রূপগঞ্জে সিএনজি চালক থেকে কোটিপতি, অবশেষে গ্রেপ্তার
Published: 9th, August 2025 GMT
রূপগঞ্জে সিএনজি চালক থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া এবং একাধিক অভিযোগে আলোচিত দাউদপুর ইউনিয়নের নাগদা গ্রামের মোতালিবকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। শুক্রবার রাতে রাজধানী বসুন্দরা আবাসিক এলাকা থেকে আটক করে তাকে রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত দেড় দশকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দাউদপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হিসেবে এমন কোন অপকর্ম নেই যা সে করেনী।
দাউদপুর ইউনিয়নের নাগদা গ্রামের মৃত ইসলাম উদ্দীনের ছেলে মোতালিব জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসা, জমি দখল, নারী কেলেঙ্কারি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে। ব্যবসায়ী সহযোগী নেওয়াজের সঙ্গে মিলে তিনি জোরপূর্বক প্রায় ২০ বিঘা কৃষিজমিতে বালু ভরাট করে শতাধিক ভুয়া দলিল তৈরি করেন। এসবের প্রতিবাদ করলেই হামলা-মামলা, অবৈধ অস্ত্রের শোডাউন ও কিশোর গ্যাং ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রায় এক দশক আগে বীর হাটাবো গ্রামের এক প্রভাবশালী পরিবারের গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন মোতালিব। প্রথম স্ত্রী থাকার বিষয়টি গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
দ্বিতীয় স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তার নারী কেলেঙ্কারি ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় দুই বছর ধরে আলাদা থাকছেন। সম্প্রতি যমুনা ব্যাংকের এক নারী কর্মচারীর সঙ্গে কক্সবাজার ভ্রমণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
এছাড়া ছাত্র আন্দোলন দমাতে কাঞ্চন সেতুর কাছে লাঠিচার্জ ও গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রূপগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে ২০২১ সালের ২ অক্টোবর মোতালিবসহ ১৫০-২০০ জন অস্ত্র, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে এবং স্বর্ণ, মোবাইল, ল্যাপটপসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, দাউদপুরের ৬ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোতালিবকে র্যাব-১ গ্রেপ্তার করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও মামলা আছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রিমান্ডে নিলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, বিস্ফোরকের উৎস শনাক্ত, পলাতক আসামিদের অবস্থান নির্ণয় এবং ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভব হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ দ উদপ র র পগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রসংগঠনগুলোর বোঝাপড়ায় আসা উচিত ছিল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি মনে করেন, ছাত্রসংগঠনগুলোর একটি রূপরেখা প্রণয়ন করে নিজেদের মধ্যে চুক্তি বা বোঝাপড়ায় আসা উচিত ছিল।
আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহীর তেরখাদিয়া এলাকায় বিভাগীয় স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এ মন্তব্য করেন।
প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ-২০২৫–এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম প্রমুখ।
সম্প্রতি ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভের পর প্রশাসন সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমার মনে হয় যে এটা এই পর্যায়ে আসত না, যদি ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেরা বসে একটা সোশ্যাল কন্ট্র্যাক্ট বা নিজেরা একটা বোঝাপড়ায় আসতে পারত। যেহেতু ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় সংস্কার হচ্ছে, ছাত্ররাজনীতির বিষয়েও ছাত্রসংগঠনগুলোর একটা নতুন রূপরেখায় একমত হওয়া উচিত ছিল।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হল ও একাডেমিক এরিয়াতে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি কীভাবে চলবে বা চলবে কি না, এটা যদি আগেই ছাত্রসংগঠনগুলো বসে একটা চুক্তিতে আসত, এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, ছাত্ররাজনীতির প্রতি যে বিদ্বেষমূলক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটা হতো না। আমাদের ছাত্রসংগঠনগুলোর এখানে আরেকটু ম্যাচিউর (পরিপক্ব) হওয়ার সুযোগ ছিল।’
বিশ্ববিদ্যালয় হলে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ব্যাপারে উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে উপদেষ্টা রাজি হননি।
রাজশাহীতে বিপিএল খেলার আয়োজনের ব্যাপারে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘তিনটি স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও বিপিএলের ম্যাচগুলো হয়ে থাকে। আমরা একটু ডিসেন্ট্রালাইজ করার জন্য উত্তরবঙ্গের দিকে রাজশাহী স্টেডিয়াম, দক্ষিণবঙ্গের দিকে খুলনা কিংবা বরিশাল স্টেডিয়াম নিয়েছি। আর সামনের বছর থেকেই বিপিএল আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, সংস্কার শেষে রাজশাহী স্টেডিয়ামে বিপিএলের কিছু ম্যাচ আয়োজন করতে পারব।’
এর আগে সকালে উপদেষ্টা রাজশাহী সার্কিট হাউসে ভার্চ্যুয়ালি স্থানীয় সরকার বিভাগের ১২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। দিনব্যাপী সফরে তিনি নাটোরেও বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন।