ছোট্ট দেহের প্রায় সব হাড় দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে কঙ্কালের ওপর শুধু চামড়াটাই রয়ে গেছে। গাজায় খাদ্যাভাব কতটা তীব্র পর্যায়ে পৌঁছেছে, তার জ্বলন্ত প্রমাণ এই শিশুরা।

ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত অনাহার ও অপুষ্টিতে ফিলিস্তিনের গাজায় অন্তত ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। এ জন্য তারা ইসরায়েলের কঠোর অবরোধকে দায়ী করেছে।

গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে উপত্যকাটিতে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি খাবার, পানি ও ওষুধের মতো জীবনরক্ষাকারী ত্রাণের প্রবেশেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল শনিবার গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী অবরোধকে যুদ্ধাপরাধ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজার বেসামরিক মানুষকে নির্মূল করতে ইসরায়েল যে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, সেটা এখন দিবালোকের মতো সত্য।

গাজা উপত্যকায় চলমান পরিস্থিতিকে এ কার্যালয় ‘শৈশবের বিরুদ্ধে চলমান অপরাধ’ বলে বর্ণনা করে এর নিন্দা জানিয়েছে। পাশাপাশি ক্ষুধা, রোগ ও ধীরে ধীরে মৃত্যুর শিকার হওয়া শিশুদের দুর্দশা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের লজ্জাজনক নীরবতার তীব্র সমালোচনা করেছে তারা।

ইউনিসেফ বলেছে, এ সংখ্যা এপ্রিল মাসে ভর্তি হওয়া ৩ হাজার ৪৪৪ শিশুর তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি, আর ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় প্রায় ১৫০ শতাংশ বেশি। ফেব্রুয়ারিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল। যে কারণে সে সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ত্রাণসহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।

বিবৃতিতে কার্যালয় এ বিপর্যয়ের জন্য ইসরায়েল ও তাদের মিত্রদের দায়ী করেছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। পাশাপাশি জাতিসংঘকে অবিলম্বে গাজার সীমান্তপথগুলো খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গাজার ছোট্ট শিশু ফাদি আল-জান্তের অপুষ্টিতে ভোগার আগের ও পরের ছবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ