মানুষ গত চারটি টার্ম গেল ভোট দিতে পারেনি। জনগণ তাদের অধিকার চায়, জনগণ তার ভোটাধিকার চায়, জনগণ তার গণতন্ত্র ফেরত চায়। সে জন্যই ছিল ১৭ বছরের আন্দোলন, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে বা আমাদের চৌধুরী আলম অথবা ইলিয়াস আলীরা হারিয়ে গেছেন শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না, দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফেরত দেওয়ার জন্য। সেই রক্তের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।

আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপির উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান।

জাহিদ হোসেন তাঁর বক্তব্য বলেন, ‘আজকে যারা বিএনপির সমালোচনা করেন তাঁদের বলব, সমালোচনা না করে ঐক্যবদ্ধ হোন। কারণ, ঐক্যবদ্ধ জাতি ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট তৈরি করতে পেরেছিল। যদি অনৈক্য হয়, তাহলে মনে রাখবেন ওই লুটেরার দল ওরা কিন্তু ভেগে গেছে মাত্র দুই-চার-দশজন। কিন্তু ওরা আপনার আশপাশেই আছে। কাজেই স্বৈরাচারের দোসরদের পথ বা ছিদ্রি দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আজকে যারা জাতীয় নির্বাচনকে দূরে ঠেলে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলেন, তাঁরা কিসের কথা বলেন। আপনি কি চান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতি হোক।’

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি ভবিষ্যৎমুখী রাজনৈতিক দল। আমাদের নেতা তারেক রহমান উনি কত সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান উনি ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ডালভাত কর্মসূচি দিয়েছিলেন। সর্বোপরি ভিশন ২০৩০। তারেক রহমান ওনাদের যোগ্য সন্তান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।’

সংস্কার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে সংস্কার নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলে। কেউ কেউ একটু বলার চেষ্টা করে। বিএনপি নাকি সংস্কারে বিশ্বাস করে না। আরে বাবারা যারা আপনারা কথা বলেন, আপনারা কি ভুলে গেছেন বিএনপি তো সেই দল, আপনারা যখন একদলীয় শাসনব্যবস্থায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফেরত দিয়েছিল। সেটি মনে থাকার কথা, শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে। যখন আপনারা চারটি পত্রিকায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি সংস্কারের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। যখন এই দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ছিল, এই বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তখন কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়ে সংস্কার করেছিল। ১৯৭৪–এর কালাকানুন কে সরিয়েছে, বিএনপির নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়া সরিয়েছেন।

জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘শহীদের এই জুলাই মাসে দাঁড়িয়ে অহেতুক অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না। ঐক্যবদ্ধ জাতি পারে বাংলাদেশকে আগামীর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে। অনৈক্য কোনো অবস্থাতেই আপনাকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেবে না। বরং বিশৃঙ্খলা উপহার দিতে পারে। কাজেই সবাইকে বলব, দায়িত্বশীল আচরণ করুন। কথাবার্তা বলার সময় আয়নায় চেহারা দেখুন। অতীত থেকে শিক্ষা নিন, ভবিষ্যৎমুখী রাজনীতি করেন এবং জাতীয়তাবাদী দলের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত। আগামী দিনে মানুষকে, জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।’

অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আকরাম হোসেন মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজা আহমেদ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদ খান, পৌর বিএনপির সভাপতি ফরিদ খান, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র ব এনপ র র জন য অন ষ ঠ রহম ন আপন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের

সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে কুমিল্লার সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ভোটকেন্দ্র পরিচালক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. তাহের বলেন, “আরপিও, সংস্কার কিংবা হ্যাঁ/না গণভোট—কোনো কিছুই এখন বিএনপি মানছে না। সরকার যদি তার নিরপেক্ষতা হারায়, তাহলে দেশের জনগণ তার প্রতি আস্থা হারাবে। তখন জনগণ আন্দোলনে নামবে।”

তিনি আরো বলেন, “জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে সরকার যদি অপকৌশল করে, তাহলে জনগণ আন্দোলনের প্রস্তুতি নেবে।”

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কুমিল্লা অঞ্চল টিম সদস্য ও সাবেক জেলা আমীর আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি মুফতি মাহবুবুর রহমান এবং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মজিবুর রহমান ভূঁইয়া।

উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি বেলাল হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম পৌর আমীর মাওলানা ইব্রাহীম, জামায়াত নেতা আয়ুব আলী ফরায়েজী, সাবেক উপজেলা দক্ষিণ আমীর শাহ মিজানুর রহমান, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রহিম এবং পৌর সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন ওপেল প্রমুখ।

ঢাকা/রুবেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
  • আন্তর্জাতিক সংকট যেভাবে স্বৈরশাসকদের শক্তিশালী করে
  • সরকার এখন প্রতারকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে: মান্না