Prothomalo:
2025-11-17@13:26:13 GMT

তিন কবিতা

Published: 5th, August 2025 GMT

সোহরাব হাসান

অজ্ঞাতনামা শহীদের জবানবন্দি

জুলাইয়ের মিছিলে তোমাগো লগে আমিও ছিলাম

অদ্য আমার ঠিকানা বেওয়ারিশ লাশের কাতারে।

হেই দিন স্লোগানে মাতাল মিছিলটি মহাসড়কে

বাঁক লইতেই ঠা ঠা গুলির আওয়াজ; আর মিছিলের

শেষ ভাগে থাকা রোগাপটকা যেই ছেলেটি গুলি খাইল, সে আমি।

পাশে থাকা দুইজন রক্তভেজা শরীর হাসপাতালে লইয়া গেলে

ডাক্তার জানতে চাইলেন, নাম কী?

কেউ তো আমারে চেনে না, নাম বলবে কী!

অতঃপর আঞ্জুমান মুফিদুল আমার দাফন–কাফনের ব্যবস্থা করে

নতুন কাপড়, সাবান–লোবানের আয়োজনে ঘাটতি ছিল না

সেই থেকে অজ্ঞাতনামা শহীদের তালিকায় আমি আছি।

এই যে মাসের পর মাস ধইরা সংবিধান, সংস্কার আর

গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ লইয়া বিস্তর বাহাস হইতেছে

একের পর এক কাণ্ডকারখানা ঘটিতেছে দেশে

কবরখানার অন্ধকারেও আমি সব টের পাই।

আমার বাপ–মা জানেন না, তাঁদের সন্তানের নাম

শহীদের মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় উঠেছে; তাঁরা জানেন

তাঁদের ছাওয়াল ঢাকায় যাইয়া চিরতরে হারাইয়া গেছে

কেউ জিজ্ঞাস করলেন মা কান্দে, বাবা দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন।

কামরুজ্জামান কামু

আবু সাঈদ

আবু সাঈদের বুক থেকে
ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসা রক্ত
ছিটকে পড়েছে দেশ থেকে
উপমহাদেশে— 


কোলকাতায়—আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, অরুণাচলে, নাগাল্যান্ডে, মেঘালয়, মিজোরাম—পাকিস্তানে—

আহা!

আর জন্মে আমি
আবু সাঈদের মায়ের কোলে
জন্ম নিতে চাই!

২২ আগস্ট ২০২৪

রোজেন হাসান

ফেনী

পানির মধ্যে ঘুরি

লাশ নিয়ে

কোথায় কবর

মাটি কোথায়?

চারিদিকে পানি আর পানি

কূল নাই যেন দরিয়া

এত পানি রে ভাই 

তোরে গোর দেওয়ার মাটি নাই

পানির মধ্যে ঘুরি

লাশ নিয়ে

মাটি কোথায়?

ভাইকে দিতে হবে কবর।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ