উজান থেকে নেমে আশা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে হু-হু করে বাড়ছে পানি। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে।

ফলে জেলা সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চলের অনেক গ্রামের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অংশে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৬ দিনে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ১০৭ ও কাজিপুর মেঘাইঘাট পয়েন্টে ১১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত পানি বৃদ্ধির কারণে নদীতীরবর্তী অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে চরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় ফসলি জমিতে পানি ওঠায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে।

সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের কৃষক মতিন মোল্লা জানান, গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীতে দ্রুতগতিতে পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে প্লাবিত হচ্ছে। এতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বাড়াবাড়ি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানান, উজানে বৃষ্টিপাত বেড়েছে এবং মেঘের অবস্থান দেশের উত্তরের দিকে রয়েছে, ফলে পানি বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, “পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে যমুনায় পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “তবে পানি বাড়লেও সিরাজগঞ্জে বিপৎসীমার ১৯৯ সেন্টিমিটার ও কাজীপুরে ২১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লেও বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।”

ঢাকা/অদিত্য/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল র ক ষ স র জগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

চার টুকরো করে যুবককের লাশ খালে ফেলেন দম্পতি

কুমিল্লার তিতাসে নজরুল ইসলাম ভূইয়া (৩৫) নামে এক যুবককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন দম্পতি। এরপর তারা মরদেহটি চার টুকরো করে আলাদা বস্তায় ভরে খালে ফেলে দেন। এ ঘটনায় জড়িত স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

রবিবার (১০ আগস্ট) ভোরে তিতাস উপজেলার মজিদপুর এলাকার বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেল পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করে নিহত যুবকের কাটা দুইটি হাত উদ্ধার করে পুলিশ। গত চারদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন নজরুল। 

তিতাস থানার ওসি মো. শহিদ উল্লাহ আসামি গ্রেপ্তারের পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

রংপুরে গণপিটুনিতে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

পাবনার সেলিম গাজীপুরে এসে হন স্বাধীন, পাল্টান বাবার নামও

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মজিদপুর এলাকার মৃত মজু মিয়ার ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মোহাম্মদ হোসেন (৩২) এবং তার স্ত্রী স্মৃতি আক্তার (২৭)।

পুলিশ জানায়, গত ৬ আগস্ট রাতে মজিদপুর ইউনিয়নের শাহাবৃদ্ধি গ্রামের হানিফ ভূইয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম ভূইয়া নিখোঁজ হন। নজরুল পেশায় ট্রাকচালক ছিলেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে তিতাস থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন নজরুলের বাবা।

পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমেই মোবাইল ট্র্যাকিং করে অটোরিকশাচালক হোসেনের স্ত্রী স্মৃতির মোবাইল নম্বরের সঙ্গে নজরুলের সর্বশেষ যোগাযোগের তথ্য পায়। রবিবার ভোরে স্মৃতি ও তার স্বামী হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে নজরুলকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন দম্পতি। 

পুলিশ জানায়, নজরুলকে হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে তারা জানান, স্মৃতির সঙ্গে নজরুলের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল এমনটি সন্দেহ করতেন হোসেন। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে নজরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

গত ৮ আগস্ট রাতে নজরুলকে ফোন করে ডেকে আনেন ওই দম্পতি। ঘরে প্রবেশের পর নজরুলকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন হোসেন ও তার স্ত্রী। পরে নজরুলের লাশ চার টুকরো করে চারটি আলাদা বস্তায় ভরে মরদেহের খালে ফেলে দেন তারা। 

অভিযুক্তদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার বিকেলে মজিদপুর গ্রামের উত্তর পাশের খাল থেকে স্থানীয় জেলেদের দিয়ে মরদেহের খণ্ডিত দুইটি হাত উদ্ধার করা হয়। অন্য টুকরোগুলো এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তিতাস থানার ওসি মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, “হত্যাকারীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মরদেহের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি অংশগুলো ডুবুরি দিয়ে খোঁজা হচ্ছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ