পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে পাথরে মেরে হত্যা, দেশজুড়ে খুন, চাঁদাবাজি এবং ধর্ষণের প্রতিবাদে শনিবার রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং উত্তর শাখা। 

বায়তুল মোকাররমে উত্তর গেটে দক্ষিণ জামায়াতের সমাবেশ দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের কাছে দেশ ছেড়ে দেওয়া হবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, খুনি, ধর্ষক, লুটেরা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের প্রতিহত করবে জামায়াত।’ 

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষ ভেবেছিল, সন্ত্রাসীদের হাতে আর কাউকে জীবন দিতে হবে না, কাউকে চাঁদা দিতে হবে না। কিন্তু দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের মতই আরেকটি দল সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি শুরু করেছে। নিজেরাই নিজেদের দলীয় নেতাকর্মীদের নৃশংসভাবে খুন করছে। তারা প্রতিদিন নির্বাচন চাইলেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না। কারণ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ধর্ষক, খুনি তাদেরই পালিত।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘জাতির সঙ্গে তামাশা করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়নি। জনগণের জানমাল, ইজ্জত রক্ষা করতে না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দিক। থানা থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নৈতিক দায়িত্ব ছিল পদত্যাগ করা।’

মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন সেক্রেটারি ড.

শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ মহানগরের নেতারা। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল উত্তর গেট থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে শাহবাগ গিয়ে শেষ হয়।  

বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মগবাজার মোড়ে সমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াত। এতে মহানগর সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম বিএনপির ইঙ্গিত করে বলেন, যারা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তাদেরকে আগামী নির্বাচনে জনগণ প্রত্যাখান করবে। আবু সাঈদ-মুগ্ধের দেশে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলদার, হেলমেট বাহিনী, রড বাহিনী ও পাথর বাহিনীর স্থান নেই। 

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- মহানগরের উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম সম ব শ ম ছ ল সম ব শ ব এনপ ক ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।

ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”

দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”

নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”

রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী