৫০ পেরিয়েও ‘জ্বলছে’ ‘শোলে’, কেন এখনো নতুন
Published: 14th, August 2025 GMT
তখনো ডিজিটাল জমানা আসেনি। গ্রামগঞ্জে ভিসিআর চালিয়ে চলচ্চিত্র দেখানোর চল; টিকিট পাঁচ টাকা। নব্বইয়ের দশকে স্কুল পালিয়ে সিরাজগঞ্জের জামতৈল বাজারে ‘নুন শো’তে দেখা ‘শোলে’ কিশোর মনে যতটা আঁচড় কেটেছিল, আজ এত বছর পরেও তা খুব একটা ফিকে হয়নি।
৫০ বছর। কোনো চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তা পরিমাপে সময়ের এই হিসাবের চেয়ে জুতসই মাপকাঠি আর কীই–বা হতে পারে! এখনো দর্শককে যেভাবে আবিষ্ট করে রেখেছে ‘শোলে’—আবেগে, মুগ্ধতায় তার তুলনা কেউ কেউ ক্ল্যাসিক সাহিত্য বা শিল্পের সঙ্গে টানতে পারেন। এককথায় একে বলিউডের ‘আলটিমেট ফিল্ম’ বললে এতটুকু অত্যুক্তি হবে না। ‘শোলে’ শুধু চলচ্চিত্রই নয়, এটি ভারতীয় সিনেমার মিথ।
রমেশ সিপ্পি পরিচালিত চলচ্চিত্রটিকে শুরুতে সাধারণ অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার বলেই মনে করা হয়েছিল। তবে কালের চাকায় সমানতালে দৌড়ে এসে এটি এখন ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী এক নির্মাণ। এর সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘কালজয়ী’র তকমা। বহুবার দেখেও তাই পুরোনো হয় না।
কেন এখনো ‘নতুন’? কেননা ‘শোলে’ একটি বৃহৎ সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা। এটিকে বলা চলে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘মাসালা ফিল্ম’; যেখানে রোমাঞ্চ, কমেডি, অ্যাকশন, ট্র্যাজেডি, প্রেম, প্রতিশোধ, সর্বোপরি সুর-অসুরের দ্বন্দ্ব—কী নেই! ‘স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন’ ঘরানার প্রভাব স্পষ্ট, বিশেষ করে এই ঘরানার জনক সার্জো লেওনের চলচ্চিত্র থেকে যে অনুপ্রাণিত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে আলাদা করে বলার কথাটি হলো ইতালীয় সেই ঘরানাকে পুরোপুরি ভারতীয় বাস্তবতায় রূপান্তরের দুর্দান্ত এক উদাহরণ ‘শোলে’। সেলিম–জাভেদ জুটির চমৎকার চিত্রনাট্যে মহাভারতীয় নৈতিক দ্বন্দ্বের প্রতীকী উপস্থাপন সমসাময়িক ভারতীয় সমাজবাস্তবতার দারুণ এক প্রতিরূপ।
‘শোলো’ সিনেমার পরিবর্ধিত সংস্করণের দৃশ্য। কোলাজ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
দগ্ধ শিক্ষক মাহফুজা খাতুনও চলে গেলেন
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় দগ্ধ শিক্ষক মাহফুজা খাতুন (৪৫) মারা গেছেন। রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মাহফুজার শরীরের ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তাঁর শ্বাসনালি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মাহফুজার বাবার নাম মো. মহসিন আলী। তাঁর স্বামীর নাম ওমর আলী। আয়েশা সিদ্দীকা নামে তাঁর একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি তুরাগের বাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা।
মারা যাওয়ার দুদিন আগে মাহফুজা খাতুনের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেন বড় বোন লুৎফুন নাহার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহফুজা বলেছিল, “আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। আমি আর বাঁচব না।”’
গতকাল মাগরিবের নামাজের পর দিয়াবাড়ি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে মাহফুজা খাতুনের জানাজা হয়। পরে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয় বলে জানান স্কুলের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল।
গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৫–এ। দগ্ধ অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৯ জন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় ফিরেছেন ১৪ জন। দগ্ধ ২১ জনের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মধ্যে একজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সূত্র জানায়, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থী–শিক্ষকসহ প্রতিষ্ঠানটির ৩৪ জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে ২৭ জন শিক্ষার্থী, ৩ জন শিক্ষক, ৩ জন অভিভাবক, ১ জন আয়া রয়েছেন। বিমানের পাইলটসহ এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৫।