সিলেট নগরীর মেজরটিলা এলাকার নিজ বাসায় দেড় মাস বয়সী এক শিশুকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন শিশুটির বাবা আতিকুর রহমান। এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত সে বিষয়ে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।

বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে নগরীর মেজরটিলা বাজারসংলগ্ন ইসলামপুর এলাকার একটি বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। 

নিহত শিশুটির নাম ইনায়া রহমান। সে সিএনজিচালিত অটোরিকশার আতিকুর রহমান ও নাজমা বেগম দম্পতির মেয়ে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে গৃহবধূ খুন, অভিযুক্ত পলাতক  

প্রবাসীর লাশ হাসপাতালে ফেলে গেলেন স্ত্রী, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

স্বজনরা জানান, প্রতিদিনের মতো দুপুরে খাবার খেয়ে স্ত্রী ও শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন আতিকুর রহমান। বিকেলে তাদের ঘর থেকে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে দেখেন, আতিকুর রহমান রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন। তার দেড়মাস বয়সী মেয়ে ইনায়ার গলা কাটা। পরে তাদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক শিশু ইনায়াকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আতিকুর রহমানকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত শিশুর মা নাজমা বেগম দাবি করেন, “আমি মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আছরের আজানের কিছুক্ষণ আগে মেয়ে কান্না করছিল। মেয়েকে কোলে নিয়ে ওর বাবা হাঁটছিলেন। কিছুসময় পরে তিনি আমার শরীরে হাত দিয়ে ডাকেন। ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখি, আমার স্বামীর গলা রক্তাক্ত। দ্রুত গিয়ে দেখি আমার মেয়েরও গলাকাটা।”

তিনি আরো বলেন, “আমার স্বামী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। সকালে নাস্তা খেয়ে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যান। দুপুরের দিকে বাসায় এসে বলেন, তার মাথা ব্যাথা করছে। দুপুরের নামাজ পরে খাবার খেয়ে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম।”

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, “হত্যার রহস্য উন্মোচনে পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। নিহতের বাবা গুরুতর আহত। মা পুলিশ নজরদারিতে আছেন।” 

ঢাকা/নূর/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আহত

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ