সৌরজগতের বাইরে থেকে আসা ধূমকেতুর ছবি তুলল হাবল টেলিস্কোপ
Published: 9th, August 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ধূমকেতু ৩আই/অ্যাটলাসের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে চমৎকার ছবিটি প্রকাশ করেছে। এ ধূমকেতুটি এসেছে আমাদের সৌরজগতের বাইরের এক নক্ষত্রমণ্ডল থেকে। ৭ আগস্ট নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইসা) হাবল টেলিস্কোপের তোলা এই অভূতপূর্ব ছবিগুলো প্রকাশ করেছে।
ঘণ্টায় প্রায় ২ লাখ ৯ হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটে আসা এ ধূমকেতুটি গত মাসে চিলির এক শক্তিশালী টেলিস্কোপে প্রথম ধরা পড়ে। এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত মাত্র তৃতীয় আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু, যা আমাদের সৌরজগৎ অতিক্রম করছে। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, এর বরফমণ্ডিত কেন্দ্র বা আইসি কোরের ব্যাস ১০ কিলোমিটারের বেশি হতে পারে। কিন্তু হাবলের নিখুঁত পর্যবেক্ষণ বলছে, এর আকার ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটারের বেশি নয়।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, অক্টোবরের শেষ দিকে এটি সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছাবে। তবে চিন্তার কিছু নেই, তখন এটি পৃথিবী থেকে যথেষ্ট নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করবে। অবশ্য ধূমকেতুটি কোথা থেকে এসেছে বা কী দিয়ে তৈরি, তা নিয়ে এখনো গবেষণা করে যাচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
হাবল স্পেস টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণ দলের প্রধান ডেভিড জুয়িট বলেন, এখন অবধি কেউ জানে না যে ধূমকেতুটি কোথা থেকে এসেছে। এটি রাইফেল থেকে নির্গত বুলেটের গতি পর্যবেক্ষণ করার মতো। সেকেন্ডের হাজার ভাগের এক ভাগ সময়ের তথ্য দিয়ে ধূমকেতুটির প্রাথমিক যাত্রার ইতিহাস অনুধাবন প্রায় অসম্ভব।
সূত্র: এনডিটিভি, লাইভ সায়েন্স
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে যে গ্রহে
মহাবিশ্বের নানা প্রান্তে বিজ্ঞানীরা নজর রাখছেন নতুন গ্রহ-নক্ষত্রের অনুসন্ধানে। কখনো কখনো আমাদের সৌরজগতের বাইরে থাকা বিভিন্ন গ্রহ আবিষ্কার করেন তাঁরা। সৌরজগতের বাইরে থাকা বিভিন্ন গ্রহ এক্সোপ্ল্যানেট নামে পরিচিত। সম্প্রতি সৌরজগতের দূরবর্তী এক গ্রহের খোঁজ মিলেছে, যেখানে পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের অনুমান সত্যি হলে প্রথমবারের মতো আমাদের সৌরজগতের বাইরের কোনো গ্রহে পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল দেখা যাবে।
জেমস ওয়েবস্পেস টেলিস্কোপের তথ্যমতে, দূরবর্তী সেই গ্রহের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর মতোই হতে পারে। পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে ট্র্যাপিস্ট ১ নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে গ্রহটি। ট্র্যাপিস্ট সিস্টেমে বেশ কয়েকটি গ্রহ রয়েছে যেখানে জীবনের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি থাকতে পারে। গ্রহটির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী নেস্টর এস্পিনোজা জানান, ট্র্যাপিপিস্ট-১ নক্ষত্রকে ভিনগ্রহী বলা যায়। নক্ষত্রটি খুবই ছোট। সেখানে বৃহস্পতির আকারের কমপক্ষে সাতটি পাথুরে গ্রহ প্রদক্ষিণ করছে। এর মধ্যে তিনটি গ্রহ বাসযোগ্য অঞ্চলে অবস্থিত। কয়েকটি গ্রহ নক্ষত্রের বেশ কাছে অবস্থিত। সেখানে বায়ুমণ্ডল থাকলে তা তরল পানি ধরে রাখতে পারে।
২০২৩ সালে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে চারটি গ্রহ পর্যবেক্ষণ করা হলেও এখন পর্যন্ত সেগুলোয় কোনো বায়ুমণ্ডল থাকার বিষয় নিশ্চিত করা যায়নি। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে ট্র্যাপিস্ট-১ই নামের গ্রহে সম্ভবত শুক্র বা মঙ্গল গ্রহের মতো কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। এই গ্রহ কার্বন ডাই–অক্সাইডে পূর্ণ। এখানকার বায়ুমণ্ডল নাইট্রোজেনসমৃদ্ধ হতে পারে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বা শনির বরফের চাঁদ টাইটানের বায়ুমণ্ডলের মতোও হতে পারে গ্রহটি।
ট্র্যাপিস্ট-১ই গ্রহের আকার পৃথিবীর মতো। এটি সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর চেয়ে অনেক দ্রুত তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গ্রহবিজ্ঞানের অধ্যাপক সারা সিগার বলেন, বিভিন্ন প্রমাণ বলছে যে গ্রহটির বায়ুমণ্ডল শুক্র ও মঙ্গল গ্রহের মতো নয়। দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্সে গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক গবেষণায় এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি