নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেছেন, “বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি পুর্ণাঙ্গ ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিশাল সমুদ্র এলাকার সার্বভৌমত্বরক্ষা এবং ব্লু-ইকোনমি সংক্রান্ত কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে নৌবাহিনীর কর্মপরিধি ও দায়িত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নৌবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছে।”

আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন ও ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে দেশীয় প্রযুক্তিতে নবনির্মিত তিনটি ডাইভিং বোট পানকৌড়ি, গাংচিল ও মাছরাঙ্গার কমিশনিং হয়। এ উপলক্ষে খুলনা নেভাল বার্থে আয়োজিত কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নৌবাহিনী প্রধান বলেন, “প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সর্বোপরি ভূরাজনৈতিক প্রয়োজনে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিশাল সমুদ্র অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে, যুদ্ধ ও শান্তিকালীন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলছে।”

আরো পড়ুন:

এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ায় কেএমপি ঘেরাও, প্রধান ফটকে তালা

খুলনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ

তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতা লাভের পর একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে অল্পকিছু অকুতোভয় নৌসদস্যকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত তিনটি ডুবুরি জাহাজ নৌবাহিনীতে কমিশনিং করতে পেরে আমি আনন্দিত।”

অনুষ্ঠানে খুলনা নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক-সহ সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাহাজের কর্মকর্তা, নাবিক এরং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হলো দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত ডাইভিং বোট পানকৌড়ি, গাংচিল ও মাছরাঙ্গা

অনুষ্ঠানে নৌ প্রধান নতুন কমিশনিং হওয়া বোটগুলো অধিনায়কদের কাছে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন।

নিজস্ব সক্ষমতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আধুনিক যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ ও সরঞ্জামাদি তৈরির মাধ্যমে নৌবহরকে আরো শক্তিশালী করে তুলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ জুন ২০২১ সালে খুলনা শিপইয়ার্ডে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে দেশীয় প্রযুক্তিতে তিনটি ডাইভিং বোট নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ ও প্রয়োজনীয় টেস্ট ট্রায়াল শেষে গত ৬ মে ডাইভিং বোটগুলো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নতুন সংযোজিত ডাইভিং বোটগুলোর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩৮.

৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৯ মিটার। বোটগুলো ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। ডুবুরি কার্যক্রমের আধুনিকায়নে বোট তিনটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ডাইভিং কার্যক্রমে ব্যবহৃত আধুনিক সরঞ্জাম ও সেন্সরে সুসজ্জিত এই বোটগুলোর মাধ্যমে নৌবাহিনীর ডুবুরিরা আরো কার্যকর ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে।

এছাড়াও প্রতিটি বোটে রয়েছে ১২.৭ মি.মি. হেভি মেশিন গান, উন্নত সার্ভেইল্যান্স র‌্যাডার, জিপিএস, ইকো-সাউন্ডার এবং আধুনিক কন্ট্রোল সিস্টেম। কমিশন করা ডাইভিং বোটগুলো শান্তিকালীন সামুদ্রিক নিরাপত্তা প্রদানসহ ডাইভিং অপারেশন, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, স্যালভেজ অপারেশন, দুর্যোগ ও ত্রাণ তৎপরতায় অংশগ্রহণ, সমুদ্র এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন কনস্টাবুলারি দায়িত্ব পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভাষা আন্দোলনের তাত্ত্বিক বিষয় আমাকে আকর্ষণ করেছিল’

ছবি: প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ