ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে মিয়ানমারে নির্বাচনের পরিকল্পনা
Published: 26th, June 2025 GMT
মিয়ানমারের জান্তা প্রধান জানিয়েছেন, সামরিক সরকার ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনী ২০২১ সালের এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে। এরপর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। তবে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সামরিক জান্তা নির্বাচনের কথা বলতে শুরু করেছে।
সাবেক সরকারের সদস্যদের আটকে রাখা, বিরোধী দলগুলোর ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং দেশের বিশাল অঞ্চল জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে মিয়ানমারে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব।
রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমার জানিয়েছে, জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং বুধবার রাজধানী নেপিদোতে এক সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে এবং আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, জান্তা “বৈধ বেসামরিক সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনী মহড়ার এই মরীচিকা তৈরি করার চেষ্টা করছে। যখন আপনি আপনার বিরোধীদের বন্দি, নির্যাতন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন, যখন সাংবাদিক হিসেবে সত্য প্রকাশ করা অবৈধ, যখন জান্তার কথা বলা এবং সমালোচনা করা অবৈধ, তখন আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না।”
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গণতন্ত্রপন্থী গেরিলা ও শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর কাছে জান্তা বাহিনী ভয়াবহ আঞ্চলিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও রাশিয়ার সামরিক সহায়তা তাদের পরাজয় রোধ করতে সাহায্য করছে, তবে দেশের বিশাল অঞ্চলগুলো জান্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য গত বছর অনুষ্ঠিত জান্তা আদমশুমারি স্বীকার করেছে যে তারা দেশের ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে আনুমানিক ১ কোটি ৯০ লাখের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি, যার একটি কারণ ‘উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা সীমাবদ্ধতা।’
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুদকের অভিযান
বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত ভারত ও বাংলাদেশের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য এবং মালামাল লুটপাটের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর থেকে টানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান চালানো হয়।
দুদকের বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এ সব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অভিযানে ভারত ও বাংলাদেশের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য, কর মওকুফে অসামঞ্জস্য এবং কয়লা কেনাবেচায় অনিয়মেরও তথ্য উঠে আসে।
দুদকের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, “আমরা কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য, কর অব্যাহতির বৈষম্য, কয়লা ক্রয়ে দুর্নীতির প্রমাণসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। এসব বিষয়ে প্রাপ্ত নথিপত্র ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরো পড়ুন:
দুদকের চা খাওয়ার বিল এক লাখ টাকা: অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক
রামেক হাসপাতাল
নিজের কাজ ফেলে ট্রলি ঠেলে বেড়ান কর্মচারীরা, ব্যবস্থা নেবে দুদক
তিনি আরো জানান, ভারতের কর্মকর্তাদের বিগত তিন বছরের কর মওকুফ করা হলেও একই প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের কর মওকুফ করা হয়নি, যা স্পষ্ট বৈষম্য।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গরদাশকাঠি মৌজায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপর ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যায়। তবে উৎপাদন শুরুর পর থেকে নানা কারণ দেখিয়ে বারবার কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়, যা এর ব্যবস্থাপনা ও কার্যকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল