বছর তিন ধরে বিরতিতে আছে বিটিএস। বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণে যোগ দেন ব্যান্ডটির সাত সদস্য। প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন আরএম, জিন, জে-হোপ, জিমিন, ভি, জাংকুক ও সুগা। এবার ফেরার পালা। বিরতি ভেঙে ফিরতে মুখিয়ে আছেন বিটিএস তারকারা। অনুরাগীরাও অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছেন।
এবার লাইভ অ্যালবাম নিয়ে আসছে বিটিএস, এটিই ব্যান্ডটির প্রথম লাইভ অ্যালবাম। পারমিশন টু ড্যান্স অন স্টেজ-লাইভ শিরোনামে অ্যালবামটি প্রকাশিত হবে ১৮ জুলাই। গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে ব্যান্ডটির এজেন্সি বিগহিট মিউজিক।
অ্যালবামে ২০২১-২২ সালে ওয়ার্ল্ড ট্যুর ‘পারমিশন টু ড্যান্স অন স্টেজ’-এর ২২টি গান থাকছে। এতে ‘অন’, ‘ফায়ার’, ‘ডোপ’ ও ‘আইডল’-এর লাইভ ভার্সন থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে বিগহিট জানিয়েছে, ‘এ অ্যালবামের মাধ্যমে ভক্তরা কনসার্টের স্মৃতিগুলো আবারও অনুভব করতে পারবেন। আমরা চাই, বিটিএসের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আপনাদের হৃদয়ে দীর্ঘদিন অমলিন থাকুক।’
সিউল, লস অ্যাঞ্জেলেস ও লাস ভেগাসে কনসার্টটির ১২টি শোতে সরাসরি এবং অনলাইনে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৪০ লাখ ভক্ত। ‘পারমিশন টু ড্যান্স অন স্টেজ’ ট্যুরে প্রথম কোরিয়ান ব্যান্ড হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সোফাই স্টেডিয়াম (লস অ্যাঞ্জেলেস) ও অ্যালিজিয়েন্ট স্টেডিয়ামে (লাস ভেগাস) মঞ্চে গান করেছে বিটিএস।
বিটিএসের মূল প্রতিষ্ঠান হাইবের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বিটিএস মার্চে ফিরবে।’ বিদেশি দুটি সূত্রও বলেছে, নতুন বছরে পুরো দল নিয়ে কাজ শুরু করবে বিটিএস।
হাইব আগেই জানিয়েছে, সামরিক সেবা শেষে সদস্যদের প্রস্তুতি নিতে সময় লাগবে। তাই দ্রুত নয়, একটু সময় নিয়েই ফিরবে বিটিএস। বিটিএসের ম্যানেজমেন্ট সংস্থা বিগহিট বলছে, এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো তারিখ ঠিক হয়নি। হাইবের আরেক গ্রুপ ‘টুমরো টুগেদার’ও আগামী বছরের মার্চে ফিরবে। তবে বিটিএস, নাকি টুমরো টুগেদার—কোন ব্যান্ড আগে ফিরবে, তা এখনো জানা যায়নি। হাইবের আরেক গ্রুপ এনহাইপেন প্রথমে মার্চে ফেরার পরিকল্পনা করলেও বিটিএসের কারণে সেটা এগিয়ে জানুয়ারিতে নিয়ে এসেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’
“আমি এতিম হয়ে গেলাম রে, আমার বাবা আর নেই, আমি এখন কী করবো ফুফু”- এভাবেই হাহাকার করছিলেন পাপিয়া আক্তার। বাবা হারানোর শোকে কণ্ঠ যেন পাথর ভেদ করা আর্তনাদ। পাশে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরা। সবাই জানে, এই কান্নার আর কোনো সান্ত্বনা নেই।
পাপিয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চালক পারভেজ খানের (৪৫) মেয়ে। তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন পারভেজ খান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন:
স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ
শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ফলসাটিয়া বাজারের পাশে থেমে থাকা স্কুল বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন চালক পারভেজ খান। আগুনে বাসটি মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তিনদিন ধরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবন তাকে আর সময় দেয়নি।
নিহত পারভেজ খান সদর উপজেলার বারাইভিকড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার ঘরে রয়েছে স্ত্রী, এক স্কুলপড়ুয়া ছেলে এবং ছোট মেয়ে পাপিয়া আক্তার।
স্ত্রী চোখে মুখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম। এখন সন্তানদের কীভাবে মানুষ করবো? কে চালাবে সংসার?”
স্থানীয়রা জানান, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারভেজের পরিবার যেন রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়, সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের ব্যয় চালাতে যেন সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে আসে।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ঢাকা/মেহেদী