চট্টগ্রামে এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে এডিস মশার লার্ভা
Published: 28th, July 2025 GMT
চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। এ কারণে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বেড়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার ঘরে ঘরে চিকুনগুনিয়া ডেঙ্গুর চেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মশা নিধনে কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় এ রোগের বিস্তার বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মশার বিস্তার ও মশাবাহিত রোগের ওপর সবশেষ গবেষণাটি করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। চলতি জুলাই মাসে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে এডিস মশাবাহী রোগের জন্য চট্টগ্রাম নগরকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের এক জরিপ পরিচালনা করে। তুলনামূলক চিত্রে দেখা যায়, এবার এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটোই বেড়েছে।
চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ২০২৪ সালে ৩৬ শতাংশ ছিল। এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় লার্ভার ঘনত্ব পাওয়া গেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান হচ্ছে ২০ শতাংশ। এর বেশি হলে তাকে মশাবাহিত রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। এবার সর্বোচ্চ ১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে নগরের আগ্রাবাদে। কিন্তু গত বছর সর্বোচ্চ ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ৮০ শতাংশ পর্যন্ত এবং তা বহদ্দারহাটে।
এবার বাসাবাড়িতে মশার লার্ভার উপস্থিতিও বেড়েছে। ২০২৪ সালে জরিপে ২০০টি বাড়ির মধ্যে ৭৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছিল, যা ৩৭ শতাংশ। এবার ১২৮টি বাড়ির মধ্যে ৬২টিতে লার্ভা পাওয়া গেছে, যা ৪৮ শতাংশের বেশি।
এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটোই হচ্ছে। জুন-জুলাই থেকে রোগী বেড়েছে।অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বিভাগীয় প্রধান (মেডিসিন), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আইইডিসিআরের গবেষণায় মশার বিস্তার ও লার্ভা বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা গেছে। সে অনুযায়ী তারা বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। আমরা এ সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা পর্যায়ে পাঠিয়েছি। সে অনুযায়ী কাজ চলছে।’
মশার বিস্তারের কারণে এবার ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুই ধরনের রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া এরই মধ্যে তিনজনের জিকাও শনাক্ত হয়েছে। গতকাল রোববার পর্যন্ত চলতি বছরে ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত করা গেছে। ডেঙ্গুতে মারা গেছেন অন্তত আটজন। এর মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন চলতি জুলাই মাসে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবদুস সাত্তার বলেন, এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া দুটোই হচ্ছে। জুন-জুলাই থেকে রোগী বেড়েছে।
চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ২০২৪ সালে ৩৬ শতাংশ ছিল। এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় লার্ভার ঘনত্ব পাওয়া গেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান হচ্ছে ২০ শতাংশ। এর বেশি হলে তাকে মশাবাহিত রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। এবার সর্বোচ্চ ১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে নগরের আগ্রাবাদে। কিন্তু গত বছর সর্বোচ্চ ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ৮০ শতাংশ পর্যন্ত এবং তা বহদ্দারহাটে।চিকিৎসকেরা এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য মশা নিধনের ওপর জোর দেন। এ জন্য করপোরেশনের মতো সংস্থার পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়েও সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
আইইডিসিআরের জরিপে এবার তিনটি সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে মশা নিধন অন্যতম। এর আগের বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জরিপে আটটি সুপারিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সকাল ও বিকেলে দিনে দুবার করে ফগিং করার সুপারিশ ছিল। সুপারিশ অনুযায়ী মশকনিধন চলছে বলে দাবি করেছেন সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি হটস্পট ধরে করা হচ্ছে। নতুন জরিপ অনুযায়ী তা করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল র ভ র ঘনত ব ইনড ক স অন য য় র জন য র শ কর বছর স
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ