ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশাচালকদের ধর্মঘট, সড়ক অবরোধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
Published: 28th, July 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন দফা দাবিতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকেরা দুই দিন ধরে ধর্মঘট পালন করছেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা চট্টগ্রাম-কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেন। এতে উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অবরোধের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলি পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়েন বিপাকে। দুপুর ১২টার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুরোধে আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন। এরপরও যানজট লেগে ছিল বেলা একটা পর্যন্ত। এরপর ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।
জেলার সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক পরিবহন সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে গতকাল রোববার ভোরে শুরু হয় এ ধর্মঘট। তাদের তিন দফা দাবি হলো জেলা পুলিশ লাইনে আটক শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিনা শর্তে ছেড়ে দিতে হবে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছাড়া জেলার সব এলাকায় অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দিতে হবে, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করতে।
জেলায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা রয়েছে। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নন্দনপুর বাজার, কুট্টাপাড়া মোড়, শহরের বিভিন্ন এলাকা, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কসহ কোথাও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেখা যায়নি। সিএনজিচালকেরা বিভিন্ন এলাকায় পিকেটিং করেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল শিশু-কিশোররাও। তাঁরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেন, যাত্রী নামিয়ে দেন, এমনকি টায়ারের হাওয়াও ছেড়ে দেন।
নন্দনপুর বাজার এলাকায় সকাল থেকে কয়েক শ সিএনজিচালক ও তাঁদের লোকজন সমাবেশ করেন। তাঁরা মাইকিং করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মীর আনোয়ার হোসেনের অপসারণেরও দাবি জানান।
অবরোধে দুর্ভোগে পড়া মানুষদের মধ্যে একজন বিজয়নগরের দৌলত খাঁ (৪৫)। তিনি অসুস্থ বৃদ্ধা মা শাহেদা বেগমকে (৬৫) নিয়ে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে যাচ্ছিলেন। সকাল থেকে বিভিন্ন যানবাহনে করে তিন ঘণ্টায় তাঁরা নন্দনপুরে পৌঁছান। দৌলত বলেন, ‘আমার মা হাঁটতে পারেন না, দাঁড়াতেও পারেন না। অথচ তাঁকে হেঁটে যেতে হচ্ছে। একটু সাহায্য করেন ভাই, মায়ের জন্য একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে দিন।’
একইভাবে দুর্ভোগে পড়েন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী জজ মিয়া (৭০)। তিনি ছোট এক ছেলেকে নিয়ে পানিশ্বর ইউনিয়নের বেড়তলা থেকে জেলা সদর হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। ৩০ মিনিটের পথ দুই ঘণ্টায় পার করে অবরোধে আটকে যান।
জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ দুপুরের পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আমাদের সঙ্গে সভা হবে। যদি দাবি মানা হয়, তবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করব। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন বলেন, তাঁদের দাবির বিষয়ে আলোচনা চলছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় এল ক য় অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা মূল্যে হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস শনাক্তকরণ কর্মসুচি
ছবি: সংগৃহীত