সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
Published: 31st, July 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচিত সরকার না হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। সবাই একটা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘রংপুর বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের রাজনৈতিক অধিকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আমীর খসরু এ কথা বলেন।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে চেম্বার ভবনে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশ থেকে যারা আসে তারা আমাদের জিজ্ঞেস করে, আপনাদের নির্বাচনটা কবে হবে। সব কথা শোনে, শোনার পর বলে, নির্বাচন কবে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এত বড় কমিটমেন্টে কেউ যাবে না। তাদের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বিনিয়োগ করে। এটা কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়। সুতরাং সবাই বসে আছে হাত গুটিয়ে। সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য।’
‘এক একটা দিন আমরা নষ্ট করছি ও পিছিয়ে যাচ্ছি’—এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছি। এখন সবাইকে শক্তিশালীভাবে বলতে হবে, আমরা নির্বাচিত সরকার চাই, যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধ। এর বাইরে অন্য কোনো সরকারের জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ হলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। যে কারণে কেউ কাজ করছে না। পুলিশ কাজ করছে না, সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না। কোনো জায়গায় কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে না, হবে না।’
নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের মালিকানার প্রতিফলন ঘটাতে যার জন্য গত ১৭ বছর যুদ্ধ করেছি। শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের রাজনীতিতে একটি মানসিক পরিবর্তন এসেছে। এখন আমাদের প্রত্যাশা ও দায়িত্ব বাড়ছে। আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাই, তবে জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করব।’
রংপুরের অর্থনীতি প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘রংপুরের হস্ত ও তাঁতশিল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। কামারের পণ্য রপ্তানিযোগ্য হলেও তা রপ্তানি হচ্ছে না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমাদের লক্ষ্য রংপুরে কলকারখানা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় উদ্যোক্তা তৈরি করা। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে উদ্যোক্তাদের আর্থিক সুবিধা ও কাঁচামাল সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিদেশে সোনার অলংকার রপ্তানি এবং ডায়মন্ড কাটিং সেক্টরেও কাজ করার পরিকল্পনা আছে।’
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এমদাদুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন হায়দারসহ বিএনপির স্থানীয় নেতা ও ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া সভায় রংপুর অঞ্চলের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন। রংপুরের পিছিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙা করতে করণীয়, শিল্প-বাণিজ্য প্রসার, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ব এনপ র জনগণ র ক জ কর আম দ র র জন য সরক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।
ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”
দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”
নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”
রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।
ঢাকা/কেয়া/রফিক