Samakal:
2025-11-17@13:23:43 GMT

‘রাজকন্যারে ফিরায়া দ্যাও’

Published: 28th, June 2025 GMT

‘রাজকন্যারে ফিরায়া দ্যাও’

মেয়েশিশুটি জন্ম নিয়েছিল বুধবার। ফুটফুটে শিশুটিকে দেখে বুক ভরে গিয়েছিল পরিবারের সদস্যদের। এর তিন দিনের মাথায়ই বুকফাটা আর্তনাদ করতে হচ্ছে তাদের। এক নারী তাদের বুকের ধন চুরি করে পালিয়েছেন। শনিবার সকালে শেরপুরের কালিরবাজার এলাকার বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে ঘটে এ ঘটনা। স্বজনেরা এ ঘটনার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। 

শিশুটির বাবা ফিরোজ মিয়া শেরপুর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চাপাতলি মহল্লায় বসবাস করেন। তাঁর ভাষ্য, সন্তান প্রসবের জন্য বুধবার স্ত্রী আবেদা বেগমকে নিয়ে যান কালিরবাজারের বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি করার পর সেদিন রাতেই সিজারের মাধ্যমে মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তিনতলার একটি কক্ষে আছেন তারা। 

ওই কক্ষে প্রসূতি ও নবজাতককে দেখভাল করছেন ফিরোজের মা ও এক আত্মীয়। তাদের সঙ্গে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয় পরিচয়ে এক অপরিচিত নারী শিশুটিকে দেখতে যান। এক পর্যায়ে সখ্য গড়ে তোলেন। বোরকা পরা থাকায় তাঁকে কেউ চিনতে পারেননি। শনিবার সকালে শিশুটির মা যান শৌচাগারে। অন্য স্বজনেরাও ছিলেন বাইরে। এই সুযোগে শিশুটিকে নিয়ে পালান ওই নারী। 

ফিরোজের অভিযোগ, হাসপাতালের সব কক্ষে সিসিটিভি থাকলেও তারা যে কক্ষে ছিলেন, সেখানে ছিল না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল নবজাতক ও মাকে রক্ষা করা। কেন তারা নিরাপত্তা দিতে পারল না? এ সময় পাশে কাঁদছিলেন আবেদা। ‘আমগোর রাজকন্যারে ফিরায়া দ্যাও, কুনখান থেইক্কা আইনা দিবা, জানি না। ওরে না পাইলে আমরা বাঁচতাম না।’ বলে সন্তানকে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানাচ্ছেন তিনি। 

ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিদারুল ইসলাম বলেন, শিশু চুরির ঘটনায় কারা জড়িত, তা জানতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান। এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন। 

শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। থানায় অভিযোগ হয়নি। তদন্ত চলছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ