সিংড়ায় কবুতর চুরির সন্দেহে তরুণকে পিটিয়ে হত্যা
Published: 8th, August 2025 GMT
নাটোরের সিংড়ায় কবুতর চুরির সন্দেহে আকরাম হোসেন (১৮) নামের এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ওই তরুণের মৃত্যু হয়।
আকরাম হোসেন সিংড়া পৌর শহরের পারসিংড়া মহল্লার মৃত ইউনুস আলীর ছেলে।
সিংড়া থানা সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে পাটকোল এলাকার মিঠু নামের এক খামারির কবুতর চুরির ঘটনা ঘটে। এরপর পার্শ্ববর্তী পারসিংড়ার আকরাম হোসেনকে সন্দেহ করে ওই খামারি গ্রামবাসীর কাছে বিচার দেন। কিন্তু সেই গ্রাম্য সালিশে আকরাম উপস্থিত ছিলেন না। এ ঘটনার জের ধরে আজ শুক্রবার বিকেলে মিঠু ও তাঁর আরেক সহযোগী পারসিংড়া থেকে আকরামকে তুলে নিয়ে আসেন পাটকোল গ্রামে মিঠুর পেয়ারাবাগানে। সেখানে আকরামকে মারধরের একপর্যায়ে মুমূর্ষু অবস্থায় পাশের রাস্তায় ফেলে রেখে যান তাঁরা। পরে স্থানীয় লোকজন সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সন্ধ্যার কিছু আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শামীমা আফরোজ বলেন, আহত অবস্থায় ভর্তি করা হলেও চিকিৎসা চলাকালে ওই তরুণের মৃত্যু হয়। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আকর ম
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তর না চব্বিশ—এই বিতর্ক অনাহূত
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে চব্বিশের জুলাইয়ের আন্দোলনের বিরোধ নেই। তবে অনেক মূল্য দিয়ে অর্জিত চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পর মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব বিষয়ে সংস্কার করা প্রয়োজন ছিল, তা করতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘লাল জুলাইয়ের কবিতা’ শিরোনামে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য উঠে আসে। সাধারণ সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীসমাজের সদস্যরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘চব্বিশ একাত্তর বাহান্ন, হারতে দেব না কখনো’।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দীন। তিনি বলেন, এ দেশের মুক্তিকামী জনগণ যে আশা নিয়ে আন্দোলন করেছিল, এক বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়েছে কি? এই সরকার বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নিরাপত্তা, শিক্ষাব্যবস্থার কোনো সংস্কারই আনতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা বেকার সৃষ্টির কারখানা।
এ সময় তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে জুলাই ঘোষণাপত্র কার্যকর নিয়ে সংশয়ের কথা। জুলাই আন্দোলনে মুখের অবয়ব হারানো খোকন চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে গঠিত এই সরকার। আহতদের সুচিকিৎসার ও পুনর্বাসন ছিল তাদের দায়িত্ব; কিন্তু তা হচ্ছে না। এখনই যদি আমাদের অবস্থা এমন হয়, তাহলে পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা কী প্রত্যাশা করব।’
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, একশ্রেণির মানুষ একাত্তর আর চব্বিশের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করছে। এটি সম্পূর্ণ অনাহূত ও অশ্রদ্ধার প্রদর্শন। তিনি বলেন, এই সংগ্রামকে ধারণ করতে গিয়ে বিগত সংগ্রামকে ভুলে গেলে ভবিষ্যতের সংগ্রাম ২৪–এর সংগ্রামকে ভুলে যাবে। অ্যাটর্নি জেনারেল এ সময় আগের বক্তাদের ক্ষোভের সূত্র ধরে বলেন, ‘এক বছর পর এমন হতাশার কথা শুনতে হবে, তা ভাবিনি।’ গত এক বছরে পুলিশ কোনো গায়েবি মামলা করেনি বা গুমের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান বলেন, শেখ হাসিনার আমলের ১৬ বছরে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও পরিণত হয়েছিল ক্যাডারদের সংগঠনে। তাঁরা দখলের রাজনীতি করেছেন। দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছেন। সেই সব সংস্কৃতিকর্মীই জুলাই আন্দোলনের সময় হতাহত মানুষের পক্ষ না নিয়ে সরকারকে সমর্থন করে গেছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল সমবেত আবৃত্তি। শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন ‘লাল জুলাইয়ের কবিতা’র তিন উদ্যোক্তা আঞ্জুমান লায়না নওশিন, ফাহমিদা সূচনা ও অনন্যা মাহমুদ। গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো লাল জুলাইয়ের কবিতা মঞ্চস্থ করার সময়ের বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন তাঁরা।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার এই আয়োজন শুরু হয়। এরপর মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থান স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।