সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ফুটবলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশের লিগে খেলা ফুটবলারদের মেলা বসেছে। বিশেষ করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরীকে দিয়ে উত্তেজনা রীতিমতো চূড়া স্পর্শ করেছে। জামাল ভূঁইয়াকে দিয়ে ২০১৩ সালে শুরু হয়েছিল প্রবাসী ফুটবলারদের জাতীয় দলে ভেড়ানোর যাত্রা, হামজা যোগ দেওয়ার পর এ সময়ে নতুন মাত্রা পেয়েছে।

জামাল ভূঁইয়া ছাড়াও এর মধ্যে প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন তারিক কাজী, শমিত সোম এবং ফাহামিদুল ইসলাম। এবার আলোচনায় উঠে এসেছেন আরও এক ফুটবলার। তাঁর নাম ফারহান আলী ওয়াহিদ।

এত দিন ফুলহামের বয়সভিত্তিক দলে খেলা ফারহান গতকাল ক্লাবটির সঙ্গে ক্যারিয়ারের প্রথম পেশাদার চুক্তি সম্পন্ন করেন। চুক্তি স্বাক্ষরের ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্টও করেছেন ফারহান। এর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের আলোচনার কেন্দ্রে এই উইঙ্গার।

আরও পড়ুনহামজা-শমিত হওয়ার স্বপ্নে ট্রায়ালে ৪৯ প্রবাসী ফুটবলার২৮ জুন ২০২৫

লেফট উইংয়ে খেলা ফারহানের জন্ম ইংল্যান্ড। তাঁর মা–বাবা দুজনেই বাংলাদেশি হলেও তাঁদের জন্মও ইংল্যান্ডে। ফুটবলে ফারহানের যাত্রা শুরু হয় চেলসিতে। ২০১৯ সালে চেলসি অনূর্ধ্ব–১২ দল ছেড়ে যোগ দেন ফুলহামে। এরপর খেলেছেন ফুলহামের অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-২১ দলে। গত মৌসুমে চোটে ভুগলেও ফুলহাম অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে ২০ ম্যাচে ৭ গোল এবং ৪টি গোল বানান।

গত মৌসুমে ফুলহাম অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে অভিষেক হয় ফারহানের। যেখানে প্রিমিয়ার লিগ ইন্টারন্যাশনাল কাপে পিএসভির বিপক্ষে ৪-৪ গোলে ড্রয়ের ম্যাচে বদলি নেমে গোলও করেন। এই পারফরম্যান্সই মূলত ফুলহামের সঙ্গে ফারহানের পেশাদার চুক্তির দুয়ার খুলে দেয়।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ফুলহামের সঙ্গে পেশাদার চুক্তি সই করে ফারহান বলেন, ‘এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ফুটবল খেলতে শুরু করার পর থেকেই আমি এই মুহূর্তের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আর এখন আমি এই পর্যায়ে আছি, অনুভূতিটা অসাধারণ।’

আরও পড়ুনশমিত এখন বাংলাদেশের, জুনে খেলবেন হামজার সঙ্গে০৬ মে ২০২৫

এ সময় ফারহান আরও যোগ করে বলেছেন, ‘আমি ফুলহামে যোগ দিই অনূর্ধ্ব-১৩ পর্যায়ে। আর এটা রোলারকোস্টারের মতো একটা যাত্রা ছিল। এখানে পুরো পথচলাটা আমি দারুণভাবে উপভোগ করেছি। বয়সভিত্তিক প্রতিটি ধাপে আমার পাশে ভালো এক দল সতীর্থ ছিল, যারা আমাকে শুরু থেকেই আপন করে নিয়েছে। আমার পরিবার সব সময় আমার স্বপ্নপূরণে পাশে থেকেছে। আর এ জন্য তাঁদের অনেক ত্যাগও স্বীকার করেছে। তারা সব সময় আমাকে পরামর্শ দিয়ে বলেছে পা যেন মাটিতে থাকে।’

মা–বাবার কারণে সামনের দিনগুলোয় নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের আলোচনায় থাকবেন ফারহান। তবে ফারহান শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। শুরুতে নিশ্চয়ই ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলে নিজের অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টা করবেন তিনি। ২০২০ সালে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব–১৫ দলে ডাক পেলেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। ক্যারিয়ার এগিয়ে চলার সঙ্গে ফারহান নিশ্চয়ই পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন র ধ ব ফ লহ ম র ফ রহ ন র ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়

এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।

তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।

পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।

এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।

আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।

এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ