সোহরাব হাসান
অজ্ঞাতনামা শহীদের জবানবন্দি
জুলাইয়ের মিছিলে তোমাগো লগে আমিও ছিলাম
অদ্য আমার ঠিকানা বেওয়ারিশ লাশের কাতারে।
হেই দিন স্লোগানে মাতাল মিছিলটি মহাসড়কে
বাঁক লইতেই ঠা ঠা গুলির আওয়াজ; আর মিছিলের
শেষ ভাগে থাকা রোগাপটকা যেই ছেলেটি গুলি খাইল, সে আমি।
পাশে থাকা দুইজন রক্তভেজা শরীর হাসপাতালে লইয়া গেলে
ডাক্তার জানতে চাইলেন, নাম কী?
কেউ তো আমারে চেনে না, নাম বলবে কী!
অতঃপর আঞ্জুমান মুফিদুল আমার দাফন–কাফনের ব্যবস্থা করে
নতুন কাপড়, সাবান–লোবানের আয়োজনে ঘাটতি ছিল না
সেই থেকে অজ্ঞাতনামা শহীদের তালিকায় আমি আছি।
এই যে মাসের পর মাস ধইরা সংবিধান, সংস্কার আর
গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ লইয়া বিস্তর বাহাস হইতেছে
একের পর এক কাণ্ডকারখানা ঘটিতেছে দেশে
কবরখানার অন্ধকারেও আমি সব টের পাই।
আমার বাপ–মা জানেন না, তাঁদের সন্তানের নাম
শহীদের মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় উঠেছে; তাঁরা জানেন
তাঁদের ছাওয়াল ঢাকায় যাইয়া চিরতরে হারাইয়া গেছে
কেউ জিজ্ঞাস করলেন মা কান্দে, বাবা দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন।
কামরুজ্জামান কামু
আবু সাঈদ
আবু সাঈদের বুক থেকে
ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসা রক্ত
ছিটকে পড়েছে দেশ থেকে
উপমহাদেশে—
কোলকাতায়—আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, অরুণাচলে, নাগাল্যান্ডে, মেঘালয়, মিজোরাম—পাকিস্তানে—
আহা!
আর জন্মে আমি
আবু সাঈদের মায়ের কোলে
জন্ম নিতে চাই!
২২ আগস্ট ২০২৪
রোজেন হাসান
ফেনী
পানির মধ্যে ঘুরি
লাশ নিয়ে
কোথায় কবর
মাটি কোথায়?
চারিদিকে পানি আর পানি
কূল নাই যেন দরিয়া
এত পানি রে ভাই
তোরে গোর দেওয়ার মাটি নাই
পানির মধ্যে ঘুরি
লাশ নিয়ে
মাটি কোথায়?
ভাইকে দিতে হবে কবর।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকের পথে পানি, আটকা পড়েছেন ৩ শতাধিক পর্যটক
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মাচালং এলাকায় ভারী বৃষ্টির ফলে সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উভয় পাশে আটকা পড়েছেন সাজেকগামী ও সাজেকফেরত ৩ শতাধিক পর্যটক।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের মাচালং বাজার সেতুর পাশের সড়কের কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সাজেকে শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। সাজেকগামী প্রায় ২০০ পর্যটক দীঘিনালা পাড়ে আটকা পড়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাজেক পর্যটন রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ন দেব বর্মন। তিনি জানিয়েছেন, গতকাল (সোমবার) খুব বেশি পর্যটক সাজেকে যাননি। যাদের জরুরি প্রয়োজন ছিল, তারা মাচালং বাজারে নৌকা দিয়ে পার হয়ে খাগড়াছড়িতে ফিরেছেন। আজ (মঙ্গলবার) কেউ সাজেকে প্রবেশ করেননি। যেসব পর্যটক সাজেকে ফেরত এসেছেন, তাদেরকে সর্বনিম্ন মূল্যে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
সুপর্ন দেব বর্মন আশা প্রকাশ করেছেন, বৃষ্টি না হলে সড়কের পানি হয়ত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নেমে যাবে।
খাগড়াছড়ি জিপ মালিক সমিতির অফিসের লাইনম্যান সৈকত জানিয়েছেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাজেকের দুই পাড়ে বেশকিছু গাড়ি মাচালং থেকে ফেরত আসেন। ২৫০ থেকে ৩০০ পর্যটক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি।
ঢাকা/শংকর/রফিক