সংযুক্ত আরব আমিরাতে ত্রিদেশীয় সিরিজে জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার তারা হারিয়েছে আফগানিস্তানকে। ৩৯ রানের বড় জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
শারজাহতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান ৭ উইকেটে ১৮২ রান তোলে। জবাব দিতে নেমে আফগানিস্তান গুটিয়ে যায় ১৪৩ রানে।
পাকিস্তানের এই ম্যাচের জয়ের নায়ক অধিনায়ক সালমান অাগা। ৩৬ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৫৩ রান করেন। চারে নেমে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বোলিংয়ে পাকিস্তানের হয়ে ঝলক দেখিয়েছেন হারিস রউফ। ৩.
এশিয়া কাপের প্রস্তুতি হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিন দল ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলছে। শারজাহতে প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তান উড়ন্ত সূচনা পেল। মাঠে নামার আগে এই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল বেশ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে, আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘‘আফগানিস্তান কী এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল কি না।’’
রশিদ খান নিজেদেরকে এগিয়ে রেখে উত্তর দিলেও পাশেই থাকা পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আগা মুচকি হেসে তার কথা উড়িয়ে দেন। ২২ গজেও সেই প্রমাণ দিয়েছেন সালমান। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি জয়ের নায়কও হয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের হয়ে ব্যাট হাতে ২১ রানের দুটি ইনিংস খেলেন শাহিবজাদা ফারহান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। ফখর জামানের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। শেষ দিকে ৫ বলে ১৪ রান করেন ফাহিম আশরাফ।
আফগানিস্তানের হয়ে ৪৭ রানে ২ উইকেট নেন ফরিদ আহমেদ। রশিদ ২৬ রানে ১ উইকেট পেয়েছেন। এছাড়া মুজিব উর রহমান, আজমত উল্লাহ উমারজাই ও মোহাম্মদ নবী ১টি করে উইকেট পেয়েছেন।
ব্যাটিংয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ভালো শুরু এনে দেন। ২৭ বলে ৩৮ রান করেন। তিনে নেমে সেদিকুল্লাহ অতল ২৩ ও দারউইশ রাসুল ২১ রান করেন। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় শতরানে পৌঁছার আগেই তাদের ৭ ব্যাটসম্যান সাজঘরে।
আফগানিস্তানের পরাজয় লিখা হয়ে যায় সেখানেই। শেষ দিকে রশিদ ৫ ছক্কা ও ১ চারে ১৬ বলে ৩৯ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনেন। বোলিংয়ে শাহীন শাহ আফ্রিদি, নওয়াজ ও সুফিয়ান মুকিম ২টি করে উইকেট নেন।
আগামীকাল একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে পাকিস্তান।
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন র ন কর ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার না হলে নির্বাচন হতে পারে না: হাসনাত আবদুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না, সংস্কার হলেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আজ রোববার ভোলা জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে সকালে ভোলার সাত উপজেলার সমন্বয়ক, নেতা-কর্মীদের নিয়ে এনসিপির জেলা সমন্বয় সভা শুরু হয়। সভা চলে বেলা দুইটা পর্যন্ত। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
এনসিপির সমন্বয়কারী মেহেদী হাসানের (শরীফ) সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য দেন বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক মুজাহিদুল ইসলাম (শাহিন), যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মাহমুদা আলম (মিতু), আরিফুর রহমান (তুহিন), মেসবাহ কামাল, যুগ্ম সদস্যসচিব ও শিক্ষা গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ (শান্ত), কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন (ফয়সাল), কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম (কনক), আবু সাঈদ (মুসা) প্রমুখ।
পরে দুইটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এই সমন্বয় সভা না হলে যেমন প্রেস কনফারেন্স হতো না, তেমনি সংস্কার না হলে নির্বাচন হতে পারে না। এই সরকারের যদি সংস্কারের ম্যান্ডেট না থাকে, এই সরকারের জুলাই সনদ ঘোষণার ম্যান্ডেট না থাকে, তাহলে এই সরকার কোন ম্যান্ডেটে নির্বাচন দেবে। নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারিতে হওয়া উচিত। নির্বাচনকে তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা এই সরকারের সঙ্গে জুলাই সনদকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। এ সরকারের যেমন নির্বাচনের ম্যান্ডেট রয়েছে, এই সরকারের জুলাই সনদের ম্যান্ডেট রয়েছে, তেমনি সংস্কারেরও ম্যান্ডেট রয়েছে। সুতরাং সংস্কার যথাসময়ে হলে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, ‘আমরা উচ্চকক্ষে পিআর চাই, তবে জামায়াতের মতো পিআর চাই না। আমাদের অবস্থান দৃঢ় ও স্পষ্ট—বাংলাদেশের পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির বিকল্প নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা রক্ত দিয়েছেন, গুম-হত্যার শিকার হয়েছেন। তাঁদের রক্ত ও ত্যাগকে অসম্মান করা মানে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আসুন, আমরা মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পুনর্গঠন করি।’
ভোলায় জেলার সাত উপজেলার সমন্বয়কদের নিয়ে আয়োজিত সভায় জেলার বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয় তুলে ধরে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা সাংগঠনিক সমস্যাগুলো শুনেছি, সমাধানের পথ নির্ধারণ করেছি। শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। পাশাপাশি ভোলার সমস্যা যেমন নদীভাঙন প্রতিরোধ, গ্যাস ব্যবহার করে শিল্প স্থাপন, ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ, চিকিৎসকসংকট ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব যৌক্তিক দাবিতে এনসিপি ভোলাবাসীর পাশে থাকবে।’
আগামী নির্বাচনে এনসিপি কারও সঙ্গে জোট গঠন করবে কি না, এমন প্রশ্নে দলটির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে জোট হবে কেবল সংস্কারের পক্ষে থাকা দলগুলোর সঙ্গে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়েছেন, তাঁরাই এনসিপির প্রকৃত সহযোদ্ধা।’
হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, গণভোটের আদেশ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে তাঁর দল পেতে চায় না। তিনি বলেন, ‘গণভোটের আদেশ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। যারা ফ্যাসিবাদের প্রতীক চুপ্পুর (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) কাছ থেকে সনদ নিতে চায়, তারা দেশকে বিপথে নিতে চায়। আমাদের লক্ষ্য, গণ-আকাঙ্ক্ষার রাষ্ট্র গড়া, তৃণমূলের রক্ত ও ত্যাগের মর্যাদা রক্ষা করা।’
‘প্রধান উপদেষ্টাকেই আদেশ জারি করতে হবে’ভোলার পর আজ বিকেলে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপির বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটির সমন্বয় সভা করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। সভার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণভোটের পাশাপাশি জুলাই সনদসংক্রান্ত আদেশ প্রধান উপদেষ্টাকেই জারি করতে হবে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আদেশ দিলে জুলাই বিপ্লব প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণভোটের পাশাপাশি জুলাই সনদের আদেশ জারি করতে হবে। এই আদেশ অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টাকে জারি করতে হবে। যদি চুপ্পুর (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) কাছ থেকে নিতে হয়, সেটি হবে বিপ্লবের কফিনে শেষ পেরেক। যিনি ‘হেড অফিস ফ্যাসিজম’, তাঁর কাছ থেকে যদি অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি নিতে হয়, এর চেয়ে লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না।
এ বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘কোনো অধ্যাদেশ নয়, অর্ডার জারি করতে হবে এবং তা অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টাকেই দিতে হবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে আমাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি। কোনো অধ্যাদেশ বা প্রজ্ঞাপন নয়, আদেশ (অর্ডার) জারি করতে হবে। এটি অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টাকে জারি করতে হবে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকারের যে ম্যান্ডেটে এই সরকার গঠিত হয়েছে, সেই একই ম্যান্ডেটেই প্রধান উপদেষ্টা অর্ডার দিতে পারেন।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক বিস্তার পরিকল্পনা সেই ভিত্তিতেই নীতি নির্ধারণ করব। আমরা এমন পলিসি তৈরি করছি, যাতে ৩০০ আসনেই আমাদের সাংগঠনিক উপস্থিতি সুসংহত থাকে এবং তা নিশ্চিত করা যায়।’