দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা পরিচয়ে ঘুষ চাওয়া নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের পর চার প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে সংস্থাটি।

তারা হলেন– মো. সেলিম, মো. তরিকুল ইসলাম, মো. আতিক ও মো. আব্দুল হাই সোহাগ। তবে চক্রের হোতা সোহাগ পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানান দুদকের কর্মকর্তারা।

গত শনিবার রাতে দুদক পরিচালক আবুল হাসনাতের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল পুলিশ, র্যা ব, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ঢাকার গ্রিন মডেল টাউন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সনি ডিজিটাল এইচডি ক্যামেরা, বুম, সেলফি স্টিক, দুটি পাসপোর্ট, বিভিন্ন পত্রিকার নামে আইডি কার্ড, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ভিজিটিং কার্ড, ব্যাংকের চেক বই, ছয়টি মোবাইল ফোন, ১৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।

হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে ‘দুদকের চায়ের বিল এক লাখ টাকা’ শিরোনামে পোস্ট দিয়েছিলেন। এটি নজরে আসার পর সাঁড়াশি অভিযান চালায় দুদক।

গতকাল ঢাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে চার প্রতারককে গ্রেপ্তারের কথা জানান মহাপরিচালক ও মুখপাত্র আক্তার হোসেন। এ সময় দুদক মহাপরিচালক আবদুল্লাহ-আল-জাহিদ, পরিচালক আবুল হাসনাত, জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধে রোববার রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মামলা করেছেন। ব্রিফিং শেষে চারজনকে রমনা থানায় হস্তান্তর করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর আবদ ল ল হ কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’

“আমি এতিম হয়ে গেলাম রে, আমার বাবা আর নেই, আমি এখন কী করবো ফুফু”- এভাবেই হাহাকার করছিলেন পাপিয়া আক্তার। বাবা হারানোর শোকে কণ্ঠ যেন পাথর ভেদ করা আর্তনাদ। পাশে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরা। সবাই জানে, এই কান্নার আর কোনো সান্ত্বনা নেই।

পাপিয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চালক পারভেজ খানের (৪৫) মেয়ে। তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন পারভেজ খান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আরো পড়ুন:

স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ 

শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ফলসাটিয়া বাজারের পাশে থেমে থাকা স্কুল বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন চালক পারভেজ খান। আগুনে বাসটি মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তিনদিন ধরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবন তাকে আর সময় দেয়নি।

নিহত পারভেজ খান সদর উপজেলার বারাইভিকড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার ঘরে রয়েছে স্ত্রী, এক স্কুলপড়ুয়া ছেলে এবং ছোট মেয়ে পাপিয়া আক্তার। 

স্ত্রী চোখে মুখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম। এখন সন্তানদের কীভাবে মানুষ করবো? কে চালাবে সংসার?”

স্থানীয়রা জানান, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারভেজের পরিবার যেন রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়, সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের ব্যয় চালাতে যেন সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে আসে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ