বিকাশে তাৎক্ষণিক রেমিট্যান্স পাঠিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে প্রবাসীরা
Published: 1st, July 2025 GMT
অনলাইনের একটা পেজে ১৮ কেজি ওজনের নদীর বোয়াল মাছ বিক্রির ভিডিও দেখেই ভাইকে বিকাশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে মাছটা বুকিং দেন জাপানপ্রবাসী সুমি। ছোটবেলায় বড় বোয়াল মাছ নিয়ে বাসায় আসতেন বাবা। সেই মাছ ঘিরে কত মধুর স্মৃতি। বাবাকে ‘সারপ্রাইজ’ দিতেই তাঁর পছন্দের বড় মাছ কিনে বাসায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। ক্যারিয়ারের প্রয়োজনে মা-বাবাকে রেখে দূর প্রবাসে বসবাস সুমির। স্থানের হিসাবে দূরত্ব থাকলেও মানসিকভাবে মা-বাবার সঙ্গেই যেন তাঁর বাস। আর বিকাশের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক রেমিট্যান্স পাঠিয়ে মাছ কেনার মুহূর্তটি তৈরি করতে পারা তাঁর বাড়তি পাওনা।
বাড়িতে ফোন দিয়ে খবর পান নববিবাহিত স্ত্রী কেনাকাটার জন্য মার্কেটে গেছে। স্ত্রীকে চমক দিতে তখনই তাঁর বিকাশে রেমিট্যান্স পাঠান ইতালিপ্রবাসী শাওন। সঙ্গে ছোট্ট একটা বার্তা– ‘জানি তুমি কেনাকাটা করছ। টাকা পাঠালাম। নীল রঙের একটা শাড়ি কিনে পরবে। আমার উপহার।’ স্বামীর এমন উপহারে চমকে যান লিজা। দূরে থাকার পর স্বামীর উপস্থিতি অনুভব করেন খুব কাছেই।
সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে রেখে সংসারের প্রয়োজনে বাহরাইনে পাড়ি জমিয়েছিলেন চাঁদপুরের বাসিন্দা রসুল মিয়া। ঘূর্ণিঝড়ের রাতে প্রসববেদনা উঠলে তাঁর স্ত্রী আকলিমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান আত্মীয়স্বজন। সন্তান ও মাকে বাঁচাতে মাঝ রাতেই অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তার। এমন গুরুত্বপূ্র্ণ সময়ে স্ত্রীর পাশে না থাকার মনোবেদনা ছিল পাহাড়সম। তবু অপারেশনের জন্য তাৎক্ষণিকই বিকাশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। সন্তানকে নিয়ে ঘরে ফেরেন তাঁর স্ত্রী।
প্রিয়জনের বিশেষ মুহূর্তগুলো হোক তা আনন্দের কিংবা সংকটের, সেই সময়ে পাশে থাকার চেষ্টায় প্রবাসীদের বড় বাধা দূরত্ব। প্রযুক্তির কল্যাণে কোটি প্রবাসী তাই প্রিয়জনের বিশেষ মুহূর্ত আরও অর্থবহ করে তুলতে বিকাশে রেমিট্যান্স পাঠান। সহজে মুহূর্তে বিকাশ অ্যাকাউন্টে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি প্রবাসীর সঙ্গে তাঁর পরিবারের বন্ধন আরও দৃঢ় করে।
বিদেশ থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেমিট্যান্স পাঠানো এবং তা তুলে ব্যবহার করা প্রবাসী এবং তাঁর প্রিয়জন উভয়ের জন্যই অনেক ক্ষেত্রে সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ে। এ কারণে যখন প্রয়োজন, সেই মুহূর্তেই বিকাশে রেমিট্যান্স পাঠাতে স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ছে প্রবাসীদের। এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৪০ লাখেরও বেশি প্রিয়জনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমানে বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে ১৩০টির বেশি মানি ট্রান্সফার অপারেটর হয়ে বাংলাদেশের ২৫টি ব্যাংকে সেটেলমেন্ট হয়ে বিকাশ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে নিমিষেই রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছেন প্রবাসীরা।
বিকাশের কর্মকর্তারা জানান, বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের ‘লাস্ট মাইল সল্যুশন্স প্রোভাইডার’ হিসেবে বিকাশে পাঠানো রেমিট্যান্স মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিয়ে দেশে থাকা পরিবার-প্রিয়জনদের জীবনমান বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। সহজে পাঠানোর সুযোগ হুন্ডিসহ অবৈধ পথে অর্থ পাঠানোকে নিরুৎসাহিত করছে। পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখছে। এদিকে বিকাশে আসা রেমিট্যান্স থেকে ‘বিকাশ’ করেই মোবাইল রিচার্জ, সেভিংস, কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, এনজির কিস্তি পরিশোধ, স্কুল-কলেজের ফি পরিশোধসহ অসংখ্য সেবা সহজেই নিতে পারছেন প্রিয়জনরা। এভাবেই জীবনকে এগিয়ে নেওয়া আর সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে বিকাশ পাশে আছে সব সময়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অ য ক উন ট প রব স র প র য়জন
এছাড়াও পড়ুন:
শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ
নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।
আরো পড়ুন:
ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু
মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক
কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।
এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।