গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচি ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন আরও একটি মামলা হয়েছে। কাশিয়ানীর রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় করা এই মামলায় ৩৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন মামলার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানো ও হত্যার ঘটনায় মোট ১১টি‌ মামলা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করা হয়। ১১টি মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৯ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সবশেষ কাশিয়ানী থানায় বৃহস্পতিবার রাতে করা মামলায় কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম ও কাশিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীসহ (খোকন) ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ নেতা–কর্মীকে। এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় এটি দ্বিতীয় মামলা।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’৪ ঘণ্টা আগে

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আসামিরা কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাট, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করে যানবাহন চলাচল ব্যাহত করে।  কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করতে থাকে। আসামীরা অসৎ উদ্দেশ্যে এবং এনসিপির পথসভা নসাৎ করার লক্ষ্যে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরুদ্ধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তি মহাসড়কের ক্ষতি সাধন করার উদ্দেশ্যে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় আরও ২ মামলা, আসামি ১৪৪২২৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করলেন দুই উপদেষ্টা২২ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ র ঘটন য় আওয় ম এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ