মাইক্রোসফটের নিষেধাজ্ঞার কারণে এত দিন চাইলেও ইজি অ্যান্টি-চিট সফটওয়্যার ব্যবহারকারীরা নিজেদের কম্পিউটারে উইন্ডোজ ১১-এর ২০২৪ সংস্করণ (২৪এইচ২) ইনস্টল করতে পারছিলেন না। এ সমস্যা সমাধানে উইন্ডোজের ব্লু স্ক্রিন অব ডেথ (বিএসওডি) ত্রুটির সমাধান করে উইন্ডোজ ১১-এর ইমার্জেন্সি আপডেট উন্মুক্ত করার পাশাপাশি ইজি অ্যান্টি-চিট সফটওয়্যার ব্যবহারকারীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে মাইক্রোসফট। ফলে এখন থেকে ইজি অ্যান্টি-চিট সফটওয়্যার ব্যবহারকারী সহজেই কম্পিউটারে উইন্ডোজের ১১-এর সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করতে পারবেন।

মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, ইজি অ্যান্টি-চিট সফটওয়্যার ইনস্টল থাকা অবস্থায় উইন্ডোজ ২৪এইচ২ আপডেট করতে গেলে কিছু কম্পিউটারে হঠাৎ রিস্টার্ট এবং বিএসওডি সমস্যা হতো। এই ত্রুটি দূর করে নতুন হালনাগাদ উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইজি অ্যান্টি-চিট একটি বহুল ব্যবহৃত গেম সুরক্ষা সফটওয়্যার, যা অ্যাপেক্স লেজেন্ডস, ওয়ার থান্ডার, ডেড বাই ডেলাইট, এলডেন রিং, রাস্ট, স্কোয়াড ও এনবিএ টু কে ২৫সহ অসংখ্য অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমে ব্যবহার করা হয়।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, যেসব কম্পিউটারে অন্য কোনো আপডেটসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা নেই, সেগুলো এখন উইন্ডোজ আপডেটের মাধ্যমে ২৪এইচ২ সংস্করণ ইনস্টল করতে পারবে। তবে কিছু ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে একটি সতর্কবার্তা দেখা যেতে পারে। যেখানে জানানো হবে সিস্টেমে ইজি অ্যান্টি-চিটের এমন একটি সংস্করণ ইনস্টল আছে, যা নতুন উইন্ডোজ সংস্করণের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ অবস্থায় নিয়মিত খেলা গেম চালুর মাধ্যমে ইজি অ্যান্টি-চিট সফটওয়্যারটি হালনাগাদ করে নেওয়া যেতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, কম্পিউটারে ইজি অ্যান্টি-চিটের পুরোনো সংস্করণ ইনস্টল থাকলেও গেম চালিয়ে সেটি সক্রিয় করা হলে বিএসওডি সমস্যা দেখা দেবে না।

২০২৪ সালের অক্টোবরে মাইক্রোসফট ইন্টেলের অ্যাল্ডার লেক ও ভি-প্রো প্ল্যাটফর্মচালিত যন্ত্রেও একই ধরনের সমস্যার কারণে ২৪এইচ২ আপডেট স্থগিত করেছিল। ওই সময় ‘অ্যাসফল্ট ৮’ গেম ক্র্যাশ হওয়া এবং ইজি অ্যান্টি-চিট সক্রিয় থাকলে ব্লু স্ক্রিন দেখা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পরে সমস্যা সমাধান করে চলতি বছরের মার্চে সেই আপডেট নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়।

সূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ট সফটওয় য র ব যবহ র উইন ড জ স স করণ সমস য আপড ট

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে সরকারি চিকিৎসায় আস্থা ফেরাতে ডিসির উদ্যোগ

নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যার নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা না দিয়ে বহু রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার্ড করে দেন।

অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, শুধুমাত্র কিডনি, ব্রেইন স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে রেফার করা হয়। এই দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের পর বিষয়টির প্রকৃত চিত্র জানতে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) তিনি ৩০০ শয্যার নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে একটি আধুনিক হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার চালুর পাশাপাশি তিনটি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করেন।

হাসপাতালের তিনটি পৃথক স্থানে বসানো এই ডিজিটাল বোর্ডগুলোতে প্রতিদিনের হালনাগাদ তথ্য দেখা যাবে—কতজন রোগী ভর্তি আছেন, কতজন রিলিজ পেয়েছেন, এবং কোন কারণে কতজন রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের এই প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ রোগীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের আস্থাহীনতা ও ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “আমাদের কাছে বারবার অভিযোগ এসেছে—রোগীরা চিকিৎসা নিতে এলে তাদের অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা যখন হাসপাতালে ভিজিট করি, দেখি প্রতিটি বেডে রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত মাসে প্রায় ৬৫ হাজার রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন,“তাহলে প্রশ্ন হলো—কেউ বলছে হাসপাতালে গেলেই রেফার করা হয়, কেউ বলছে সেবা দেওয়া হচ্ছে—আসল চিত্রটা কী? আমরা সেটিই জনসমক্ষে আনতে চেয়েছি।

এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিদিনের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে কতজন রোগী এসেছেন, ভর্তি হয়েছেন, রেফার হয়েছেন, কেন রেফার করা হয়েছে, কতজন অপারেশনে গেছেন এবং কতটি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।”

ডিসি জাহিদুল বলেন,“এই উদ্যোগের মাধ্যমে হাসপাতাল নিয়ে যে ভুল ধারণা ও সন্দেহ ছিল, তা দূর হবে। সরকার সাধারণ মানুষের জন্য হাসপাতাল তৈরি করেছে—মানুষ সেখানে এসে সেবা নেবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।

আজকের এই ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে আমরা চাই, আর যেন কোনো বিভ্রান্তি বা সন্দেহের অবকাশ না থাকে। মিডিয়া কর্মী হোন বা রোগীর স্বজন সবাই সহজেই জানতে পারবেন প্রতিদিন কতজন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বা রিলিজ পেয়েছেন।” 

হাসপাতালের বিভিন্ন চলমান সমস্যায় তাঁর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, “দ্রুতই ৩০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন সার্বিক নিরাপত্তার জন্য। স্বাস্থ্য বিভাগ ও আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছি।”

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার বলেন,“আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৩,০০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এই মাসে প্রায় ২০০ রোগীর বড় অপারেশন হয়েছে।

তবে কিছু রোগীকে রেফার করতেই হয়, কারণ এখানে হার্ট, ব্রেইন ও কিডনি বিভাগের ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি। হাসপাতালটির বয়স প্রায় ৪০ বছর।

৫০০ শয্যার অনুমোদন কার্যকর হলে এই বিভাগগুলো চালু করা হবে। তখন আর রোগীদের অন্য হাসপাতালে রেফার করতে হবে না।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড চালু হওয়ায় হাসপাতাল ও রোগীদের মধ্যে আস্থার সংকট দূর হবে এবং সেবার মান আরও উন্নত হবে।

এ সময় সিভিল সার্জন ডা. এ. এফ. এম. মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসাইন, এবং ডাক্তার ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিটা প্রকল্প যথাযথ পরিমার্জনের আহ্বান
  • লাইটবার খুলে পড়ার আশঙ্কায় টেসলার সাইবারট্রাকের ১০ শতাংশ গাড়ি প্রত্যাহার
  • নারায়ণগঞ্জে সরকারি চিকিৎসায় আস্থা ফেরাতে ডিসির উদ্যোগ