জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, তাহলে এই নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং তাদের দক্ষতা যাচাই করতে পারব। এই দুইটা কারণে আমরা মনে করি স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হওয়া উচিত।’

শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের হাজি কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে নূর ফাউন্ডেশন আয়োজিত অর্থসহ আমপারা মুখস্থ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনের সততা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তাঁরা যদি সততার সঙ্গে দেশপ্রেম এবং দায়িত্ববোধের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন, তবে তাঁদের গলায় বিদায় হওয়ার পরে মানুষ ফুলের মালা দেবে। কিন্তু তারা যদি ব্যর্থ হয়, আল্লাহ না করুক, এই মবকে আমরা সাপোর্ট করি না, কিন্তু এখান থেকে আমাদের সকলের শিক্ষা নেওয়ার আছে।’ নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি মানসিকভাবে তাদের মজবুত থাকা উচিত। কারণ, জনগণ তাদের কাছে অনেক প্রত্যাশা করে। ইতিপূর্বেকার নির্বাচন কমিশন আর এবারকার নির্বাচন কমিশন এক জিনিস না। আগের কেয়ারটেকার সরকার আর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক জিনিস না; সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। ইতিহাসের অত্যন্ত সম্মানিত পার্ট হওয়ার একটা বিশাল সুযোগ তাদের সামনে এসেছে, যদি সেই দায়িত্ব ইনসাফের ওপর দাঁড়িয়ে আদায় করতে পারে, আমরা তাদের কাছে সেইটাই চাইব।’

এর আগে নূর ফাউন্ডেশনের কো–চেয়ারম্যান মুকতাবিস-উন-নূরের সভাপতিত্বে ও আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের সেক্রেটারি হাফিজ মিফতাহুদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন হাজি কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব শায়খ সাঈদ নুরুজ্জামান আল মাদানী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে আমাদের বসতে হচ্ছে। বৈঠকে তাঁরা আমাদের নানা প্রশ্ন করেন। তাঁরা জানতে চান, আমরা ক্ষমতায় গেলে পোশাক কোড কী হবে, মাইনরিটি ও নারীর অধিকার কী হবে। আমরা তাঁদের কোরআন মোতাবেক যতটুকু জানি, ততটুকু বলি।’

অনুষ্ঠান শেষে জামায়াতের আমির প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র আম র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা সেতু থেকে খুলে ফেলা হচ্ছে রেললাইন

যমুনা সেতুর ওপর থেকে রেললাইন খুলে ফেলা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ বৃহস্পতিবার নাট-বোল্টসহ যন্ত্রাংশ খোলার কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, গত ১৮ মার্চ যমুনা রেলসেতু চালু হয়েছে। এরপর থেকে সড়ক সেতু দিয়ে ট্রেন চলছে না। যমুনা সেতুর ওপর রেললাইনের প্রয়োজন নেই। এ কারণে সেতু বিভাগ ও রেল বিভাগের মাধ্যমে যৌথ পরিকল্পনায় সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে।

যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, রেললাইন খোলা শুরু হয়েছে। উপরিভাগে যানবাহনের জটলা ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আগামীতে সেতুর দুটি লেন প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। রেললাইন খুলে নেওয়া হলে সড়ক সেতুতে আরও প্রায় সাড়ে তিন মিটার জায়গা বাড়বে। এটা মূল সড়ক সেতুর সঙ্গে সংযোগ করতে পারব। এতে উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার বাড়বে। এ ধরনের সেতু আন্তর্জাতিকভাবে ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত হয়। বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতি লেন ৬ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থ। এ কারণে দুর্ঘটনা বা যানজট হয়। রেললাইন অপসারণের পর প্রতি লেন প্রস্থ হবে প্রায় ৮ মিটার। এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লাগে। প্রশস্তকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে।

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন রাস্তা প্রশস্তকরণ প্রকল্প সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল কো-অপারেশনের (সাসেক-২) পরিচালক ড. ওয়ালীউর রহমান। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, এবারের ঈদে সেতু দিয়ে এক দিনে ৬৫ হাজারের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণে সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঈদের আগে-পরে বিপাকে পড়ে। সেতুর ওপর কয়েকটি দুর্ঘটনায় এলেঙ্গা ও সিরাজগঞ্জসহ দুই পারে থেমে থেমে যানজট হয়। সেতুর উপরিভাগ প্রশস্ত করা হলে দুর্ঘটনা ও যানজট কমতে পারে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা সেতু উদ্বোধন হয়। এর নকশায় রেলপথ ছিল না। পরে সেতুর ওপর উত্তর পাশে লোহার খাঁচা, বার ও অ্যাঙ্গেল যুক্ত করে রেললাইন বসানো হয়। ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। নির্দেশনা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে ট্রেন চলার কারণে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতি বেঁধে দেয় কর্তৃপক্ষ। সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি তৈরি হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ