মিয়ানমারের জান্তা প্রধান জানিয়েছেন, সামরিক সরকার ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

সামরিক বাহিনী ২০২১ সালের এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে। এরপর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। তবে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সামরিক জান্তা নির্বাচনের কথা বলতে শুরু করেছে।

সাবেক সরকারের সদস্যদের আটকে রাখা, বিরোধী দলগুলোর ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং দেশের বিশাল অঞ্চল জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে মিয়ানমারে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব।

রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমার জানিয়েছে, জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং বুধবার রাজধানী নেপিদোতে এক সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে এবং আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, জান্তা “বৈধ বেসামরিক সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনী মহড়ার এই মরীচিকা তৈরি করার চেষ্টা করছে। যখন আপনি আপনার বিরোধীদের বন্দি, নির্যাতন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন, যখন সাংবাদিক হিসেবে সত্য প্রকাশ করা অবৈধ, যখন জান্তার কথা বলা এবং সমালোচনা করা অবৈধ, তখন আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না।”

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গণতন্ত্রপন্থী গেরিলা ও শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর কাছে জান্তা বাহিনী ভয়াবহ আঞ্চলিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও রাশিয়ার সামরিক সহায়তা তাদের পরাজয় রোধ করতে সাহায্য করছে, তবে দেশের বিশাল অঞ্চলগুলো জান্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য গত বছর অনুষ্ঠিত জান্তা আদমশুমারি স্বীকার করেছে যে তারা দেশের ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে আনুমানিক ১ কোটি ৯০ লাখের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি, যার একটি কারণ ‘উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা সীমাবদ্ধতা।’

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ