চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত
Published: 2nd, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। এতে সই করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কর্মকর্তা জাকির হোসেন ২১ ও ২৮ জুন তারিখে কর্মস্থলে উপস্থিত হননি। অথচ এর আগে ১৮ জুন ২০২৫ তারিখে এনবিআরের এক আদেশে ২৮ জুনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সে নির্দেশ অমান্য করায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৮-এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সরকার পরিবর্তন, আন্দোলন, বিক্ষোভ, গণঅভ্যুত্থান, দুর্ভিক্ষ, করোনা মহামারিসহ সব সংকটে দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কোনোদিন বন্ধ হয়নি। তবে শনিবার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কমিশনার জাকির হোসেন কাস্টমস হাউসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঢাকায় এনবিআরের চলমান আন্দোলনে পাঠিয়ে দেন। তিনি নিজেও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সব কার্যক্রম বন্ধ করে ঢাকায় আন্দোলনে অংশ নেন বলে এনবিআর সূত্রে জানা যায়।
এনবিআরের সংস্কারের অংশ হিসেবে সংস্থাটিকে দুই ভাগ করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ গত দুই মাসব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রাখে। এই সময়ে তারা কলমবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি এমনকি শাটডাউনের মতো কর্মসূচিতে চলে যান। সর্বশেষ সরকার হার্ডলাইনে গেলে রোববার রাতে তারা সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
হাজারো বন্দীর মধ্যে শুধু পাঁচজনের মাথায় কেন ‘লাল টুপি’
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাড়ে পাঁচ হাজার বন্দী রয়েছেন। এঁদের মধ্যে হাজতিদের (যাঁদের মামলা বিচারাধীন) গায়ে থাকে সাধারণ পোশাক। আর কয়েদিদের (যাঁদের সাজা হয়েছে) পরনে থাকে বিশেষ পোশাক—সাদার ওপর ডোরাকাটা জামা, মাথায় সাদা টুপি। কিন্তু বন্দীদের মধ্যে পাঁচজন আলাদা। তাঁদের মাথায় সাদা নয়, আছে লাল টুপি। ওই পাঁচজন হলেন ফরহাদ হোসেন, মো. এমরান, ইকবাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও মো. আনোয়ার হোসেন।
কারাবিধি অনুযায়ী, যেসব বন্দী পালিয়ে গিয়ে ধরা পড়েন, তাঁদের মাথায় ‘লাল টুপি’ পরানো হয়। কারা সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৬ মার্চ ভোর সোয়া পাঁচটায় তৎকালীন কারারক্ষী নাজিম উদ্দিন কর্ণফুলী ভবনের বিশেষ ওয়ার্ডের (দুর্ধর্ষ বন্দীদের ওয়ার্ড) তালা খোলার পর কৌশলে পালিয়ে যান বন্দী ফরহাদ হোসেন। ওই দিন ট্রেনে প্রথমে ঢাকা, পরে নরসিংদীতে ফুফুর বাড়িতে চলে যান। ৯ মার্চ ভোরে নরসিংদী জেলায় ফুফুর বাড়ি থেকে জেলপালানো ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর কারাগারে আসার দিন থেকে ফরহাদের মাথায় ওঠে লাল টুপি। পরে এই মামলায় ফরহাদের এক বছরের সাজা হয়।
২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সদরঘাট থানার এসআরবি রেলগেট এলাকায় আবুল কালাম আবু নামের এক ভাঙারি ব্যবসায়ীর বুকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকালে কালাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। ওই ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি কারাগারে আসেন ফরহাদ। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।
চট্টগ্রাম কারাগার থেকে হাজিরা দিতে গিয়ে আদালতে পুলিশের হেফাজত থেকে গত ২৯ এপ্রিল এপ্রিল পালিয়ে যান লোহাগাড়া থানার হত্যা মামলার আসামি ইকবাল হোসেন ও সীতাকুণ্ড থানার মাদক মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন। অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পালানোর ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন। পালানোর সপ্তাহখানেক পর দুজনই গত ৭ মে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে এলে তাঁদেরও পরানো হয় লাল টুপি।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে কারাগার থেকে বন্দী পালানোর ঘটনা ‘আড়ালের’চেষ্টা২৬ মে ২০২৫চট্টগ্র্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার