‘আল্লাহ নিশ্চয়ই তাঁকে স্বপ্নের ঘোড়া উপহার দেবেন’
Published: 28th, June 2025 GMT
তিন হাজারের বেশি গোরখোদক কিশোরগঞ্জের মনু মিয়া মারা গেছেন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুর খবর ফেসবুকে জানিয়েছেন অভিনেতা খায়রুল বাসার।
ফেসবুক পোস্টে বাসার লিখেছেন, ‘মনু কাকা শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। এত দিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। তিন দিন আগে উনি বাড়ি ফিরেছেন। বলছিলেন আগের চেয়ে বেশ সুস্থ আছেন। উনার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আল্লাহ কবুল করেছেন। সুস্থ থেকেই উনি আল্লাহর ডাকে ফিরতে চেয়েছিলেন, এই দোয়াও চাইতেন। হয়তো নিজ গ্রাম নিজের জন্মস্থান থেকেই আল্লাহ তাঁকে ডেকে নেবেন, এই চেয়েছেন আল্লাহ।’
বাসার আরও লেখেন, ‘তাঁর মহৎ কর্মের ফলস্বরূপ আল্লাহ নিশ্চয়ই উনাকে উনার স্বপ্নের ঘোড়া উপহার দেবেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুন। সবাই মনু কাকার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে শান্তিতে রাখুন। আমিন।’
কারও মৃত্যুসংবাদ কানে আসামাত্রই খুন্তি, কোদালসহ প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘোড়ায় করে ছুটে যেতেন কবরস্থানে। মানুষের অন্তিমযাত্রায় তিনি বাড়িয়ে দিতেন তাঁর আন্তরিক হাত। এভাবেই কবর খুঁড়েছেন ৫০ বছর ধরে। এ জন্য কখনো নেননি কোনো পারিশ্রমিক। কবর খুঁড়তে দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানিজমি বিক্রি করে কয়েক বছর আগে তিনি কিনেছিলেন একটি ঘোড়া। সম্প্রতি রোগে কাবু হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। তাঁর অনুপস্থিতিতে ঘোড়াটির মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। মনু মিয়াকে নিয়ে প্রথম আলোতে ‘৩ হাজারের বেশি কবর খোঁড়া মনু মিয়া হাসপাতালের শয্যায়, ঘোড়াটি মেরে ফেলল দুর্বৃত্তরা’ প্রতিবেদন দেখে অভিনেতা খায়রুল বাসার ছুটে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। ঘোড়া কিনে দিতে চাইলেও রাজি হননি মনু মিয়া।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ
নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।
আরো পড়ুন:
ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু
মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক
কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।
এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।