শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় জামায়াতে ইসলামের নেতা মো. আবদুল্লাহ আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁকে জামায়াত থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল রাত নয়টার দিকে মো. আবদুল্লাহ সদস্য ফরম পূরণ ক‌রে এবি পা‌র্টির জামালপুর কার্যাল‌য়ে কে‌ন্দ্রীয় ক‌মি‌টির সদস্য সা‌নোয়ার হো‌সে‌নের কা‌ছে জমা দেন। সেখানে কে‌ন্দ্রীয় ক‌মি‌টির সঙ্গে কথা ব‌লে আগামী জা‌তীয় সংসদ নির্বাচ‌নে তাঁকে শেরপুর-২ আস‌নের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এবি পা‌র্টির শেরপুর জেলার সদস্যসচিব মুকসিতুর রহমান গতকাল রা‌তে ফেসবুক পোস্টে এসব তথ্য জানান।

জামায়াতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নালিতাবাড়ী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মাওলানা মো.

আবদুল্লাহকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল মোমেন বলেন, দল থেকে অন্য দলে যোগ দেওয়ায় জরুরি সভা করে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে মাওলানা মো. আবদুল্লাহকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কার প্রসঙ্গে মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি এবি পার্টিতে যোগ দিয়েছি। দল আমাকে শেরপুর-২ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। যেহেতু আমি এবি পার্টির প্রার্থী, জামায়াত থেকে আমাকে বহিষ্কার করতেই পারে। বিষয়টি আমি শুনেছি।’

মো. আবদুল্লাহ প্রথম আলো‌কে ব‌লেন, ‘জামায়া‌তে ইসলামী দলে আমি বৈষম্যের শিকার হ‌য়ে‌ছি। এজন্য দল থে‌কে অব্যাহতির জন্য আবেদন ক‌রেছিলাম। যখন এবি পা‌র্টিতে যোগদান ক‌রে‌ছি, ‌তখন শুন‌তে পেলাম জামায়া‌ত থে‌কে আমা‌কে ব‌হিস্কার করা হ‌য়ে‌ছে। ত‌বে এখনো লি‌খিত কিছু পাইনি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রদ্ধা

টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষ এলাকায় তাঁর মাজার প্রাঙ্গণ সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই নেতাকে স্মরণ করা হয়।

দিনের কর্মসূচি শুরু হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজীম আকন্দ শ্রদ্ধা জানান। পরে ভাসানীর পরিবারের সদস্য, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। দলটির জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জেলা সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ আরও অনেকে।

নির্বাচন ভন্ডুল করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এতে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তা বিএনপিরই সরকার হবে। তিনি দাবি করেন, মাওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করা মানেই শহীদ জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করা।

জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জামায়াত গণতন্ত্রের পক্ষের কোনো শক্তি নয়। জুলাই বিপ্লবের ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে এই দল। তাঁর দাবি, বিএনপির সঙ্গে থেকে জামায়াত ১৫-২০টি আসন পেয়েছে। অথচ বিএনপির সঙ্গে না থাকলে তিনটি আসনও পায় না। এবার নির্বাচনে জামায়াতের একটি আসনও জুটবে না।

ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা খুন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। ফ্যাসিবাদী কায়দায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। তার বিচার চলছে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এই বিচারপ্রক্রিয়া হয়েছে। বিচারের মধ্য দিয়ে যে রায় আসবে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

আওয়ামী লীগ গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গন অধিকার পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যাঁরা হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। তাঁদের নির্দেশে ককটেল নিক্ষেপ ও জ্বালাও–পোড়াও থেকে বিরত থাকার জন্য দলটির সাধারণ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তাঁর দাবি, ১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসতে ২১ বছর সময় লেগেছে। এরপর ৪১ বছরেও আর রাজনীতিতে দাঁড়াতে পারবে না তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ