাটতি থাকলে তা গ্রাহকের আস্থা নষ্ট করে। রিচার্জ যতটাই সামান্য মনে হোক, এর সঙ্গে স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং, জরুরি যোগাযোগ যুক্ত যা সাময়িক হলেও বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।”
এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “টেলিটকের আধুনিকায়ন একটি কৌশলগত পরিবর্তনের অংশ। দেশের প্রতিটি উপজেলায় ৪জি সম্প্রসারণের কাজ চলছে।”
তিনি আরো বলেন, “প্রযুক্তি হঠাৎ ব্যর্থ হতেই পারে, তবে তা যেন গ্রাহকের ক্ষতির কারণ না হয় সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। রাষ্ট্রীয় এই অপারেটরকে আমরা বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
আশার আলো
বর্তমানে টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। ‘আগামী’ ও ‘স্বপ্ন’ নামে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ চালু করে প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে তরুণ সমাজে আগ্রহ জাগাতে পেরেছে। তবে চ্যালেঞ্জ এখন এই আস্থা ধরে রাখা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শফিক হাসান বলেন, “টেলিটকের আধুনিকায়ন নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী উদ্যোগ। কিন্তু শুরুতেই সেবার ভাঙন এই উদ্যোগের সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। রাষ্ট্রীয় এই অপারেটর যেন ‘আস্থাহীন ব্র্যান্ড’ হিসেবে না থেকে সত্যিকারের জাতীয় গর্ব হয়ে উঠতে পারে এটাই প্রত্যাশা।”
পুরনো সমস্যা, নতুন সুযোগ
বহুদিন ধরেই টেলিটকের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ দুর্বল সিগনাল, অ্যাপ ব্যবহারযোগ্য না থাকা, রিচার্জে জটিলতা, অপ্রত্যাশিত ব্যালেন্স কাটাকাটি। এই আধুনিকায়ন প্রক্রিয়াই হতে পারত এক নতুন সূচনা। কিন্তু প্রযুক্তির প্রথম ধাক্কাতেই আবারও ফিরে এল পুরনো শঙ্কা।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি
টেলিটক জানিয়েছে, তারা ধাপে ধাপে দেশব্যাপী ৪জি বিস্তার, ভবিষ্যতে ৫জি রোলআউট, এবং ই-গভর্নেন্স ও শিক্ষা খাতে অংশগ্রহণ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা একটি সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলছি। কিছু কারিগরি জটিলতা থাকলেও তা অস্থায়ী। আমাদের অগ্রাধিকার হলো গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনা।”
তিনি বলেন, “টেলিটকের আধুনিকায়ন নিঃসন্দেহে প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। তবে সেই প্রযুক্তিগত রূপান্তর কেবল তখনই ফলপ্রসূ হবে, যখন এর প্রয়োগ হবে পরিকল্পিত, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট থাকবে শক্তিশালী, আর ‘গণমানুষের প্রযুক্তি’ হিসেবে আস্থা ফেরাতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। প্রযুক্তি বিকাশের প্রতিটি ধাপেই জনগণের আস্থা অর্জন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটক সেই চ্যালেঞ্জ পেরোতে পারবে কি না এখন সেটাই দেখার পালা।”
ঢাকা/এএএম/এসবি