এনবিআর সংস্কার বাধাগ্রস্ত করতে সুবিধাভোগী কিছু ব্যবসায়ীর স্বার্থ থাকতে পারে: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 25th, June 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে আওয়ামী সরকারের সময়কার কিছু সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীর স্বার্থ থাকার বিষয়ে সন্দেহ করছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এনবিআরকে পৃথক করে রাজস্ব শাখা ও নীতি শাখা হিসেবে নতুন বিভাগ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে এমনটি করা হলে এখানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অধিপত্য ও উপস্থিতি বাড়বে-এমটি বলে আসছেন বিসিএস (কর) ক্যাডার এবং বিসিএস (শুল্ক ও আবগারী) ক্যাডার কর্মকর্তারা।
এরই ভিত্তিতে আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে আন্দোলন, কর্মবিরতি চলছে। সেখানে পুলিশ পাহারায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন প্রশাসন ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সচিব আবদুর রহমান খান।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এনবিআর কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে একটা নেতিবাচক ধারণা আছে। ওদের ক্যারিয়ারের কোনো অসুবিধা হবে না। বরং এনবিআর একটা স্বতন্ত্র ডিভিশন হবে। ওদের স্ট্যাটাসটা বাড়বে। ওদের ক্যারিয়ারটা আরও প্রসপেক্ট হবে। ওদের প্রমোশনটা আরও বেটার হবে। এখন তাদেরকে কারা কী বুঝিয়েছে, ভেতরের ব্যাপার আপনারা আরও ভালো বলতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘ওরা যেটা করেছে যে- কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, এটা কোনো সরকারি কর্মচারী বিশেষ করে এনবিআরের কেউ কোনোদিন করেনি। এটা আপনার আমার ব্যাপার না। পুরা দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য, রাজস্বের ব্যাপার। বন্দর, স্থলবন্দর, আমদানি-রপ্তানির ব্যাপার। আমি বলেছি, এমন কোনো সমস্যা নেই যেটা আলোচনা করে সমাধান করা যাবে না।’
আন্দোলনে ব্যবসায়ীদের ইন্ধন আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এনবিআরে সংস্কার করার কারণ হচ্ছে এখানে আগে অনেক রকম অসঙ্গতি (ডিসক্রেপেন্সি) ছিল। সেখানে অ্যাকাউন্টেবিলিটি, ট্রান্সপারেন্সি নেই। এখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আগের সরকারের সময় কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী বেনিফিটেড হতো, ভালো যারা তারা সুবিধা পেত না। এনবিআর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ধারেকাছেও ছিল না।’
‘অতএব আমি অনুমান করে বলছি, এখানে ব্যবসায়ীদের কিছু স্বার্থ আছে। না হয় ক্যারিয়ার ট্যারিয়ার নিয়ে ওরা হঠাৎ করে এত চটে গেল কেন? অন্য কোনো ইস্যু যদি না থাকে তাহলে এমন হওয়ার কথা না। এটা হলো আমার অনুমান। আমি ব্যবসায়ীদের ওভাবে দোষ দিচ্ছি না’, বলেন অর্থ উপদেষ্টা।
আন্দোলনের মাধ্যমে এনবিআর কর্মকর্তারা চাকরিবিধি লঙ্ঘন করছেন কি না এমন প্রশ্ন করলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা তো হ্যাঁ, আমরা একটু ধৈর্য ধরছি। চাকরি করতে হলে অনেক বিধিনিষেধ মানতে হবে, শৃঙ্খলা থাকতে হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ র কর মকর ত ব যবস য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মাদকবিরোধী কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে ভিডিপি: আনসার মহাপরিচালক
ভিডিপি মাদকবিরোধী কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। তিনি বলেন, বাহিনীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কেবল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভিডিপি সদস্যরা মাদকবিরোধী কার্যক্রম, স্বেচ্ছাসেবামূলক সামাজিক আন্দোলন এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
বুধবার রংপুর রেঞ্জের তিনটি (দিনাজপুর, রংপুর ও নীলফামারী) জেলার আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় সাঁওতাল নৃগোষ্ঠী ও যুব সমাজের ক্ষমতায়নে বাহিনীর অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও সামাজিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন মহাপরিচালক।
আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক দিনাজপুর জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণ (সাঁওতাল) ২০২৫’–এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত জনগোষ্ঠীকে মূলধারার উন্নয়ন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে ১৩২ জন ভিডিপি সদস্য-সদস্যাকে নিরাপত্তা ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জের রেঞ্জ কমান্ডার আব্দুস সামাদ, দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম ও দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন।
পরে তিনি রংপুর জেলা আনসার-ভিডিপি কার্যালয় পরিদর্শন করেন এবং সেখানে চলমান ‘ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিং’ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সামাজিক নেতৃত্বের কার্যকর পরিধি, সাইবার নিরাপত্তা, তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক সামাজিক ব্যবসা এবং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধসহ আধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর সম্ভাবনার বিষয়সমূহে জ্ঞান দেওয়া হচ্ছে।
মহাপরিচালক এ সময় প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সদস্যদের মনোবল, প্রশাসনিক কাঠামো ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পর্কে সার্বিক খোঁজখবর নেন। তিনি আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং জাতীয় প্রয়োজনে তাদের কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই সফর সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর সদস্যদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা, দায়িত্ববোধ ও কর্মস্পৃহা সঞ্চার করেছে।