জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যা: অভিযোগপত্রে নেই সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম
Published: 11th, August 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
এতে তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে অভিযুক্ত করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
রবিবার (১০ আগস্ট) প্রায় দেড় বছর পর কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
আরো পড়ুন:
নোবিপ্রবিতে অ্যাকোয়াফুড গবেষণা-বিষয়ক কর্মশালা
পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, “তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে প্রমাণের অভাবে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবন্তিকার মুঠোফোন থেকে প্রাপ্ত ছবি, স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের বার্তা এবং তার ফেসবুকে দেওয়া ‘সুইসাইড নোট’ বিশ্লেষণ করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় আম্মানের পাঠানো মানসিক হয়রানিমূলক বার্তার প্রমাণ মেলে, যা অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে।”
দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম। তিনি বলেন, “অবন্তিকা মৃত্যুর আগে ফেসবুক পোস্টে দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করেছে। এর চেয়ে বড় সাক্ষ্য আর কী হতে পারে? তাহলে দ্বীন ইসলাম কীভাবে বাদ পড়ল?”
তিনি আরো বলেন, “মেয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে জড়িতরা শাস্তি পাবে কি না, শুরু থেকেই সন্দেহ ছিল। যে জবি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি, সেই প্রশাসন কীভাবে দায় এড়াতে পারে? পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করলে দ্বীন ইসলাম কোনোভাবেই রেহাই পেত না।”
গত ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ রাতে কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাঁও এলাকার ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা (২৪)। মৃত্যুর আগে ফেসবুক পোস্টে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিকীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হয়রানি ও উৎপীড়নের অভিযোগ করেন। পরদিন তার মা তাহমিনা বেগম আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দুইজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
ঘটনার পর দুই আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তারা জামিনে মুক্ত হন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ অবন ত ক আম ম ন সহক র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রদ্ধা
টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষ এলাকায় তাঁর মাজার প্রাঙ্গণ সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই নেতাকে স্মরণ করা হয়।
দিনের কর্মসূচি শুরু হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজীম আকন্দ শ্রদ্ধা জানান। পরে ভাসানীর পরিবারের সদস্য, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। দলটির জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জেলা সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ আরও অনেকে।
নির্বাচন ভন্ডুল করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এতে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য উদ্গ্রীব হয়ে আছে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তা বিএনপিরই সরকার হবে। তিনি দাবি করেন, মাওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করা মানেই শহীদ জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করা।
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জামায়াত গণতন্ত্রের পক্ষের কোনো শক্তি নয়। জুলাই বিপ্লবের ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে এই দল। তাঁর দাবি, বিএনপির সঙ্গে থেকে জামায়াত ১৫-২০টি আসন পেয়েছে। অথচ বিএনপির সঙ্গে না থাকলে তিনটি আসনও পায় না। এবার নির্বাচনে জামায়াতের একটি আসনও জুটবে না।
ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা খুন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। ফ্যাসিবাদী কায়দায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। তার বিচার চলছে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এই বিচারপ্রক্রিয়া হয়েছে। বিচারের মধ্য দিয়ে যে রায় আসবে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
আওয়ামী লীগ গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গন অধিকার পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যাঁরা হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। তাঁদের নির্দেশে ককটেল নিক্ষেপ ও জ্বালাও–পোড়াও থেকে বিরত থাকার জন্য দলটির সাধারণ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তাঁর দাবি, ১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসতে ২১ বছর সময় লেগেছে। এরপর ৪১ বছরেও আর রাজনীতিতে দাঁড়াতে পারবে না তারা।