শিশু শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে নির্যাতন: সেই শিক্ষক কারাগারে
Published: 29th, June 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জের একটি মাদরাসায় ৮ বছর বয়সী ছাত্রকে বস্তায় ভরে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার শিক্ষক হাফেজ মো. জাকারিয়া শেখকে (২৯) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (২৯ জুন) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন এ তথ্য জানান।
গতকাল শনিবার (২৮ জুন) রাতে নির্যাতিত ছাত্রের বাবা মো.
আরো পড়ুন:
বড়াল নদীতে ভাই-বোনের মৃত্যু
সাতক্ষীরায় শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
অভিযুক্ত জাকারিয়া শেখ কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে।
আরো পড়ুন: শিশু শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে রোদে ফেলে রাখলেন মাদ্রাসা শিক্ষক
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী গ্রামে অবস্থিত ‘নূরে মদিনা হাফেজিয়া মাদরাসা’। এই মাদরাসার নূরানী বিভাগে শিক্ষক জাকারিয়া শেখের অধীনে পড়ালেখা করতেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক নামে শিশু শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ছুটি চাওয়ায় শিক্ষক জাকারিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে শিশু আবু বক্করকে মারধর করেন। রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাকে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ঢুকিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রাতেই প্রায় ১৫০-২০০ জন স্থানীয় লোকজন মাদরাসা ঘেরাও করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার (২৮ জুন) তিনজন মাদরাসা ছাত্র নির্যাতিত শিশুকে ফেরত আনতে তার বাড়িতে যান। ভুক্তভোগীর মা ফরিদা বেগম ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়ে শিক্ষকের কাছে অনুরোধ করেন যেন আর নির্যাতন না করা হয়।
শিক্ষক সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে শিশুটিকে রবিবার (২৮ জুন) সকালে মাদরাসার ছাদে একটি বস্তায় ভোরে রোদের মধ্যে ফেলে রাখেন। মাদরাসার দুই ছাত্র হৃদয় (১৮) ও সাহাদ সাদ (১৭) আবু বক্করকে দেখতে চাইলে শিক্ষক তাদেরকেও বাধা দেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষক জাকারিয়া শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
ঢাকা/রফিক/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ বস ত য় ভ ম দর স
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।