কিশোরগঞ্জের ইটনায় বিনা পারিশ্রমিকে তিন হাজারের বেশি কবর খোঁড়া সেই মনু মিয়া (৬৭) মারা গেছেন। মনু মিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জীবনের প্রায় অর্ধশত বছর তিনি ব্যয় করেছেন কবর খননের কাজে, বিনিময়ে কখনো কিছু চাননি। আশপাশের গ্রাম ও জেলাজুড়েও পরিচিত ছিলেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে।

শনিবার সকালে জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মনু মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ভাতিজা শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি (মনু মিয়া) দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। ছয় দিন আগে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে আনা হয়।

মনু মিয়ার স্বজনেরা বলেন, কবর খোঁড়ার কাজ করতে গিয়ে নিজের দিকে খেয়াল হয়নি নিঃসন্তান মনু মিয়ার। ফলে শরীরে নানা জটিল রোগ বাসা বাঁধে। রোগে কাবু হয়ে সম্প্রতি শয্যাশায়ী হন তিনি। গত ১৪ মে তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থতাবোধ করলে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ সকাল থেকে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে যান।

ইটনার চিকিৎসক ডা.

ফেরদৌস আহমেদ চৌধুরী লাকী বলেন, তাকে বলা হতো শেষ ঠিকানার কারিগর। তার মৃত্যুত এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ড. লাকী জানান, মনু মিয়া স্ত্রী রেখে গেছেন। কোনও সন্তান নেই। জীবনের প্রায় ৫০ বছর তিনি বিনা পয়সায় মানুষের কবর খনন করে গেছেন। দূরদূরান্তে যাতায়াতের সুবিধার জন্য তিনি নিজের নিজের ধানি জমি বিক্রি করে কয়েক বছর আগে একটি ঘোড়া কিনেছিলেন। কারও মৃত্যুর খবর পেলেই মনু মিয়া কবর খননের যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে ছুটে যেতেন। কিন্তু মাসখানেক আগে যখন মনু মিয়া ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তখন কিছু দুর্বৃত্ত তার ঘোড়াটিকে মেরে ফেলে।

ডা. লাকী জানান, তার বাবা ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী কাঞ্চন দ্বিতীয় সংসদে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপির এমপি ছিলেন। গত বছর ৮ জুন তার কবরও খনন করেন মনু মিয়া। কিন্তু একটি টাকাও তিনি মনু মিয়াকে দিতে পারেননি। অনেকেই তাকে আবারও একটি ঘোড়া কিনে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মনু মিয়া কারও কাছ থেকেই সাহায্য নিতে রাজি হননি। ঘোড়াটি মেরে ফেলার জন্য কারও ওপর তিনি ক্ষোভও প্রকাশ করেননি। বরং বলেছেন, আমার কবর খননের পথ চলা হয়ত সৃষ্টিকর্তা এ পর্যন্তই লিখে রেখেছিলেন।

এলাকার গোরস্থানে তার দাফনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কবর কবর খনন কবর খ র খনন

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের ঘটনা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ের যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে, ভারত সেটি লক্ষ্য করেছে।” খবর বিবিসির।

আরো পড়ুন:

বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: সাভারে বিএনপির আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ

“একজন কাছের প্রতিবেশি হিসেবে, বাংলাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ভারত কাজ করবে। এ লক্ষ্য আমরা সবসময়, সব ধরনের অংশীদারের সঙ্গে কাজ করে যাব।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। 

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ