বগুড়ায় নিখোঁজের তিন দিন পর এক যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্টেশন বোট ক্লাবের লেক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

ওই যুবকের নাম হাসিন রাইহান ওরফে সৌমিক (৩০)। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার কোহিনূর গার্ডেনের বাসিন্দা তৌফিকুর রহমানের ছেলে। তাঁদের গ্রামের বাড়ি জেলার সোনাতলা উপজেলার আগুনাতাইড় গ্রামে।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে হাসিন রাইহান নিখোঁজ ছিলেন। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হাসিন রাইহান নিখোঁজের ঘটনায় গত শুক্রবার তাঁর বাবা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তাঁর সন্ধান চেয়ে থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছিল। আজ সকাল সোয়া ৯টার দিকে মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্টের বি-ব্লক এলাকার স্টেশন বোট ক্লাবের লেকে একটি লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে হাসিন রাইহানের স্বজনেরা লাশ দেখে পরিচয় নিশ্চিত করেন।

ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এখন পর্যন্ত হত্যার কোনো আলামতও মেলেনি।

হাসিনের মা আনজুমান আরা প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁর ছেলে। বগুড়ায় তাঁর তেমন কোনো বন্ধু নেই। স্মার্টফোন বা ফেসবুক আইডিও নেই। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটার দিকে হাঁটতে বের হন। এর পর থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর কাছে থাকা বাটন ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। আত্মীয়স্বজন, পরিচিতজনদের কাছে খোঁজ করেও না পাওয়ায় সদর থানায় জিডি করা হয়।

সদর থানার ওসি হাসান বাসির প্রথম আলোকে বলেন, হাসিনের নিখোঁজের ঘটনায় তাঁর বাবা থানায় জিডি করলে সন্ধান চেয়ে থানায় থানায় বার্তা পাঠানো হয়। তিন দিনের মাথায় তাঁর লাশ উদ্ধার হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ