মৃত্যুর তালিকায় শিশু ওমাইর নিজ নামে ও ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে দুবার ছিল
Published: 28th, July 2025 GMT
মারাত্মকভাবে দগ্ধ হওয়া শিশু ওমাইর নূর আসফিককে মোট তিনবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রথমবার হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর পরিবারটি দ্বিতীয় আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে যায় পরীক্ষা করার জন্য। দ্বিতীয় হাসপাতাল থেকে মৃত ঘোষণা করার পর কাফনের কাপড় পরিয়ে ওমাইরের মরদেহ হস্তান্তর করে পরিবারের কাছে। বাসায় আনার পর লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে ওমাইরের মুখে ফেনা দেখে বেঁচে আছে মনে করে আবার প্রথম হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানে তৃতীয় দফায় মৃত ঘোষণা করা হয় ওমারইকে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ক্লাউড (মেঘ) শাখার ছাত্র ছিল ওমাইর। ইমরান হাসান ও মা মাহমুদা হাসানের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছিল সে।
২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি দোতলা ভবনে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ওমাইরের নাম একবার ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে ও একবার তার নিজের নামে মোট দুইবার মৃতদের তালিকাভুক্ত হয়েছিল বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) আবু হোসেন মো.
গতকাল রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওমাইরকে ‘অজ্ঞাতনামা’ মৃত হিসেবে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে মৃতের তালিকা সংশোধন করেছে। ফলে গতকাল মৃতের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে একজন কমে ৩৩ জনে দাঁড়ায়। তবে রোববার দিবাগত রাত পৌনে দুইটায় মাইলস্টোনের আরেক শিক্ষার্থী শাহীদ ফারাবী আয়ান (১৪) চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা গেলে মৃতের সংখ্যা আবার বেড়ে হয় ৩৪ জন।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার পর থেকে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনা, গুজব শুরু হয়। গণমাধ্যম মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখাচ্ছে এমন দাবি করে স্কুল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে আবার মৃতের সংখ্যায় কিছুটা হেরফের ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আন্তঃবাহিনী সংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) দেওয়া তথ্যে। ফলে গণমাধ্যম দুটো তথ্যই উপস্থাপন করে। তবে গত বৃহস্পতিবার ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ৫টি অশনাক্ত মরদেহ হস্তান্তরের আগপর্যন্ত নিখোঁজ শিশু ও অভিভাবকের পরিবারদের প্রিয়জনের খোঁজে স্কুলে এসে আহাজারি করতে দেখা গেছে। গতকাল রোববার স্কুলে গিয়ে নিখোঁজ দাবি নিয়ে কাউকে আসতে দেখা যায়নি।
কাফনের কাপড় পরানো ওমাইরকে নেওয়া হয় হাসপাতালেওমাইরকে বেশির ভাগ সময় স্কুল থেকে আনা–নেওয়া করতেন ছোট চাচা মাদ্রাসাশিক্ষক শফিকুল ইসলাম। সেদিন ঘটনা শোনার পরপরই তিনি স্কুলে ছুটে যান।
শফিকুল ইসলাম আজ সোমবার প্রথম আলোকে জানান, সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিজস্ব গাড়িতে ওমাইর ও তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। ওমাইরকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে। সেখানে ওমাইরকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
শফিকুল বলেন, ওখান থেকে সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে যান। ওমাইরের নাম হাসপাতালে তালিকাভুক্ত হয়নি। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে ওমাইরকে নেওয়ার অনুরোধ করেন। ওই হাসপাতালে পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা ওমাইরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে পুড়ে যাওয়া পোশাক পাল্টে ওমাইরকে কাফনের কাপড় পরিয়ে দেয়। লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে ওমাইরকে বাসায় আনা হয়। ফ্রিজিং গাড়িতে ওমাইরের মুখে ফেনা দেখে পরিবারের সদস্যরা বেঁচে আছে এই আশা নিয়ে আবার ছোটেন লুবানা হাসপাতালে। শফিকুল বলেন, বিকেল ৫টার পরে কাফনের কাপড় জড়ানো ওমারইকে নিয়ে তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছান। সেখানে চিকিৎসক জানান, ওমাইর আগেই মারা গেছে।
ওমাইরকে দাফন করা হয়েছে স্কুলের পাশে তারারটেক মসজিদ এলাকায় পৈতৃক বাসার কাছে পারিবারিক কবরস্থানে। ওই পরিবারের আরও দুটো শিশুর মৃত্যু হয়েছে একই ঘটনায়। বাকি দুই শিশু হচ্ছে বোরহান উদ্দিন বাপ্পি ও মাহিদ হাসান আরিয়ান। তিন শিশুকে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে। ওমাইর ও বাপ্পি সম্পর্কে চাচাতো ভাই। তারা একই শ্রেণিতে একই শাখায় পড়ত। আরেক শিশু আরিয়ান চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে সম্পর্কে ওমাইর ও বাপ্পির চাচা ছিল।
লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মিরাজুল নবী গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার পর দুপুরে একজন নারী শিক্ষক আহত দুই শিশুকে নিয়ে আসেন। আরেক শিশুকে (ওমাইর) নিয়ে আসেন স্বজন। শিশুটির পরনে পোড়া স্কুলড্রেস ছিল। গলার নিচে ও দেহ ভয়াবহভাবে পোড়া ছিল। শিশুটিকে মৃত জানিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই সময় সঙ্গে থাকা এক স্বজন দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে নিয়ে বেরিয়ে যান। ওই সময় পরিস্থিতি এমন ছিল শিশুটির নাম জানা হয়নি। তাকে ‘অজ্ঞাতনামা’ মৃত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। পরে বিকেলের দিকে কাফনের কাপড় পরানো অবস্থায় এক শিশুকে নিয়ে আসা হয়। পরিবারের সদস্যরা কোনো একটা কারণে মনে করেছিলেন শিশুটি বেঁচে আছে। শিশুটি মৃতই ছিল। ওই শিশুর নাম ছিল ওমাইর। তবে ওমাইর ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত ঘোষণা হওয়ায় ওকে লুবানা হাসপাতালের মৃত তালিকায় রাখা হয়নি।
মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ব্যাখ্যামরদেহের সংখ্যার হিসাব নিয়ে বেশ বিভ্রান্তি তৈরি হয়। ২৫ জুলাই শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে তালিকা দেয়, তাতে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৩ জন। হিসাব অনুসারে, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মৃত ১৫ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৫ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে ১ জন অজ্ঞাতনামা, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডে ১ জনসহ মোট ৩৩ জন। পরদিন ২৬ জুলাই শনিবার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেক শিশু (জারিফ ফারহান) ও স্কুলের কর্মচারী মাসুমা বেগমের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ানোর কথা ৩৫ জনে। গতকাল রোববার সকালেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মৃতের সংখ্যা ৩৪ বলে উল্লেখ করে। বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন একটি তালিকা দেয়, তাতে মৃত্যুর সংখ্যা দেখানো হয় একটি কম, অর্থাৎ ৩৩ জন। সেই তালিকায় বাদ দেওয়া হয় উত্তরায় অবস্থিত লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে ‘অজ্ঞাতনামা’ মৃত হিসেবে থাকা একজনের তথ্য।
রোববার বিকেলে সংশোধিত তালিকায় বলা হয়, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১৭ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৪ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডে ১ জনসহ মোট ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরার লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত ব্যক্তি একজনই বলে উল্লেখ করা হয় তালিকায়।
আরও পড়ুনপাশাপাশি তিন শিশুর কবর, কাঁদাচ্ছে সবাইকে ২৬ জুলাই ২০২৫মৃতের সংখ্যা ২ জন কম হওয়া নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি তালিকায় লুবানা হাসপাতালে ‘অজ্ঞাতনামা’ মৃত হিসেবে যে শিশুকে উল্লেখ করা হয়েছিল, সে ওমাইর বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওমাইরকে আগেই ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকা সংশোধন করে লুবানা হাসপাতাল থেকে ‘অজ্ঞাতনামা’ মৃত বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে কমে ৩৩ জন (পাইলটসহ) হয়। এর আগে সিএমএইচে অশনাক্ত হওয়া মরদেহ ৬ জনের বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষার পর গত বৃহস্পতিবার সেই মরদেহ ৫টি হিসেবে শনাক্ত হয়। মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা এখানেও একটি কমে যায়। পরিচালক আরও জানান, নিহতদের নামের পূর্ণ তালিকা মাইলস্টোন স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া হয়েছে। কেউ নিখোঁজ নেই। কেউ নিখোঁজ দাবি করেনি।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ‘ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি’র প্রধান ও ডেপুটি চিফ ডিএনএ অ্যানালিস্ট আহমাদ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, ৫টি পরিবার তাঁদের শিশু ও স্বজন নিখোঁজ বলে জানায়। ৫ পরিবারের প্রতিটি থেকে বাবা ও মা এবং একটি পরিবার থেকে ভাইসহ মোট ১১ জনের নমুনা নেওয়া হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় তিনটি শিশু ও দুজন নারীর মরদেহ শনাক্ত হয়। এই ৫ জনের মরদেহ নিশ্চিত হওয়ার পর দাবিদার পাঁচ পরিবারেকে গত বৃহস্পতিবার মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার যে ৫ জনের মরদেহ শনাক্ত হয় তাঁরা হলেন মো. ফারুক হোসেন ও সালমা আক্তার দম্পতির মেয়ে ওকিয়া ফেরদৌস নিধি, মো. বাবুল ও মাজেদা দম্পতির মেয়ে লামিয়া আক্তার সোনিয়া, মো. আব্বাস উদ্দিন ও মোসা. মিনু আক্তার দম্পতির মেয়ে আফসানা আক্তার প্রিয়া, মো. শাহাবুল শেখ ও মিম দম্পতির মেয়ে রাইসা মনি এবং আবদুল কাদির ও উম্মে তামিমা আক্তার দম্পতির মেয়ে মারিয়াম উম্মে আফিয়া। লামিয়া ও আফসানা দুই শিশুর মা। ওই শিশুরা বেঁচে আছে।
নিখোঁজ দাবি নিয়ে কেউ আসেনিগতকাল দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে শিশু বা স্বজন নিখোঁজ রয়েছে, এমন দাবি নিয়ে কাউকে আসতে দেখা যায়নি। ডিএনএ প্রতিবেদনে শুধু একজনের শার্টের নমুনা পাওয়া গেছে, মরদেহ পাওয়া যায়নি এমন পোস্ট হাজার হাজার শেয়ার হয়েছে। তবে স্কুলে গিয়ে ওই নামের কোনো নিহত বা নিখোঁজ শিক্ষার্থীর তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টিকে ভুয়া পোস্ট বলেছেন স্কুলের শিক্ষকেরা।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘ওই দিন শ্রেণিতে কতজন ছিল, সে তালিকা করে প্রতি পরিবারের অভিভাবককে ফোন করে খোঁজ করা হচ্ছে। নিহত ও আহত পরিবারগুলোতে শিক্ষকেরা প্রতিদিন যাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘নিখোঁজ কেউ নেই এ সম্পর্কে আমরা শতভাগ নিশ্চিত। মৃতের সংখ্যা গোপন করার কোনো কারণ নেই। কারও সন্তান নিখোঁজ থাকলে তিনি কি খোঁজ না করে বসে থাকতেন?’
বিল্লাল হোসেন নামে এক অভিভাবক একই কথা বলেন। তাঁর সন্তান সামান্য আহত হয় ওই দিন। তিনি বলেন, কোনো অভিভাবক তো বসে থাকবে না। নিখোঁজ থাকলে তাঁরা ঠিকই এসে খোঁজ করতেন।
স্কুলের তালিকা অনুসারে, সবশেষ স্কুলের ২৭ জন শিশু, ৩ জন অভিভাবক, দুজন শিক্ষক ও একজন কর্মচারীসহ মোট ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তুরাগ থানার উপপরিদর্শক মামুনুর রশিদ জানান, ঘটনার পর পাঁচটি পরিবার নিখোঁজ জানিয়ে থানায় আবেদন করেছিল। ডিএনএ প্রতিবেদনের পর ওই পাঁচ পরিবারই মরদেহ বুঝে পেয়েছে। আর কেউ থানায় নিখোঁজ দাবি নিয়ে আসেননি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক হওয় র ঘটন পর ব র র র মরদ হ ত হওয় র ড এনএ প জন র ম ক ত হয় হয় ছ ল পর ক ষ আর ক শ অবস থ স বজন
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা মূল্যে হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস শনাক্তকরণ কর্মসুচি
ছবি: সংগৃহীত