‎মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে ‘কিওয়ার্ড, সিকুয়েন্স, ইম্পর্টেন্স: এ পটেনশিয়াল টেকনিক ফর কোয়ালিটি থিসিস অ্যান্ড পাবলিকেশন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে ‎বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তলা একাডেমিক ভবনের কনফারেন্স রুমে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ।

তিনি বলেন, “গবেষণাপত্র যারা পড়বেন, তাদের জন্য গবেষণাপত্রকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে পাবলিকেশন করতে হবে। এই টেকনিকগুলো জানা খুবই জরুরি কারণ ভাল ফল যদি কেউ না দেখে, এর কোনো মূল্য নেই। ফলাফল আমার আছে কিন্তু কেউ জানল না, কেউ সাইন ইন করল না, কেউ দেখল না- সেটা কিন্তু হলো না। আমার ফলাফল আছে, আমি এমনভাবে উপস্থাপন করেছি, যা পাঠককে আকৃষ্ট করেছে এবং এর গুরুত্ব আছে- এমন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে।”

‎ আইকিউএসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে রিসোর্স পার্সন হিসেবে বক্তব্য রাখেন 'ইউনিভার্সিটি অব পুত্রা মালয়েশিয়ার সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল নাসির ও এমবিএসটিইউ জার্নাল অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির এডিটর-ইন-চিফ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোকাদ্দেস আলী।

আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহ্ আদিল ইশতিয়াক আহমদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. খাইরুল ইসলাম।

ঢাকা/কাওছার/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কাছের মানুষ পাশে থাকলে কঠিন যুদ্ধেও জেতা যায়, তার প্রমাণ বিসিএস ক্যাডার মালিহা

মালিহার মা আসমা বেগমের কথা না বললেই নয়। জন্ম মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার কলমা গ্রামে। ঢাকায় বড় হয়েছেন। বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।

১৯৯৩ সালে জগন্নাথ কলেজে (সে সময় কলেজ ছিল, ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় হয়) ভর্তি হন। এর এক বছর পর তাঁর বিয়ে হয়ে যায়।

একঝটকায় ঢাকার শিক্ষার্থী থেকে ঝিনাইদহের হরিশংকরপুর ইউনিয়নের বাকড়ি গ্রামের গৃহবধূ হয়ে গেলেন। আসমা বেগমের খুব ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করার।

স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার পাট চুকে গেল। চাকরির স্বপ্নের সমাপ্তি। মালিহা তাঁর মাকে সারাটা জীবন কেবল অন্যের জন্য করে যেতে দেখেছেন। বিনিময়ে মা পেয়েছে কেবল উপেক্ষা আর অবহেলা।

নতুন জীবন নতুন সংগ্রাম

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরই বিয়ে হয়ে যায় মালিহার। বিয়েতে মালিহার মায়ের কেবল একটা অনুরোধ ছিল পাত্র ও তাঁর মা-বাবার কাছে—তাঁর কন্যার লেখাপড়ার যাতে কোনো ত্রুটি না হয়। বিয়ের পর মায়ের ইচ্ছায়, স্বামীর পরামর্শে মালিহা ভর্তি হন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেনারি কলেজে।

মালিহা এই কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্রী। তখন কলেজটি ছিল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। বর্তমানে কলেজটি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

২০১৯ সালের মার্চে ইন্টার্ন চলাকালীন মা হন মালিহা। মা হয়েও ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করেন। তারপর সময় নষ্ট না করে শুরু করেন চাকরির পড়াশোনা।

সারা জীবন কেবল চেয়েছি মায়ের কষ্টের ভাগ নিতে। কী করলে আমার মা একটু স্বস্তি পাবে। আমার স্বামী সব সময় আমার পাশে ছিলেন। আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। বলেছেন, “তুমি কেবল আবেগ নিয়ে কখনোই মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারবা না। এ জন্য তোমার পায়ের নিচের মাটি শক্ত হতে হবে।” আমাকে আরও বলত, “আমার মতো স্টুডেন্টের যদি সরকারি চাকরি (ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার) হয়, তোমার কেন হবে না। তুমি আমার চেয়ে বেশি যোগ্য, বেশি পরিশ্রমী, তোমার আরও ভালো চাকরি হবে।”মুলকে সাদ মালিহা, লাইভস্টক ক্যাডার, ৪৪তম বিসিএসযে কান্না আনন্দের

মালিহার মামি শিক্ষা ক্যাডার হন। সে সময় থেকে তাঁর রঞ্জু মামা তাঁকে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন। মালিহা ২০২০ সাল থেকে চাকরির পড়াশোনা শুরু করেন। ২০২৫ সালে এসে প্রথম সরকারি চাকরি পান। যোগ দেন সরকারি ব্যাংকের অফিসার পদে।

এর কিছুদিন পর ৩০ জুন ৪৪তম বিসিএসের ফল প্রকাশ করে। তবে তখন ক্যাডার পদ আসেনি মালিহার। বেশ হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন।

লাইভস্টক ক্যাডারে ৬৮জন ‘রিপিট ক্যাডার’ ছিল। সেসব পুনর্মূল্যায়ন করে আবার যখন ৬ নভেম্বর নতুন ফল প্রকাশ করা হয়, তাতে নাম আসে মালিহার। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্নপূরণ হয় তাঁর।

মালিহার মা আসমার নিজের অপূর্ণ স্বপ্ন যেন মেয়ের ভেতর দিয়ে সত্য হয়ে ধরা দেয়। মালিহা যখন চাকরির সুখবর জানাতে মাকে ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে ‘আম্মুউউউ’ বলে একটা চিৎকার দিয়েছেন, মা আসমা বেগম ভয়েই অস্থির! নিশ্চয়ই মেয়ের কোনো বিপদ হয়েছে। এরপরই শুনলেন খবরটা। মা-মেয়ে দুজনেই ফোনের দুই পাশে কাঁদছেন, যে কান্না আনন্দের, প্রাপ্তির, সফলতার।

মামির শাড়ি আর ব্লেজার পরে বিসিএসের ভাইভা দিয়েছেন মালিহা

সম্পর্কিত নিবন্ধ