কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব সোমবার রাতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলাটি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। এ জন্য সোমবার মামলার তদন্তভার গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাঁরা জড়িত এবং প্রকৃত অপরাধী, তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা শুরু থেকেই খেয়াল রাখছি, যেন কোনো নিরপরাধ মানুষ এখানে হয়রানির শিকার না হন।’

এর আগে মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিল মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজকেই আমাকে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তভার পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। হত্যাকাণ্ডের স্থান ছাড়াও পুরো এলাকাটি ঘুরে দেখেছি। এখনো বেশির ভাগ বাড়ি জনশূন্য। বিশেষ করে পুরো গ্রামই পুরুষশূন্য বলা যায়।’

গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে–ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)।

হত্যার ঘটনায় শুক্রবার রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। এরই মধ্যে এ মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। সোমবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মমিনুল হকের আদালতে এই আবেদন করা হয়। বুধবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো.

সাদেকুর রহমান।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ