কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল বিশাল মাধ্যাকর্ষণ ক্ষমতাসম্পন্ন মহাজাগতিক সত্তা। এই সত্তা যেন সবকিছুকে আটকে রাখে, এমনকি আলোও শুষে নেয়। এবার মহাকাশে বিশাল কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে ৫০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত কসমিক হর্সশু নামে পরিচিত ছায়াপথে অবস্থিত কৃষ্ণগহ্বরটির আকার ৩ হাজার ৬০০ কোটি সূর্যের সমান। বিজ্ঞানীদের দাবি, বিশাল কৃষ্ণগহ্বরটি আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বরের চেয়ে কমপক্ষে ১০ হাজার গুণ ভারী। এটিই এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় কৃষ্ণগহ্বর।

বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, মহাবিশ্বের প্রতিটি ছায়াপথের কেন্দ্রে একটি সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে। নতুন আবিষ্কার করা কৃষ্ণগহ্বরের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থমাস কোলেট বলেন, এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত শীর্ষ ১০টি বড় কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে একটি। সম্ভবত সবচেয়ে বিশাল কৃষ্ণগহ্বর। এই অতি–বৃহৎ কৃষ্ণগহ্বরটি তার হোস্ট গ্যালাক্সির আকারের কারণে বিশাল ভরের জন্য দায়ী। আমরা মনে করি, উভয়ের আকার ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। যখন ছায়াপথ বৃদ্ধি পায়, তখন তারা কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরে পদার্থ পাঠাতে পারে। হোস্ট গ্যালাক্সি যত বড় হবে, তার কেন্দ্রের কৃষ্ণগহ্বরের আকার তত বড় হওয়া উচিত।

কৃষ্ণগহ্বরটি নিকটবর্তী ছায়াপথের আলোকে বিকৃত করছে। একই সঙ্গে হোস্ট গ্যালাক্সির কেন্দ্রের কাছাকাছি নক্ষত্র দ্রুতগতিতে চলছিল বলেই শনাক্ত করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও এই কৃষ্ণগহ্বর অযৌক্তিকভাবে বড় আকারের। বিজ্ঞানীদের পক্ষে এটি শনাক্ত করা সত্যিই কঠিন ছিল। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী কোলেট বলেন, পদার্থের কিছু অংশ ব্ল্যাকহোল টেনে নিজেকে বড় করছে। বেশির ভাগ অংশ কোয়ারাস নামক একটি অবিশ্বাস্যভাবে উজ্জ্বল উৎসের মাধ্যমে আলোকিত হয়। এই কোয়াসার থেকে বেশি শক্তি নির্গত হয়। পৃথিবীর টেলিস্কোপের মাধ্যমে এসব দেখা যায়। এরা আশপাশের ছায়াপথে তারা তৈরি হতে বাধা দেয়। নতুন আবিষ্কৃত কৃষ্ণগহ্বরটি সুপ্ত ধরনের। সেখানে কোনো পদার্থ সক্রিয়ভাবে জমা হচ্ছে না বা কোনো স্পষ্ট বিকিরণ তৈরি করছে না।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, নতুন আবিষ্কৃত কৃষ্ণগহ্বরটি স্যাজিটেরিয়াস এ স্টারের চেয়ে ১০ হাজার গুণ বেশি বড়। এটি আমাদের মিল্কিওয়ের কেন্দ্রে অবস্থিত সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর। মান্থলি নোটিসেস অব দ্য রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে নতুন কৃষ্ণগহ্বরের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়ায় কমছে পুরুষ, আকারে ছোট হচ্ছে সামরিক বাহিনী

বিশ্বে সবচেয়ে কম জন্মহারের দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। এর ওপর আবার দেশটির সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার উপযুক্ত বয়সী পুরুষের সংখ্যা দ্রুত কমছে। এর জেরে গত ছয় বছরে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর আকার ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে বাহিনীতে সেনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার।

আজ রোববার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীতে পুরুষের সংখ্যা কমায় কর্মকর্তা পর্যায়ের সদস্যে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এমনটি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কোনো অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর আকার কমতে শুরু করে চলতি শতাব্দীর শুরু থেকে। তখন বাহিনীতে ৬ লাখ ৯০ হাজার সদস্য ছিলেন। ২০১০-এর দশকের শেষের দিকে এই কমার গতি বাড়তে থাকে। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, তখন সামরিক বাহিনীতে প্রায় ৫ লাখ ৬৩ হাজার সক্রিয় সেনা ও কর্মকর্তা ছিলেন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে হয়। দেশটির সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দেশটিতে ২০ বছর বয়সী পুরুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমেছে। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে এই বয়সে বেশির ভাগ পুরুষ সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। তাঁদের ১৮ মাস সামরিক বাহিনীতে থাকতে হয়।

১৯৫৩ সালে যখন কোরিয়া যুদ্ধ শেষ হয়েছিল, ওই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার একজন সক্ষম ব্যক্তিকে ৩৬ মাস পর্যন্ত সামরিক বাহিনীতে দায়িত্ব পালন করতে হতো। দেশটির সামরিক বাহিনী বলেছে, সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে তাদের সক্ষমতা বেড়েছে। তাই সেনাসদস্যদের বাহিনীতে থাকার মেয়াদ কমানো হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের বৈরী সম্পর্ক রয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ১২ লাখ সক্রিয় সেনাসদস্য রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রয়োজনের তুলনায় তাদের ৫০ হাজার সেনাসদস্য কম রয়েছে। আর নন-কমিশন্ড অফিসার পদে ঘাটতি রয়েছে ২১ হাজার জনের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ