রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের সময় গুরুতর দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশু মাহতাব রহমান ভূঁইয়ার (১৪) কবর জিয়ারত এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে বিমানবাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল। কুমিল্লার দেবীদ্বারে এসে প্রতিনিধি দলটি মাহতাবের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তার শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে উইং কমান্ডার মো.

আতিক হাসানের নেতৃত্বে বিমানবাহিনীর প্রধানের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিদলটি নিহত মাহতাবের গ্রামের বাড়ি দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ ভূঁইয়া বাড়িতে আসে। এ সময় তারা নিহত মাহতাবের কবরে গার্ড অব অনার প্রদান এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। মাহতাবের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করে তারা। মাহতাবের বাবা মো. মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে বিমানবাহিনীর প্রধানের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা মিনহাজুর রহমানকে বুকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দেন।

কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রতিনিধিদলের প্রধান উইং কমান্ডার মো. আতিক হাসান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধানের প্রতিনিধি হিসেবে মাহতাব রহমান ভূঁইয়ার কবর জিয়ারতে এসেছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী এ দুর্ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। আমরা নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতায় দোয়া প্রার্থনা করছি। এটি একটি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি। দুর্ঘটনার তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষ হলে আইএসপিআর সবকিছু ব্যাখ্যা করবে।’

মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বিমানবাহিনীর প্রধানের প্রতিনিধিদল এসে আমাদের খোঁজখবর নিয়েছে। আমার সন্তানের কবর জিয়ারত করেছে এবং সম্মান জানিয়েছে। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু ছেলেটা আর নেই, এটা ভাবতেই পাগল হয়ে যাচ্ছি। মহান আল্লাহ যেন আমার সন্তানকে বেহেশত নসিব করে, সবার কাছে সেই দোয়া চাই।’

গত বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৫২ মিনিটে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাহতাব রহমান ভূঁইয়া মারা যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাহতাবের শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

মাহতাব রহমান ভূঁইয়া দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ ভূঁইয়া বাড়ির মো. মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়ার একমাত্র ছেলে। মাহতাব উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে মা–বাবার সঙ্গে থাকত। তার দুই বোন রয়েছে। মাহতাব মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংলিশ ভার্সনের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া গ্রেটওয়াল সিরামিকে এজিএম হিসেবে কর্মরত।

২১ জুলাই ছুটির আগমুহূর্তে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হতাহত হন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ইলস ট ন ম হত ব র র কবর

এছাড়াও পড়ুন:

হামফ্রে ফেলোশিপ–ডাড স্কলারশিপ–আইডিবির প্রশিক্ষণ, আবেদন শেষ ৩১ জুলাই

আমেরিকা হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, জার্মান সরকারের ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বাংলাদেশ ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশন ওয়াক্ফ আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ে আবেদন চলছে। তিনটির আবেদনের সুযোগ আছে আর দুদিন। আগামীকাল ৩১ জুলাই শেষ হবে হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের। আবেদনের পদ্ধতিসহ জেনে নিন এসব বৃত্তি ও ফেলোশিপের বিস্তারিত তথ্য।

১. হামফ্রে ফেলোশিপ: মাসিক ভাতাসহ ১০ মাস আমেরিকায় পড়াশোনার সুযোগ

১০ মাসের হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপে বেসরকারি সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতে পেশাজীবীরা আবেদন করতে পারবেন।

ফেলোশিপের সুযোগ-সুবিধা—

নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ টিউশন ফি দেওয়া হবে;

প্রয়োজন হলে প্রাক্‌-একাডেমিক ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে;

জীবনযাত্রার ব্যয় ভাতা;

এককালীন সেটলিং ভাতা;

দুর্ঘটনা ও অসুস্থতাজনিত ব্যয় ভাতা;

বই কেনার খরচ;

কম্পিউটার কেনার জন্য এককালীন ভাতা;

বিমান ভ্রমণ ভাতা (প্রোগ্রামের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ইভেন্টে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ;

ফেলোশিপের জন্য প্রয়োজনীয় পেশাদার উন্নয়ন ভাতা যেমন ফিল্ড ট্রিপ, পেশাদার পরিদর্শন ও সম্মেলন।

আরও পড়ুনএসএসসি উত্তীর্ণদের শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, মাসে আড়াই হাজার টাকা, মিলবে ২ বছর১৩ জুলাই ২০২৫আবেদনকারীর যোগ্যতা—

আবেদনকারীকে অবশ্যই তরুণ ও মধ্য পর্যায়ের নেতৃত্বশীল পদে থাকা পেশাজীবী হতে হবে, যার জনসেবায় দৃষ্টান্তমূলক কাজ ও পেশাগত জীবনে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, এমন কেউ আবেদন করতে পারবেন না

পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে চার বছরের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করার সনদ থাকতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ বছর পূর্ণকালীন কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (২০২৫ সালের আগস্টের আগে) এবং তাঁদের শিক্ষা ও কাজসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতিগত দিকগুলোয় আগ্রহ থাকতে হবে

শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা একাডেমিক গবেষক এই ফেলোশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না। তাঁদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবেন যদি কেউ বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখানোর দায়িত্ব পালন করেন)।

২০২৬ সালের আগস্টের আগে সাত বছরের মধ্যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্নাতক স্কুলে এক শিক্ষাবর্ষ বা তার বেশি সময়ের জন্য লেখাপড়ায় অংশ নিয়ে থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য অযোগ্য হবেন।

২০২৬ সালের আগস্টের আগে পাঁচ বছরের মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য যোগ্য হবেন না।

ইংরেজি লেখা ও কথা বলা উভয় ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে এবং টোয়েফল স্কোর (ইন্টারনেটভিত্তিক) হতে হবে। প্রার্থীদের যাঁদের টোয়েফল স্কোরের বৈধ মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাঁদের নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষে টোয়েফল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। (আমেরিকান সেন্টার কেবল নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য টোয়েফল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে।)

আবেদনকারীকে অবশ্যই ফেলোশিপের জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও প্রতিশ্রুতি দেখানোর পাশাপাশি এ কথাও জানাতে হবে যে তিনি কীভাবে এই ফেলোশিপ থেকে উপকৃত হবেন, যা তিনি আগে কখনো হননি এবং হামফ্রে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাড়া এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তাঁর নেই।

ফেলোশিপ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে।

ফাইল ছবি প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ