চাঁদাবাজদের কাছে দেশ ছেড়ে দেবে না জামায়াত: রফিকুল ইসলাম খান
Published: 12th, July 2025 GMT
পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে পাথরে মেরে হত্যা, দেশজুড়ে খুন, চাঁদাবাজি এবং ধর্ষণের প্রতিবাদে শনিবার রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং উত্তর শাখা।
বায়তুল মোকাররমে উত্তর গেটে দক্ষিণ জামায়াতের সমাবেশ দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের কাছে দেশ ছেড়ে দেওয়া হবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, খুনি, ধর্ষক, লুটেরা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের প্রতিহত করবে জামায়াত।’
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষ ভেবেছিল, সন্ত্রাসীদের হাতে আর কাউকে জীবন দিতে হবে না, কাউকে চাঁদা দিতে হবে না। কিন্তু দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের মতই আরেকটি দল সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি শুরু করেছে। নিজেরাই নিজেদের দলীয় নেতাকর্মীদের নৃশংসভাবে খুন করছে। তারা প্রতিদিন নির্বাচন চাইলেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না। কারণ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ধর্ষক, খুনি তাদেরই পালিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির সঙ্গে তামাশা করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়নি। জনগণের জানমাল, ইজ্জত রক্ষা করতে না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দিক। থানা থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নৈতিক দায়িত্ব ছিল পদত্যাগ করা।’
মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন সেক্রেটারি ড.
বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মগবাজার মোড়ে সমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াত। এতে মহানগর সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম বিএনপির ইঙ্গিত করে বলেন, যারা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তাদেরকে আগামী নির্বাচনে জনগণ প্রত্যাখান করবে। আবু সাঈদ-মুগ্ধের দেশে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলদার, হেলমেট বাহিনী, রড বাহিনী ও পাথর বাহিনীর স্থান নেই।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- মহানগরের উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম সম ব শ ম ছ ল সম ব শ ব এনপ ক ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন করতে দেব না: হেফাজত
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের আঞ্চলিক কার্যালয় ঢাকায় স্থাপনের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে হেফাজতে বাংলাদেশের নেতারা বলেছেন, “এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে স্পষ্ট হুমকি। আমরা এই মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় স্থাপন করতে দেব না।”
সরকার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন নেতারা।
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের প্রতিবাদে শুক্রবার (১১ জুলাই) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।
আরো পড়ুন:
সমকামীকে দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত রিভিউ দাবি
ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে ইসলামপন্থিরাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে: রেজাউল করীম
সভায় সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি আল্লামা মাওলানা মামুনুল হক।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, “জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের পরিবর্তে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা জনআকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী ও স্বাধীনতার মৌলিক চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। গত ১৬ বছরে ঘটে যাওয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও খুনের বিচার নিশ্চিত না করে এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য দরজা খুলে দেওয়া মানে অপরাধীদের দায়মুক্তি ও জনগণের প্রতি অবিচার।”
“ড. ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা স্পষ্ট করে বলি—আমরা আপনাদেরকে সহযোগিতা করেছি দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে। শহীদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত এই সরকারকে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি। জাতিসংঘের তথাকথিত মানবাধিকার বাস্তবে ইসলাম ও মানবতার পরিপন্থী পশ্চিমা আদর্শের হাতিয়ার। খাল কেটে কুমির আনার অধিকার সরকারকে কেউ দেয়নি। আমরা এই মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় স্থাপন করতে দিব না।”
তিনি বলেন, “আজ আমরা শুধু প্রাথমিক প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে না আসে, তাহলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সারা দেশে তীব্র আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।”
তিনি বলেন, “হেফাজতের দৃষ্টিতে জাতিসংঘ বা কোনো বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে মানবাধিকার ইস্যুতে হস্তক্ষেপ দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। এ ধরনের কার্যালয় স্থাপন সরকারের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতার প্রতিফলন। দেশিয় ইসলামী মূল্যবোধ, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি দীর্ঘমেয়াদে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা জালালুদ্দীন, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমী, মাওলানা আজহারুল ইসলাম, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মুফতী শরীফুল্লাহ, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা ইমরানুল বারী সিরাজী, মাওলানা জোবায়ের রশীদ, মাওলানা এহতেশামুল হক সাকী প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে চারটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো
১. ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেশের স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে দিতে হবে।
৩. বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম-খুনের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
নেতারা বলেন, “বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।এর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। ঈমানি দায়িত্ব ও জাতীয় কর্তব্য থেকে হেফাজতে ইসলাম এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলবে, প্রয়োজনে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দেবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি