ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতে প্রতারণার অভিযোগ অনেক বেড়েছে। স্থানীয় বা বিদেশি ব্যাংকের ক্ষেত্রে বৈদেশিক ফোনকল পদ্ধতিতে চলছে অবিরাম প্রতারণার প্রচেষ্টা। এমন ক্ষেত্রে মূল লক্ষ্য যে কোনো পন্থায় বা ছলে-বলে-কৌশলে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড জানা। লিখেছেন সাব্বিন হাসান
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওটিপি জেনে নিতে পারলেই হ্যাকার চক্র প্রবেশ করবে টার্গেটের ডিজিটাল সিস্টেমে। প্রথমেই বদলে নেওয়ার
চেষ্টা করবে পাসওয়ার্ড। কেননা এতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সহজ হয়।
সারাবিশ্বে অনলাইন প্রতারণায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতারক চক্র এখন ওটিপি ব্যবহার করে। আগের মতো পাসওয়ার্ড নেওয়ার কৌশল অনেকাংশে কমে গেছে।
এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জমা পড়া প্রতারণার অভিযোগের বিশ্লেষণ করে জানা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখন ওটিপি জেনে নিয়ে প্রতারণার কৌশল সাজানো হয়।
সাজানো ফাঁদে পড়ে অনেকের ব্যাংক থেকে অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে সেই অর্থ অন্য অ্যাকাউন্টে দ্রুত সরিয়ে নিয়েছে চত্রুটি। ঘটনা যখন এমন, তখন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক, পাসওয়ার্ড জানার বিষয়ে প্রতারকরা এখন কেন সরে গেছে। ভুক্তভোগীর পাসওয়ার্ড কি তবে আগেই জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেকে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এবং সব ধরনের পাসওয়ার্ডভিত্তিক অ্যাকাউন্ট যে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে পরিচালনা করা হয়, তা ফুটপ্রিন্টে ডিজিটাল মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থেকে যায়। ফলে নিজের পরিবর্তে প্রয়োজনে অন্য কোনো ল্যাপটপ ব্যবহার করে সেসব অ্যাকাউন্ট সক্রিয় করলেই তার মাধ্যমে পাসওয়ার্ড বেহাত (লিক) হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি এমন সাইট রয়েছে, যেখানে গিয়ে নিজের পাসওয়ার্ড অন্যের হাত চলে গেছে কিনা, তা যাচাই করা সম্ভব। অন্যদিকে, পাসওয়ার্ডটি অন্যখানে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, তাও জানা সম্ভব। সাধারণত যারা ইন্টারনেট ব্যাংকিং করেন, তারা এসব সাইটে প্রবেশ করে নিজেরাই ই-মেইল ও পাসওয়ার্ডের অপব্যবহারের প্রচেষ্টা শনাক্ত করতে পারবেন।
লক্ষ্য কেন ওটিপি!
গবেষকরা বলেছেন, প্রায় প্রতিটি অভিযোগ বিশ্লেষণে সামনে আসে ওটিপির মাধ্যমে অর্থ বেহাতের প্রচেষ্টা। এখন পাসওয়ার্ড থেকে অপরাধী চক্র অনেকটাই সরে গেছে।
কারণ, পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ গ্রাহক এখন কয়েকটি প্যাটার্ন পদ্ধতি অনুসরণ করেন। সহজে বললে, কেউ হুট করে নিজের পাসওয়ার্ড কাউকে জানায় না। যদি কোনো কারণে তা জানাতে হয়, তা হলে তাতে শব্দ ও সংখ্যার এমন মিল করে রাখা হয়, যা প্রতারক চক্র সহজে খুঁজে পায় না। তবে কোনো ডিজিটাল ব্যাংক লেনদেন করতে হলে পাসওয়ার্ড আর ওটিপি প্রয়োজন হয়। বর্তমানে পাসওয়ার্ড ঘিরে তুলনামূলক সচেতনতার কারণে সাইবার চক্র এ পদ্ধতি থেকে ক্রমান্বয়ে বিমুখ হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেক অপরাধীর কাছে টার্গেটের পাসওয়ার্ড আগে সংগৃহীত রয়েছে। তাই প্রয়োজন শুধু ওটিপি সংগ্রহ করা। অর্থ বাগানোর প্রচেষ্টায় রিয়েল টাইমের ওটিপি এখন লক্ষ্য। এই লক্ষ্য সাধারণত দুই ধরনের হয়। প্রথম দলে থাকেন তারা, যাদের অ্যাকাউন্টের খবর ইতোমধ্যে বেহাত হয়েছে।
দ্বিতীয় দলে রয়েছেন তারা, যাদের তথ্য এখনও সুরক্ষিত। যাদের তথ্য এখনও বেহাত হয়নি, কিন্তু সন্দেহের মধ্যে রয়েছেন, চাইলে তারা বিশেষ সাইটের মাধ্যমে নিজের ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড শনাক্ত করে নিতে পারবেন।
এ জন্য একটি ওয়েবসাইট রয়েছে। নিরাপত্তা যাচাইয়ে আগ্রহীরা (https://haveibeenpwned.
নিরাপত্তা গবেষকরা বলছেন, প্রায়ই ওয়াইফাই পরিষেবার মাধ্যমে অনেক তথ্য বেহাত হয়ে যায়। এতে গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য সহজে ও অনায়াসে পৌঁছে যায় প্রতারক চক্রের নাগালে। ফলে সাইবার চক্র এখন আর পাসওয়ার্ড নয়; শুধু প্রকৃত সময়ে ওটিপি জানার প্রচেষ্টায় একেবারে মরিয়া হয়ে কাজ করে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র প সওয় র ড অ য ক উন ট ব যবহ র লক ষ য হ ত হয় ধরন র বলছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রবি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার, যমুনা সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক
যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে হওয়া ব্লকেড ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ১ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে এ কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।
এর আগে, স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে যমুনা সেতু পশ্চিমে মহাসড়ক ব্লকেড করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন।
আরো পড়ুন:
দ্বিতীয় তিস্তা সেতু উদ্বোধনের নতুন তারিখ ঘোষণা
উদ্বোধনের আগেই ঝুঁকিতে পড়ছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু
এর আগে, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা ও উত্তরবঙ্গমুখী উভয় লেন বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচীর কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ব্লকেড প্রত্যাহারের পর ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী উভয় লেনে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। এতে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া জিহাদ বলেন, “১১টা ৫০ মিনিটে যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা বসে পড়েন। এতে উভয় লেনেই যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ১ ঘণ্টা মহাসড়কে বিক্ষোভ করার পরে সড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আজকে রেল ও সড়ক পথ অবরোধের কথা ছিল। কিন্তু বুধবার (১৩ আগস্ট) উল্লাপাড়ায় রেলপথ অবরোধের কারণে সিডিউল বিপর্যয় ঘটে। জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা রেলপথ ছেড়ে দিয়েছি। তবে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে বিক্ষোভ করার পর মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছি। শিগগিরই আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।”
প্রতিষ্ঠার ৯ বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের (ডিপিপি) অনুমোদন না হওয়ায় আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা কর্মসূচিতে মহাসড়ক অচল করে দেয় শিক্ষার্থীরা। তখন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এরপর ৬ মাসেও ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কটের মধ্য দিয়ে পূণরায় আন্দোলন শুরু হয়।
ঢাকা/রাসেল/মেহেদী